ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জিয়া ইসলামের মাথার খুলি না পাঠানো বিষয়ে এ্যাপোলো হাসপাতালের ব্যাখ্যা

প্রকাশিত: ০৮:৪৯, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭

জিয়া ইসলামের মাথার খুলি না পাঠানো বিষয়ে এ্যাপোলো হাসপাতালের ব্যাখ্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ফটো সাংবাদিক জিয়া ইসলামের মাথার খুলি না পাঠানোর ব্যাখ্যা দিয়েছে ঢাকা এ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, আমরা সেদিন রোগীর মাথার খুলির একাংশ পাঠাইনি, এটা সত্য। তবে রোগীর সঙ্গে তার পুরো মেডিক্যাল রিপোর্ট দেয়া হয়েছিল, যেখানে লেখা ছিল যে, রোগী জিয়া ইসলামের মাথার খুলির একাংশ আমাদের বোন ব্যাংকে সংরক্ষণ করা আছে। সিঙ্গাপুরের গ্ল্যানিগ্লেস হসপিটালের চিকিৎসকরা গত ১৩ জানুয়ারি জিয়াকে নিয়ে যাওয়ার সময় খুলি নেয়ার কোন ব্যবস্থা রাখেনি। আর এ বিষয়ে অভিযোগ করলে দুই হাসপাতালকেই দোষারোপ করতে হবে। অস্ত্রোপচারের পর জিয়া ইসলামের মাথার খুলির একাংশ রয়ে যাওয়া নিয়ে রবিবার সাংবাদিকদের এমন ব্যাখ্যা দিয়েছেন এ্যাপোলো হাসপাতালের মেডিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ডাঃ আরিফ মাহমুদ। রবিবার এ্যাপোলো হাসপাতালের পক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডাঃ আরিফ মাহমুদ। এ সময় এ্যাপোলো হাসপাতালের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক এনায়েত উল্লাহ খান ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আখতার জামিল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। ডাঃ আরিফ মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ব্রেনে চাপ পড়লে তা অত্যন্ত ফুলে যায়। ব্রেনকে জায়গা করে দিতেই খুলি খুলে রাখা হয়েছিল বোন ব্যাংকে। বোন ব্যাংকে তা ৬ মাস পর্যন্ত রাখা যায়। সাধারণত এই ধরনের রোগীদের স্থিতি অবস্থায় ফিরে আসতে ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগে। তখন আবার খুলির ওই অংশটি স্থাপন করা হয়। তিনি বলেন, গ্ল্যানিগ্লেস হসপিটালে রোগীর সঙ্গে যেসব কাগজ দেয়া হয়েছিল, সেখানে উল্লেখ ছিল খুলির ওই অংশটি এ্যাপোলো হাসপাতালের বোন ব্যাংকে রাখা আছে। তবে, মৌখিকভাবে সেটি বলা হয়নি। এছাড়াও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা খুলি নেয়ার মতো কোন বক্স বা পদ্ধতি নিয়ে আসেনি, যাতে করে খুলির ওই অংশ পাঠানো যায়। সাধারণত ওই অংশটি এখনই কাজে লাগারও কথা ছিল না। তবে, গ্ল্যানিগ্লেস হসপিটাল থেকে চেয়ে পাঠালে আমরা গত ২৬ জানুয়ারি খুলির ওই অংশ সিঙ্গাপুরে পাঠাই। আরিফ বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে যে মেডিক্যাল টিম এসেছিল তারাও আমাদের কাছে ওই অংশটি চায়নি। ওই সময় দুইপক্ষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়নি বলে দাবি করেন ডাঃ আরিফ মাহমুদ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অধ্যাপক ডাঃ ম্যাথিও জে চ্যান্ডির অধীনে জিয়ার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। সে সময় খুলির একটি অংশ এ্যাপোলো হাসপাতালের ফ্রিজে রাখা হয়। কিন্তু সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সময় সেটা দিতে ভুলে যান সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। গত ৯ জানুয়ারি পান্থপথে গাড়িচাপায় আহত হন মোটরসাইকেল চালক জিয়া। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১০ জানুয়ারি তাকে নেয়া হয় এ্যাপোলো হাসপাতালে। সেদিনই তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পর্যবেক্ষণ শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৩ জানুয়ারি এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয় ফটো জার্নালিস্ট জিয়া ইসলামকে। ঢাকায় থাকতেই তার ফুসফুসে সংক্রমণ হলেও এ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকরা সেটি জানাতে পারেননি। সিঙ্গাপুরে নেয়ার পর তা ধরা পড়ে। জিয়ার ফুসফুসের সংক্রমণ নিরোধে গত ১৬ জানুয়ারি গ্ল্যানিগ্লেস হসপিটাল এ্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারে অস্ত্রোপচার করা হয়। এ সময় তার মাথার খুলির বাঁ পাশটা চিকিৎসকরা দেখতে পাননি । সিঙ্গাপুর থেকে বিষয়টি জানানো হলে ঢাকার এ্যাপোলো হসপিটাল খুলি পাঠানোর ব্যবস্থা করে। ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক তসলিম চৌধুরীকে চিকিৎসার জন্য এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। এ্যাম্বুলেন্সে জিয়ার খুলির বাকি অংশটি সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
×