ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

দিনাজপুরে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে পথে নামানোর চক্রান্ত

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ১২ মার্চ ২০১৭

দিনাজপুরে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে পথে নামানোর চক্রান্ত

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ সরকার দলীয় প্রভাব ও সেনা সদস্যের দাপট দেখিয়ে দিনাজপুরে ঘরছাড়া করার চক্রান্ত করা হচ্ছে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রী বুলবুলি রানীসহ তার এতিম সন্তানদের। চলাচলের রাস্তা দখল করে গোটা সম্পত্তি গ্রাসের চক্রান্ত করছে ভূমিদস্যু নৃপেন চন্দ্র ও তার সাথীরা। শনিবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা অনাদী চন্দ্র সরকারের স্ত্রী বুলবুলি রানী সরকার। সাংবাদিকদের তিনি জানান, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় ৬ শতক সম্পত্তি তার স্বামী ২০০১ সালে খরিদ করে বাড়ি নিমাণ করেন। তখন থেকেই তারা সেখানে বসবাস করছেন। জমি কেনার পর আসা যাওয়ার জন্য বাড়িসংলগ্ন জমি রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হয়। কিন্তু আন্ধারমুহা গ্রামের নৃপেন চন্দ্র সেই জমি কেনার পর তার জমিও দখল করে জোরর্পূবক বাড়ি নিমাণ শুরু করে। সীমানা নিয়ে তখন থেকেই তিনি বিচারের জন্যে বিভিন্ন জায়গায় দেনদরবার করেন। কিন্তু নৃপেন চন্দ্রের অর্থপ্রতিপত্তির কাছে তিনি পেরে উঠেননি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীর দাপট ও সেনাসদস্য ছেলের প্রভাব খাটিয়ে নৃপেন চন্দ্র রায়ের সন্তানরা তাকে গৃহবন্দী করে রেখেছেন। নিজবাড়িতে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে স্বামীর কেনা সম্পত্তিটুকুও তারা কেড়ে নিতে চায়। বিত্তশালী নৃপেনের পুত্র উদয় চন্দ্র রায়, কনক চন্দ্র রায় এবং সেনাবাহিনীতে চাকরি করা সন্তান মানস রায় টুটুল, স্থানীয় যুবলীগের সভাপতি সুমন দাস ও সাধারণ সম্পাদক সোলায়মানসহ ১৫-২০ যুবক ১১ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে ঢুকে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি দিতে অস্বীকার করায়, তারা নির্দয়ভাবে তাকে পিটিয়ে আহত করে। চিরিরবন্দর থানা পুলিশ এ বিষয়ে মামলা গ্রহণ না করায় ১৯ ফেব্রুয়ারি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্রুত বিচার আদালতে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করে তিনি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নয়ন সরকার ও প্রতিবেশী আফজাল হোসেন সরকার। নৃপেন চন্দ্র রায়ের ছেলে উদয় কুমার রায় জানান, জমিটি তাদের ক্রয়কৃত। এ জমি নিয়ে তাদের সঙ্গে বিরোধ আছে বলে তিনি স্বীকার করেন। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত করে চিরিরবন্দর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মমিনুল ইসলাম জানান, স্বর্গীয় অনাদী চন্দ্র সরকার জমি কেনার সময় রাস্তা বুঝে নেননি। ফলে এখন দুই পরিবারের মাঝে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
×