ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শুভপ্রসাদ নন্দীর গানে মুগ্ধ ঢাকার দর্শক-শ্রোতা

প্রকাশিত: ০৩:২৯, ১৮ মার্চ ২০১৭

শুভপ্রসাদ নন্দীর গানে মুগ্ধ ঢাকার দর্শক-শ্রোতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুরের বৈচিত্র্য আর কণ্ঠের জাদুতে ঢাকার দর্শক-শ্রোতাদের মোহিত করলেন ভারতের প্রখ্যাত গণসঙ্গীত শিল্পী শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে ‘অপার বাংলার গান’ শীর্ষক শিল্পীর একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশে শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদারের শুভানুধ্যায়ী, বন্ধু ও স্বজনরা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। উদ্বোধনী পর্ব শেষে অন্যতম আয়োজক সৈয়দ ফয়সাল আহমেদের সঞ্চালনায় শুরু হয় শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদারের একক পরিবেশনা। লোক, রবীন্দ্র, গণসঙ্গীতসহ নানা আঙ্গিকের বৈচিত্র্যপূর্ণ গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন শিল্পী। এদিন তার পরিবেশিত গানগুলোর মধ্যে ছিল- ‘কুসুমে কুসুমে’, ‘মা, আমি তোর কী করেছি’, ‘যেতে যেতে একলা পথে’, ‘আমার নিখিল ভুবন হারালেম’, ‘তুমি রবে নীরবে’, ‘এ পরবাসে’, ‘বসন্তে কী শুধু’, ‘দীপ নিভে গেছে মম’, ‘চিরসখা’, ‘অবণী বাড়ি আছো’, ‘এপার বাংলা’, ‘আবার ফেব্রুয়ারি’, ‘আমি তুমার লাগিয়া রে’, ‘আমি তোমারই’ প্রভৃতি। শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদারের এদিনের পরিবেশনায় বৈচিত্র্যপূর্ণ গানের সমারোহ থাকলেও বিরহ আঙ্গিকের গানের প্রাধান্য ছিল। পরিবেশনার এক পর্যায়ে সম্প্রতি অকাল প্রয়াত সঙ্গীত গবেষক ও শিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য্যরে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শুভপ্রসাদ। কলকাতার লোকগানের দল ‘দোহার’-এর অন্যতম প্রধান শিল্পী কালিকাপ্রসাদ ছিলেন শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একজন। ভারতের অসমে জন্ম নেয়া শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার শুধু অসম ও পশ্চিমবঙ্গই নয়, বাংলাদেশেও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে একটি পরিচিত নাম। পেশায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার, প্রগতিশীল গণসাংস্কৃতিক আন্দোলনের একজন অগ্রসৈনিক হিসেবে বিবেচিত। গান গাওয়ার অসাধারণ যোগ্যতাকে তিনি গ্রহণ করেছেন প্রগতিশীল আন্দোলনের, সমাজ বদলের সংগ্রামের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে। ভবিষ্যতে বার বার বাংলাদেশে আসার ইচ্ছাপ্রকাশ করে একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন ভারতীয় শিল্পী শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার। অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক সঙ্গীতা ইমামের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী পর্বে শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি কামাল লোহানী, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ও বিশিষ্ট নাট্যজন শংকর সাঁওজাল, চলচ্চিত্র নির্মাতা শাকুর মজিদ এবং উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। এছাড়া, শিল্পীর বন্ধুদের পক্ষ থেকে তার হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেয়া হয়। এ সময় শুভেচ্ছা জানানো হয় তবলাবাদক দিব্যেন্দু ব্যানার্জি ও কী বোর্ড বাদক অভিজিৎ চক্রবর্তীকে। এরপর অকাল প্রয়াত সঙ্গীত গবেষক ও শিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য্যরে স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
×