ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ অফিসার্স সমবায় সমিতির সদস্যদের প্লট বরাদ্দপত্র বিতরণ

দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন চুক্তি করা হবে না ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৬ এপ্রিল ২০১৭

দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন চুক্তি করা হবে না ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কারভাবেই বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে কোন চুক্তি হলে তা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই হবে, দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছুই করা হবে না। তিনি বলেন, ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল ১৯৭৪ সালে ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ২৫ বছরের সমঝোতা চুক্তিকে গোলামির চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। কিন্তু এই চুক্তি থেকে সীমান্ত সমস্যা সমাধানসহ বাংলাদেশেরই অর্জন বেশি।’ প্রধানমন্ত্রী বুধবার তার তেজগাঁও কার্যালয়ে বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির উদ্যোগে বাস্তবায়নাধীন পুলিশ অফিসার্স হাউসিং সোসাইটির প্লট বরাদ্দপত্র পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পদমর্যাদার ২৫ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে বিতরণকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। খবর বাসস’র। অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতির জন্য শেখ হাসিনা দেশের পঁচাত্তর পরবর্তী সরকারগুলোকেই দায়ী করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া কখনও ভারতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাই। উপরন্তু তারা সীমান্তে সন্ত্রাসী কর্মকা- নিয়ে উদাসীন ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত তাদের শাসনামলে দেশের ভেতরের সকল সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা এবং বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচারের হোতা ছিল। ওই অস্ত্র বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে চোরাচালান হয়ে ভারতে যাচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব অটুট রেখেই সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে। একই সঙ্গে একইভাবে ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা সমস্যারও সমাধান করেছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও অনেকেই জঙ্গীদের বিরুদ্ধে গৃহীত আমাদের এ্যাকশনপ্ল্যান নিয়ে সমালোচনা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশই পৃথিবীতে একমাত্র দেশ যারা জঙ্গীদের এ্যাকশনের আগেই বহু জঙ্গী আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়েছে। পুলিশদের কর্তব্য পালনের কোন নির্দিষ্ট ডিউটি আওয়ার না থাকায় তাদের দায়িত্ব পালনকে অত্যন্ত কঠিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কোন সময় ডাক পড়লেই তাদের যেতে হয়।’ শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশের জনসংখ্যার সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে পুলিশ বাহিসীর সদস্য সংখ্যা আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যেই ৪১ হাজার পুলিশ সদস্যকে বাহিনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং শীঘ্রই আরও ১০ হাজারকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পুলিশ বাহিনীর সদস্য এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের কল্যাণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারই প্রথম ২০০০ সালে পুলিশ স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। তার সরকার অন্যান্য সরকারী চাকরিজীবীদের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদেরও আবাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হতে ১৭ বছর লেগে গেছে বলে আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সদস্যদের জন্য এ ধরনের আবাসন সুবিধা জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও সম্প্রসারণ করা হবে। এর আগে পুলিশের আইজিপি মোঃ শহীদুল হক শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও পুলিশ হাউসিং সোসাইটিকে বাস্তব রূপ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।
×