ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

মিশুক মুনীরের আলোকচিত্র গ্রন্থ ‘মন জানালা’র প্রকাশনা অনুষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬

মিশুক মুনীরের আলোকচিত্র গ্রন্থ ‘মন জানালা’র প্রকাশনা অনুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনেক সময় নান্দনিকতা ছাপিয়েও কালের সাক্ষী হয়ে ওঠে কোন শিল্পকর্ম। ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করা তেমনই ভাস্কর্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে ওঠা এই ম্যুরালটির নির্মাতা সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ। ধাতব বস্তু দিয়ে গড়া ভাস্কর্যটি নির্মাণের সময় এই ভাস্কর কোন গ্লাভস ব্যবহার করেননি। কারণ মুক্তিযোদ্ধরা যুদ্ধে যে কষ্ট করেছিলেন তা নিজে উপলব্ধি করতে চেয়েছিলেন তিনি। আর এই ভাস্কর্যের নির্মাণকালের ছবি তুলেছিলেন বাংলাদেশের ইলেক্ট্রনিক সাংবাদিকতার অগ্রজ ব্যক্তিত্ব প্রয়াত মিশুক মুনীর। সাদা-কালো আলোকচিত্রে ধারণ করেছিলেন ঐতিহসাকি ভাস্কর্য নির্মাণপর্বটি। সেসব ছবিতে নানাভাবে উঠে এসেছে ভাস্কর্যটি নির্মাণে ভাস্করের কঠিন শ্রমের চিত্র। এমনকি শিল্পকর্মটিতে নানান অঙ্গনের মানুষের ভালবাসার দৃশ্যকাব্য উঠে এসেছে ছবিগুলোর মাধ্যমে। শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর অকাল প্রয়াত সন্তান মিশুক মুনীরের ক্যামেরায় অমলিন হয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধসহ সকল প্রগতিশীল আন্দোলনের প্রতীক অপরাজেয় বাংলার নির্মাণপর্ব। সেসব ছবি নিয়ে বেঙ্গল পাবলিকেশনস প্রকাশ করছে ‘মন জানালা’ নামের একটি আলোকচিত্র সঙ্কলন বা গ্রন্থ। বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে সকল নারী-পুরুষ মুক্তিযোদ্ধার উদ্দেশে। বইটিতে ৬৩টি ছবি ঠাঁই পেয়েছে। সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সেমিনারকক্ষে এ আলোকচিত্র এ্যালবামটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন অপরাজেয় বাংলার স্থপতি সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ, ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান, নাট্যজন ম হামিদ এবং কবি ও সাংবাদিক হাসান হাফিজ। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেনÑ কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত ও মিশুক মুনীরের স্ত্রী মঞ্জুলা কাজী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মিশুক মুনীরের অনুজ আসিফ মুনীর। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, অপরাজেয় বাংলা বাংলাদেশের মুখ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এর পেছনে কাজ করেছে সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের নিরলস পরিশ্রম। মুক্তিযোদ্ধাদের কষ্ট অনুভব করতে তিনি এ ম্যুরাল নির্মাণের সময় কোন গ্লাভস ব্যবহার করেননি। খালিদের সেই নির্মাণপর্বটি ফ্রেমবন্দী করেছিল মিশুক মুনীর। অগ্রজ ভাষণের উপহার দেয়া ক্যামেরাটি দিয়ে মিশুক তখন ফটোগ্রাফি শেখার পর্বটি শুরু করেছিল। সেই শেখার সময়টিতেই তুলেছিল অপরাজেয় বাংলার নির্মাণপর্বের ছবিগুলো। ছবি তুলতে তুলতে এক সময় নিজেই ভাস্কর্যটির নির্মাণপর্বের একজন অংশীদার হয়ে যায়। এ ভাস্কর্যটিকে ঘিরে অশুভ শক্তির অপতৎপরতার কথা