ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে আলোচনা

বিএনপি-জামায়াতসহ সকল অপশক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিএনপি-জামায়াতসহ সকল অপশক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিএনপি-জামায়াতসহ সকল অপশক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ক্ষমতায় যেতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে। অন্য কোন পথে ক্ষমতা দখলের সুযোগ নেই। তাই ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। পৃথিবীর কোন শক্তি নেই এই অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে পারে। বুধবার রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট মোঃ ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে এই আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নেন সরকারী দল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, এ কে এম আওয়াল (সাইদুর রহমান), মোঃ হাবিবে মিল্লাত, তালুকদার মোঃ ইউনুস, বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, মোঃ মনিরুল ইসলাম, এ কে এম শাহজাহান কামাল এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান ও সেলিম উদ্দিন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা শেষে প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যু’র কারণে শূন্য হওয়া সংসদের আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবর্তে এই কমিটির সভাপতির নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু। চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ কমিটি পুনর্গঠনের প্রস্তাব দিলে সংসদে কণ্ঠভোটে তা গৃহীত হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, একটি দল এই উন্নয়নের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র-চক্রান্তে লিপ্ত। উন্নয়ন বন্ধে ২০১৩ সালে একটি দলের প্রধান বিদেশীদের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। এই ষড়যন্ত্র থামেনি, এখনও চলছে। এই ষড়যন্ত্রে জড়িত এদেশের কিছু মানুষ তাদের একজন ড. ইউনূস। নোবেল পুরস্কার পেলেই কেউ বিচারের উর্ধে উঠে যায় না। তাই আমার দাবি ড. ইউনূসের মতো সুদখোর, মিথ্যাবাদী, দেশের টাকা আত্মসাতকারী এবং রাষ্ট্রবিরোধীকে আইনের আওতায় আনা হোক। আর যারা পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে তাদের অবিলম্বে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই দিনে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। কিন্তু আন্দোলনের মাধ্যমে মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে জনগণ প্রমাণ করেছিল এদেশে ভোটারবিহীন নির্বাচন চলবে না। খালেদা জিয়া ২০০৬ সালের সোয়া কোটি ভুয়া ভোটার করেও ক্ষমতায় যেতে পারেননি। জনগণ সেই চক্রান্ত প্রতিহত করেছিল। আর বর্তমান সরকার সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করেছে। ক্ষমতায় যেতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে। অন্য কোনভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা ব্যর্থ হবে। এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আগামী পহেলা মার্চ ৮০ বছরে পদার্পণ করছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। আলোচনার শুরুতে তিনি বিষয়টি সংসদকে অবহিত করেন। অতীতে কখনও ভুল-ভ্রান্তি ও খারাপ আচরণ করলে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান তিনি। খসড়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে পীর ফজলুর রহমান বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে প্রবাসীরা আতঙ্কিত। এই আইনটি পাস হলে তারা সম্পত্তির অধিকার হারাবে। গণমাধ্যমে অপপ্রচার চলছে দাবি করে এই অপপ্রচার বন্ধে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে মোঃ হাবিবে মিল্লাত বলেন, কোন মিডিয়া মিথ্যা প্রচার করে থাকলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি আমার ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। বিডিআর সদস্যরা রাতের আঁধারে পুলিশ প্রটেকশনে থাকা গাড়ির গতি রোধ করে দুর্ঘটনায় ফেলানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে। বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে ওই ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান তিনি। জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে এ কে এম আওয়াল বলেন, যে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বলতে রাজি নয়, তাকেই (জিয়া) স্বাধীনতার ঘোষক বলে বিএনপি। সেই বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে এটাই স্বাভাবিক। বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে শাহজাহান কামাল বলেন, গত নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া সেই আহ্বানে সাড়া দেননি। বরং নির্বাচন বন্ধের জন্য জ্বালাও-পোড়াও ও মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। মানুষ এখন সচেতন ক্ষমতায় যেতে চাইলে নির্বাচনে আসতে হবে। শিলিগুড়ি থেকে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক তরঙ্গে প্রতিবন্ধকতা ॥ প্রতিবেশী দেশ ভারতের শিলিগুড়ির কোন অজানা উৎস থেকে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক তরঙ্গে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে অপারেটরটিকে সঙ্গে নিয়ে বিটিআরসি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। এতে প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। কিন্তু উৎস খুঁজে পায়নি সংশ্লিষ্টরা। সীমান্তে তরঙ্গ প্রতিবন্ধকতা এড়াতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাৎসরিক ভিত্তিতে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিটিআরসির ২০১৫-১৬ বছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রতিবেদনটি উত্থাপন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, এর আগে ২০১২ সালে সীমান্তবর্তী এলাকায় সেলুলার মোবাইল নেটওয়ার্কে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে প্রতিবন্ধকতা পাওয়া গিয়েছিল। যা ভারতের দূতাবাসকে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছিল।
×