ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উপকারভোগীদের ভাতা প্রদানে স্মার্টকার্ড চালুসহ ৭ সুপারিশ

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

উপকারভোগীদের ভাতা প্রদানে স্মার্টকার্ড চালুসহ ৭ সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর উপকারভোগী নির্বাচনে নতুন প্রক্রিয়া প্রবর্তন, ডাটাবেজ সম্পন্নকরণ ও উপকারভোগীদের ভাতা প্রদানে স্মার্ট কার্ড চালুসহ ৭টি সুপারিশ জানিয়েছে ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর পরিকল্পিত কার্যক্রম বাস্তবায়নে যৌক্তিকভাবে উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আগামী (২০১৭-১৮) বাজেটে সে অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবিও জানিয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘এন এস এস এস-এর আলোকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর উত্তরণ ও খাদ্য অধিকার’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারে সংগঠনটির পক্ষে এসব সুপারিশ করা হয়। এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। মূল প্রবন্ধ পাঠকালে মহসিন আলী বলেন, অবিলম্বে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর উপকারভোগী নির্বাচনে নতুন প্রক্রিয়া প্রবর্তন জরুরী। আগামী ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের মধ্যে ডাটাবেজ সম্পন্নকরণ ও কর্মসূচীর অধীন উপকারভোগীদের ভাতা প্রদানে আগামী অর্থবছরের মধ্যে সারাদেশে স্মার্ট কার্ড চালু করা দরকার। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত এমআইএস নিশ্চিত করার সুপরিশও জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর পরিকল্পিত কার্যক্রম বাস্তবায়নে যৌক্তিকভাবে উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আগামী বাজেটে সে অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী অর্থবছরের বাজেটের পূর্বে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পেনশন কর্মসূচী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী থেকে বাদ দিয়ে বাজেটে প্রকৃত বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা এবং এসডিজি বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের অঙ্গীকার পূরণে এনএসএসএস’র ১ম ধাপের সময়কাল কমিয়ে আনার বিষয়টি যৌক্তিকভাবে পুনর্বিবেচনা করা দরকার। সকল ধরনের দারিদ্র্য থেকে মানুষের মুক্তির প্রধান পদক্ষেপ খাদ্য অধিকার নিশ্চিতকরণে অবিলম্বে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকার সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ এখন উন্নতির শিখরে। বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি শুধু দেশকে আরও উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়া এবং সে লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীরও যথাযথ উন্নয়ন ঘটবে বলেই আমরা মনে করি। সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নুরুল কবির বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর উপকারভোগীদের ডাটাবেজ তৈরির ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ডাটাবেজ তৈরির কাজ সম্পন্ন হলেই স্মার্ট কার্ড চালু করার কাজ শুরু হবে এবং এই কর্মসূচীর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেক নীতিগত ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হবে। সভাপতির বক্তবে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য বাস্তব ও কর্মমুখী প্রশিক্ষণ ও বাস্তবধর্মী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন সারা বিশ্বে প্রশংসিত হলেও এখনও দেশের জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। জাতীয় বাজেটের উল্লেখযোগ্য অংশ এ খাতে ব্যয় করা হলেও কর্মসূচীর প্রকৃত প্রভাব প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। এ অবস্থা নিরসনে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীতে ব্যয়িত অর্থের দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর মাধ্যমে সরকার দেশের অতিদরিদ্র ও সর্বাধিক ঝুঁকিগ্রস্ত নাগরিকদের ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা প্রদান করতে চায়; একই সঙ্গে সুরক্ষিত রাখতে চায় দারিদ্র্যে নিপতিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএম আকাশ, অক্সফ্যাম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ¯েœহাল সোনেজি, ওয়ার্ল্ড ভিশনের ন্যাশনাল চীফ এডভাইজার স্টিফেন কে. হালদার, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ডাঃ দিবালোক সিংহ ও কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক আনোয়ারুল হক।
×