ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মধুমালতী ডাকে আয়...

খুব চেনা ফুলে ভরপুর বাগান, ঘ্রাণে মাতোয়ারা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৭ এপ্রিল ২০১৭

খুব চেনা ফুলে ভরপুর বাগান, ঘ্রাণে মাতোয়ারা

মোরসালিন মিজান ॥ মধুমালতী ডাকে আয়...। ডাকছে মধুমালতী। খুব চেনা এই ফুল। বারবার দেখা। তাই বলে কেউ উপেক্ষা করবে? না, সে সুযোগ নেই। বরং নতুন চোখে তাকাতে হয়। একসঙ্গে বহু ফুল ফুটে থাকে। যেন বিশাল বাগান। সৌন্দর্যটা উপভোগ করার মতো। তার চেয়ে বেশি আকর্ষণ করে ঘ্রাণ। হাতে নিয়ে শুকতে হয় না। অনেক দূর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, মৃদুমন্দ বাতাসে ভর দিয়ে ঠিক আপনার কাছে পৌঁছে যাবে! পৌঁছে যাচ্ছেও। কারণ এখন গ্রীষ্মের কাল। এই কালের অন্যতম প্রিয় ফুল মধুমালতী ঠিক ফুটেছে। বিভিন্ন বাড়ির সামনে, গেটে প্যাঁচানো লতা পাতা আর ঝোপঝাড় হয়ে নেই। সেখানে থোকা থোকা মধুমালতী। সাধারণত সন্ধ্যায় ফুটে। সারা রাত গন্ধ বিলায়। মুগ্ধ করে রাখে। ফুলটির নাম নিয়ে অবশ্য বিভ্রান্তি আছে। কেউ কেউ একে দেখা মাত্রই বলে ফেলেন, আহা, মাধবীলতা ফুটেছে! আদতে এটি ভুল নাম। প্রকৃত নাম, আগেই বলা হয়েছে, মধুমালতী। আরও কয়েকটি নাম আছে। যেমন- মধুমঞ্জরি, মাধুরীলতা ও মধুমঞ্জরীলতা। ফুলটিকে প্রকৃতিপ্রেমী রবীন্দ্রনাথ মধুমঞ্জরীলতা নামে ডাকতেন। সে কথা জানিয়ে লিখেছিলেন- স্মরণচিহ্ন কত যাবে উন্মুলে/মোর দেয়া নাম লেখা থাক ওর ফুলে/ মধুমঞ্জরীলতা...। ফুলটির ইংরেজী নাম রেঙ্গুনক্রিপার। বৈজ্ঞানিক নাম কুইসকুয়ালিস ইন্ডিকা। এটি মালয়েশীয় প্রজাতি। ফুলের পাপড়ির বাইরের অংশ হালকা গোলাপী। ভেতরের অংশটি আবার সাদা। বাতাসে দোলে যখন, দুই রঙের মিশেলটা বেশ চোখে পড়ে। অন্যরকম দেখায়। মধুমালতীর বর্ণনা দিতে গিয়ে উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মা বলেন, এই গাছের পাতা একক অখ- আয়তাকার। ৬ থেকে ৮ সেমি লম্বা। শিরা সামান্য রোমশ। বিন্যাস বিপ্রতীপ। মধুমালতীর দলন প্রায় ৫ সেমি লম্বা। মুখে ৫টি গোল লতি। ফুল চওড়ায় ২ সেমি। সাদা ও ছোট ডবল ফুলের দুটি ভ্যারাইটি আছে। ড্যান্সিফ্লোরা প্রজাতির ফুল বড় হয়। প্রায় ৭ সেমি লম্বা। মুখ ৩ সেমি চওড়া। ম্যালাবারিকা প্রজাতির পাতা, ফুল, ফুলের থোকা ছোট। কিন্তু অজস্র। গ্রীষ্মে ফুটতে শুরু করা ফুল দেখা যায় বর্ষা পর্যন্ত।
×