ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাগরপুরে অবৈধ ট্রাক্টরের থাবায় ক্ষত-বিক্ষত রাস্তা

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নাগরপুরে অবৈধ ট্রাক্টরের থাবায় ক্ষত-বিক্ষত রাস্তা

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে অবৈধ ট্রাক্টরের থাবায় ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে উপজেলার ভিতর দিয়ে চলাচলের সমস্ত রাস্তা ঘাট। পাকা রাস্তার বিটুমিন পুরোপুরি উঠে গিয়ে খানা-খন্দকে এবং কাঁচা-রাস্তাগুলো ভেঙ্গে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার এমন কোন রাস্তা পাওয়া যাবে না যে রাস্তাটি ট্রাক্টর নামক এ যন্ত্র দানবের ভয়াল থাবায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। এখন শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় রাস্তার পাথর এবং ইটগুলো ভেঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে অতিরিক্ত ধুলার। ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী ভূক্তভোগীরা জানান, এ সকল রাস্তা দিয়ে যানবাহনে তো দূরের কথা, পায়ে হেটে চলাচলও দুরহ হয়ে পড়েছে। রাস্তার দু’পাশে অবস্থিত বাড়ীর মালিকরা ক্ষোভের সাথে জানান, ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা দিয়ে যখন ট্রাক্টরগুলো চলাচল করে তখন তার বিকট শব্দে ছোট বাচ্চারা চমকে উঠে এবং ধুলায় বাড়ী-ঘড়গুলো অন্ধকার হয়ে যায়। ঘরের চাল, সবজি ক্ষেত ও গাছপালায় ধুলার স্তর পড়ে গেছে। ফলে সবজি ও ফলমূলের ফলন ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার নাগরপুর-চড়ডাংগা, নাগরপুর-ধল্লা, এমপি রোড, নাগরপুর-সলিমাবাদ পাকা সড়কগুলোর অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, ট্রাক্টরগুলো হচ্ছে কৃষি কাজের জন্য। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে ট্রাক্টরগুলো মালামাল নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করে রাস্তার ক্ষতি সাধন করলেও প্রশাসন এ ক্ষেত্রে নিরব ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, এ উপজেলার কাঁচা-পাকা রাস্তা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় ১৮০-২০০টি ট্রাক্টর। হালচাষের অনুমোদন নিয়ে সারা বছর তারা লাঙ্গল বাদ দিয়ে মাটি ও মালামাল বহন করছে। রাস্তা-ঘাট ভাঙ্গার পাশাপাশি হরহামেশাই ঘটছে দূর্ঘটনা। অদক্ষ ও কিশোর চালক দিয়ে ট্রাক্টর চালানোর ফলে দূর্ঘটনার হারও বেড়েছে ব্যাপকভাবে। গত বছর প্রায় ২০টি দূর্ঘটনায় মারা গিয়েছে ১০ জন এবং পঙ্গু হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ। এদের চালক এতোটাই অদক্ষ যে এর চাকায় পিষ্ট হয়ে খোদ গাড়ীর হেলপার মরার মতোও ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে দাবী উঠেছে দ্রুত এই ট্রাক্টর নিয়ন্ত্রনের জন্য। তা না হলে ভবিষ্যতে বাড়বে আরো দূর্ঘটনা। ট্রাক্টরের মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে এ অবৈধ ট্রাক্টর। এ ব্যাপারে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ ইলাহী জানান, ট্রাক্টর একেবারে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে এদের নিয়ন্ত্রনের চিন্তা ভাবনা আছে। অতি শীঘ্রই মালিকদের সাথে বসে চলাচলের ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দিব।
×