উল্লেখ করে আনিসুজ্জামান বলেন, স্বাধীন দেশে এ ভাস্কর্যটি অপসারণেরও চেষ্টা করা হয়েছে। যারা অপসারণের চেষ্টা করেছিল সে মানসিকতার মানুষগুলো এখনো এ দেশেই বাস করছে। তাদের মানসিকতারও পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এখনও বিরাজ করছে। সকলের সমবেত প্রচেষ্টায় এ অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এ কাজ দিয়ে শিল্পী আবদুল্লাহ খালিদ অমর হয়ে থাকবেন। অপরাজেয় বাংলা আজীবন বাঙালীর শৌর্যের, বীরত্বের চিরকালীন প্রতীক হয়ে থাকবে। আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, পেশার প্রতি, পেশাগত দক্ষতার প্রতি, যে কোন কাজ নিখুঁত করে তোলার প্রতি মিশুক মুনীরের যে একাগ্রতা ছিল এটা অসাধারণ এক গুণ। যে কাজ করত তাতে নিষ্ঠার অভাব ছিল না। কোন কাজ থেকে পিছিয়ে থাকত না। মিশুক অনেক আগে চলে গেছে সন্দেহ নেই। সে বেঁচে থাকলে আর অনেক কাজ করত। কিন্তু অসময়ে চলে গিয়েও কাজের প্রতি, দেশের প্রতি ভালবাসা ও মূল্যবোধের যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছে তা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পাথেয় হয়ে থাকবে। সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ বলেন, মিশুকের সান্নিধ্য আমি ভুলতে পারি না। যখন আমি অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যটি নির্মাণ শুরু করি তখন খেয়াল করলাম একটি ছেলে প্রতিদিনই এসে চারপাশ থেকে ছবি তোলে। সে নিয়মিতই আসত। আমি আগ্রহী হয়ে তার সঙ্গে কথা বলি। আমি একজন ভাল মানুষের সন্ধান পেলাম। আমাদের মধ্যে গড় উঠল বন্ধুত্ব। মিশুক চলে গেলেও সে বন্ধনটা এখন অটুট আছে। বিডি হিপ-হিপ ফেস্ট শুরু ২৫ ডিসেম্বর ॥ দ্বিতীয়বারের মতো রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে বিডি হিপ-হপ ফেস্ট-২০১৬। আগামী ২৫ ডিসেম্বর হোটেল লা মেরিডিয়ানের ইনফিনিটি রুফটপে সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে মাঝরাত পর্যন্ত একটানা চলবে এ উৎসব। ফেস্টের আয়োজন করছে এ কবির আর গ্রুপের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান রঁন্দেভু প্রাইভেট লিমিটেড। এ উপলক্ষে সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন হয়। এতে রঁন্দেভুর কর্মকর্তারা জানান, আগামী ২৫ ডিসেম্বর রবিবার রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানের ইনফিনিটি রুফটপে সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে মাঝরাত পর্যন্ত একটানা চলবে এ আয়োজন। এবারের আয়োজনে দেশের মেধাবী হিপ-হপ শিল্পীরা র‌্যাপ, বি-বয় ড্যান্স, বিট বক্সিং, হিপ-হপ ফ্যাশন শো, ফায়ার স্পিনিং ইত্যাদি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নিজ নিজ প্রতিভার জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সুযোগ পাবেন। আয়োজকরা বলেন, গত বছরের অনুষ্ঠানের বিপুল দর্শকপ্রিয়তা ও সাফল্য আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে এ বছর আরেকটু বড় পরিসরে ও ভিন্ন আঙ্গিকে এ আয়োজনের। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ফেস্টের পরিচালক ও রঁন্দেভু গ্রুপের চেয়ারম্যান আশিনুল কবির রাজন, মোহাম্মদ জাহিদ, এমএম কামাল পাশা, বিশাল করিম, র‌্যাম্প মডেল রুকসানা আলি হীরা, মানজারিন অবনী, তারিনা খান প্রমুখ।
×