ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চান আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৪ এপ্রিল ২০১৭

আবারও কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চান আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে ৪৬ বার। বার্ষিক আয়-ব্যয়ের এ ঘোষণায় বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে ২০ বার রাখা হয়েছে কালো টাকা সাদা করার বিশেষ সুযোগ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরর তথ্য বলছে, বিশেষ সুযোগেও সন্তোষজনক সাড়া দেন না অবৈধ অর্থের মালিকরা। তারপরও আসছে বাজেটে এ সুযোগ রাখার দাবি আবাসন ব্যবসায়ীদের। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বারবার এ সুযোগ রাখা হলে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে অর্থনীতি। এ প্রসঙ্গে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে কারও কারও মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। আবাসন খাতে প্রতি বর্গমিটারে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর প্রদান করলে বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগ মেনে নেয়ার বিধানটি কর প্রদান পদ্ধতির সরলীকরণ মাত্র। কালো টাকা সাদা করার এমন সুযোগ দেয়া হয়েছে বহুবার। চলতি অর্থবছরসহ দেশের ৪৬টি বাজেটের ২০টিতেই রাখা হয় এ সুযোগ। কিন্তু কত টাকা সাদা হয়েছে বিশেষ এ উদ্যোগে? এমন প্রশ্নের উত্তরে হতাশার চিত্রই দেখা যায় এনবিআরের তথ্যে। ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো এ সুবিধা রাখার পর ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত সাদা হয়েছে মাত্র ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে গেল অর্থবছরে মাত্র ১৬ জন ব্যক্তি বিনিয়োগের শর্তে সাদা করেছেন ২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। তারপরও আসছে অর্থবছরে এ সুযোগ চান আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা। রিহ্যাবের প্রথম সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, সাধারণত আমরা দেখছি যে এই টাকাটা মালয়েশিয়া বা দুবাই চলে যাচ্ছে। এটি এমন একটি খাত যার সঙ্গে অনেকগুলো খাত জড়িত। এজন্য আমরা বলি যে, এই খাতে বিনিয়োগ করা যায়। আমরা একটা কথাই বলছি যে, কোন প্রশ্ন যেন না করা হয়। দেশ কালো টাকার পরিমাণ কত? এর কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। ২০১৩ সালে প্রকাশিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালে দেশে কালো টাকার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের দ্বিগুণেরও বেশি। বিপুল অংকের এই অবৈধ টাকা মূল অর্থনীতির বাইরে থাকলেও তা সাদা করার সুযোগ আর না রাখার পক্ষে অর্থনীতিবিদরা। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বিশেষ উদ্যোগে, বিশেষ ব্যবস্থায় এক দুই বছরের জন্য দেয়া যেতে পারে কিন্তু এটা অবিরাম চলতে দেয়া ঠিক নয়। যদি এটা চলতে থাকে তাহলে কর না দিয়ে পার পেয়ে যাওয়ার প্রবণতা চলতেই থাকবে। এটাতো অর্থনীতির জন্য ভাল না। কালো টাকার ওপর ভিত্তি করে অর্থনীতিতে বেশিদিন টিকেও থাকতে পারে না। কালো টাকাই জঙ্গী অর্থায়ন, মাদক ব্যবসাসহ অপরাধমূলক কাজে বিনিয়োগের উৎস উল্লেখ করে, এ ব্যাপারে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ তাদের।
×