ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীর বাতাস ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে

প্রকাশিত: ০৪:০২, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭

রাজধানীর বাতাস ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরিবেশ অধিদপ্তরের ৫ বছরের হিসেব জানান দিচ্ছে, বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতে রাজধানীর বাতাস থাকে অতি ভয়ঙ্কর পর্যায়ে। অন্যান্য গ্যাসীয় উপাদান সহনীয় মাত্রায় থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মেগাসিটি জুড়ে চলা উন্নয়ন কর্মকা- বাড়িয়ে দিয়েছে ধূলিকণার পরিমাণ। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, পৃথিবীতে বায়ু দূষণের হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। আর দূষিত নগরের মধ্যে ঢাকার স্থান ২৩তম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে বছরে সাড়ে ৩ হাজার মানুষ বায়ু দূষণজনিত অসুখে মারা যান। প্রতিটি ভোর এখানকার বাসিন্দাদের প্রতিশ্রুতি দেয় এক নির্মল পরিবেশের। নগরের বিলাসিতা আর জাঁকজমকপূর্ণ জীবন গ্রামের মানুষকে প্রতিবছর এ ধরনের রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে শহরে। বাংলাদেশের গ্রামগুলো থেকে প্রতিবছর রাজধানী ঢাকা উদ্দেশে চলে যাচ্ছেন ৫১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ। দেশের মোট আয়তনের ঢাকার আয়তন যেখানে মাত্র ১ শতাংশ, সেখানেই বসবাস করছে মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ মানুষ। বেসরকারী এক তথ্যমতে, কাক্সিক্ষত সেই শহরের প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ বসবাস করে বস্তিতে, ঘিঞ্জি আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। আর যারা সেই বিলাসী জীবনের একটু আটটু ছোঁয়া পেয়েও যান, তারাও রেহাই পান না দূষণ থেকে। এই পরিবেশ অতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে শীতে। এ সময়ে শহরজুড়ে বেড়ে চলে নানা উন্নয়ন কর্মকা-। ঘরবাড়ি নির্মাণের ধুলোবালি নগরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। এ ধরনের আবর্জনা বর্ষা কম থাকায় তা ধুয়ে যেতে পারে না। কেবল ধুলো নয়, যানবাহনের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশের ত্রুটিপূর্ণ ইঞ্জিন থেকে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড। নবেম্বর থেকে এপ্রিল মাসে ঢাকার আশপাশে চলে হয় ইটভাটার কাজ। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, শীতকালে রাজধানীর ২৭ শতাংশ দূষণের কারণ এই ইটভাটা। চিকিৎসকরা জানালেন, দেশের প্রায় ২ কোটি মানুষ বায়ু দূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। আর ২০৩০ সাল নাগাদ সাড়ে ৩ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ প্রসঙ্গে নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রাণ গোপাল বলেন, ‘অন্য কোন কারণে নয় বায়ু দূষণে মূলত নাক কান গলার রোগগুলো বেড়ে যাচ্ছে।’ বিশেষজ্ঞদের কাছে প্রশ্ন ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুসারে ঢাকায় দূষণের মাত্রা কেমন। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘গেসিয়েস ম্যাটারটা প্রায় নকস বাদে সব মার্জিনের নিচে।’ মেগাঢাকাকে বসবাসযোগ্য করতে সিটি কর্পোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউকসহ সরকারী সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরী বলে মত তাদের।
×