ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গুলশান হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহকারী বড় মিজান গ্রেফতার

জঙ্গীরা এখনও সক্রিয়, মাথাচাড়া দেয়ার চেষ্টা

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২ মার্চ ২০১৭

জঙ্গীরা এখনও সক্রিয়, মাথাচাড়া দেয়ার চেষ্টা

শংকর কুমার দে ॥ দেশের জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর জঙ্গীরা এখনও সক্রিয় যা নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছেন গোয়েন্দারা। গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আতঙ্ক তৈরি করা নব্য জেএমবিসহ জঙ্গী সংগঠনগুলোকে বিপর্যস্ত করা গেলেও আবারও নানা কৌশলে, নানা নামে, মাথাচাড়া দেয়ার জন্য সক্রিয় জঙ্গীরা। এ মুহূর্তে গুলশান হামলার মতো বড় ধরনের হামলা চালানোর সামর্থ্য জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর নেই বলা হলেও মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো ঘটনার মধ্য দিয়ে জঙ্গীরা তাদের সক্রিয় থাকার জানান দিচ্ছে। মঙ্গলবার রাজশাহীর গোদাগাড়িতে জঙ্গীদের হাতে ছুরিকাহত হয়েছেন দুই পুলিশ কনস্টেবল। মঙ্গলবার একই দিনে রাজধানীর বনানীতে গ্রেফতার হয়েছে গুলশান হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী বড় মিজান। অনুকূল পরিবেশ পেলে জঙ্গীরা আবারও ঘুরে দাঁড়িয়ে বড় ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারলেও ছোটখাটো ঘটনা ঘটাতে পারে তেমনই আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানে আপাতত স্বস্তি এলেও এখন আবার রাজশাহীর গোদাগাড়িতে জঙ্গীদের পাকড়াও করতে গেলে পুলিশের দুই কনস্টেবলকে জঙ্গীদের ছুরিকাহত করার ঘটনা আশঙ্কা, আতঙ্ক ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। নব্য জেএমবির বড় নেতাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তামিম চৌধুরীকে (নারায়ণগঞ্জে নিহত) ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বা ‘ডেপুটিদের’ চিহ্নিত করা গেলেও তামিমের ওপরের সারির নেতা কে বা কারা আছে, সে বিষয়ে এখনও পরিষ্কার তথ্য পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারণ বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই সরকার জোরের সঙ্গে এ কথা বললেও অনলাইনে প্রকাশিত সিরিয়া-ইরাকভিত্তিক জঙ্গীগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নতুন সাময়িকী রুমাইয়াহতে তামিম চৌধুরীকে তাদের ‘বাংলার খিলাফতের সৈনিকদের সামরিক ও গুপ্ত হামলার সাবেক প্রধান’ বলে উল্লেখ করার ঘটনাটির নেপথ্যে কে বা কারা এখনও তা অনুদঘাটিত। এই অনুদঘাটিত ব্যক্তিরাই জঙ্গীবিরোধী গোয়েন্দা কার্যক্রমে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা তামিম চৌধুরীর বিভিন্ন পর্যায়ের যোগাযোগ, কর্মকা- ও তার সহযোগীদের সম্পর্কে কিছু তথ্য পেয়ে সংগ্রহ, সরবরাহ করেছে। গুলশান হামলার আগে তামিম চৌধুরী বিভিন্ন সময় তার ওপরের নেতৃত্বকে অস্ত্র ও অর্থেও অভাবের কথা বলেছেন। এ বিষয়ে সাহায্য চেয়েছেন। কিন্তু এ বিষয়ে ওপরের নেতৃত্ব থেকে তামিম সাড়া পেয়েছেন, এমন আলামত পাননি গোয়েন্দারা। গুলশান হামলার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে জঙ্গীদের স্থানীয় নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এবং সেটা ভারত থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তবে এ জন্য দুবাই থেকে হুন্ডির মাধ্যমে যে অর্থ এসেছে, সেটার প্রেরককে এখনও শনাক্ত করা যায়নি। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরী নিহত হওয়ার পর সাভারের আশুলিয়া নিহত হন আবদুর রহমান ওরফে সারোয়ার জাহান। দুই জঙ্গীর মধ্যে কে বড় ও নব্য জেএমবির প্রধান তা নিয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও র‌্যাবের মধ্যে বাহাস পর্যন্ত ঘটে গেছে। এতে অনুমতি হতে পারে নব্য জেএমবিসহ জেএমবি বা জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর জঙ্গী সদস্য বা তাদের তৎপরতার বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সুস্পষ্ট নয়। তামিম চৌধুরী নারায়ণগঞ্জের আস্তানায় নিহত হওয়ার পর সেখান থেকে উদ্ধার করা বিভিন্ন আলামত থেকে কিছু পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, ২০১৫ সালের ২ আগস্ট ওপরের নেতাদের কাছে তামিমের পাঠানো একটি চিঠিতে সংগঠনের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য রয়েছে। তাতে বলা হয়, তখন তাদের সদস্য সংখ্যা ছিল ৩০০।
×