ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্লিয়ারিং কর্পোরেশনে স্টক এক্সচেঞ্জের হাতে থাকবে ৭০ ভাগ শেয়ার

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ৯ এপ্রিল ২০১৭

ক্লিয়ারিং কর্পোরেশনে স্টক এক্সচেঞ্জের হাতে থাকবে ৭০ ভাগ শেয়ার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারে লেনদেনে ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদা কোম্পানি গঠনের খসড়া বিধিমালা প্রকাশ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। খসড়ায় বলা হয়েছে ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট কোম্পানি বা সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি শীর্ষক কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ শেয়ার সম্মিলিতভাবে ধারণ করতে পারবে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ। তবে কোন প্রতিষ্ঠানই এককভাবে ৪৯ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারবে না। এক্সচেঞ্জগুলো এককভাবে ন্যূনতম ২৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করলে সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি নিবন্ধনের জন্য অযোগ্য হবে। ৫ এপ্রিল মঙ্গলবার বিএসইসি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি) বিধিমালা, ২০১৭ এর খসড়া প্রকাশ করেছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এর ওপর মতামত দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের আহবান করা হয়েছে। তাদের মতামত পর্যালোচনা করে বিধিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। সিকিউরিটিজ, বন্ড, ডেরিভেটিভস প্রডাক্টস লেনদেন সুবিধাসহ সেবাটি আরও দ্রুত ও স্বচ্ছতা আনতে আলাদা ক্লিয়ারিং এ্যান্ড সেটেলমেন্ট কোম্পানি বা সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি গঠন করা হচ্ছে। খসড়া বিধিমালায় সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি গঠন কাঠমোয় বলা হয়েছে, সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি ডিমিউচুয়ালাইজড আকারে গঠন হবে অর্থাৎ এর মালিকানা থেকে অংশগ্রহণকারী পৃথক থাকবে। পরিশোধিত মূলধন এবং নিট সম্পদ বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রত্যেক সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন হবে ৫০০ কোটি টাকা এবং সর্বক্ষণিক নিট সম্পদ হবে পরিশোধিত মূলধনের কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ। তবে কমিশন সময়ে সময়ে নির্ধারিত ঝুঁকিভিত্তিক মূলধন পর্যাপ্ততা সংরক্ষণ করতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির শেয়ারহোল্ডার হতে পারবেন তাদের শেয়ার ধারণ বিষয়ে খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে, সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির মোট ইস্যুকৃত এবং পরিশোধিত মূলধনের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ শেয়ার এক্সচেঞ্জসমূহ যৌথভাবে ধারণ করতে পারবে; তবে, কোন এক্সচেঞ্জ এককভাবে ৪৯ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারবে না। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সেন্ট্রাল ডিপজিটরি সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ শেয়ার যৌথভাবে অথবা এককভাবে ধারণ করতে পারবে। সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ শেয়ার ব্যাংকগুলো যৌথভাবে ধারণ করতে পারবে; তবে, কোন ব্যাংক এককভাবে ২ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারবে না; ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা কোম্পানির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম করা হয়েছে। এদিকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী একক বা যৌথভাবে সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির মোট ইস্যুকৃত এবং পরিশোধিত মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পারবে। বিধিমালায় কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘কৌশলগত বিনিয়োগকারী’ অর্থ বৈদেশিক কোন প্রতিষ্ঠান যা সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি অথবা এক্সচেঞ্জ অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত কার্যক্রমে নিয়োজিত এবং যার বিনিয়োগের মাধ্যমে সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির কার্যক্রম পরিচালনায় অধিকতর স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গতিশীলতা নিশ্চিত হবে। সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির পরিচালনা পর্ষদে শেয়ার ধারক পরিচালক, স্বতন্ত্র পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সমন্বয়ে গঠিত হবে এবং পর্ষদের সদস্য সংখ্যা হবে ১১। এর মধ্যে ৬ জন স্বতন্ত্র পরিচালক। তবে সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টির প্রথম পরিচালনা পর্ষদের স্বতন্ত্র পরিচালক কোন প্রস্তাবনা ছাড়াই কমিশন নিয়োগ দেবে। এছাড়া শেয়ারহোল্ডার এক্সচেঞ্জগুলোর পরিচালনা পর্ষদ মনোনীত দুই জন পরিচালক; অন্যান্য শেয়ারহোল্ডারদের মনোনীত বা নির্বাচিত দুই জন পরিচালক, কৌশলগত বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ পরবর্তীতে একজন পরিচালক কৌশলগত বিনিয়োগকারীর মনোনীত বা নির্বাচিত হবেন। পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভায় স্বতন্ত্র পরিচালকগণের মধ্য থেকে একজনকে চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হবে। পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ প্রসঙ্গে খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে, একজন পরিচালক পর পর দুই মেয়াদের বেশি নির্বাচিত হবেন না। তবে একটি মেয়াদ বাদ দিয়ে পুনরায় নির্বাচিত হতে পারবেন। স্বতন্ত্র পরিচালকের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, একজন স্বতন্ত্র পরিচালক তিন বছর মেয়াদের জন্য মনোনীত হতে পারবেন এবং সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টির বোর্ডের সুপারিশক্রমে এবং কমিশনের অনুমোদনক্রমে আরও একটি মেয়াদের জন্য নবায়ন করা যেতে পারে। তবে, তারপর একটি মেয়াদ বাদ না দিয়ে পরবর্তীতে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে মনোনয়নের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
×