ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৫ মিল বন্ধ ॥ দাম বৃদ্ধি

দক্ষিণাঞ্চলে লবণের কৃত্রিম সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬

দক্ষিণাঞ্চলে লবণের কৃত্রিম সঙ্কট

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ অপরিশোধিত লবণ না থাকার অজুহাতে ঝালকাঠি বিসিক জোনের বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলার ১৫টি মিলে তিন মাস ধরে লবণ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে লবণের কৃত্রিম সঙ্কট দেখা দেয়ায় ক্রমেই দাম বেড়ে চলেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দেশী লবণ উৎপাদন কম হওয়ায় সরকার বিদেশ থেকে বোল্ডার লবণ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এতে করে ঝালকাঠি জোনের ১৫টির মধ্যে ছয়টি মিল বিদেশ থেকে বোল্ডার লবণ আমদানির অনুমতি পেয়েছে। দুইটি মিল মালিক ইতোমধ্যে আমদানিকৃত বোল্ডার আনলেও অপর চারটি মিলের মালিক বোল্ডার না আনায় লবণের সঙ্কট বেড়েই চলেছে। অভিযোগ উঠেছে, ঝালকাঠি বিসিকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বোল্ডার লবণ ঝালকাঠিতে না এনে আমদানির পারমিট কালোবাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে এসব মিল মালিক চট্টগ্রাম থেকে লাইটার জাহাজ সঙ্কটের অজুহাত দেখিয়ে এখন পর্যন্ত লবণ আনেননি। এ ব্যাপারে লবণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হুমায়ুন কবির খান জানান, লবণের অভাবে ঝালকাঠির ১২টি মিলই বন্ধ রয়েছে। যে কারণে এসব মিলের প্রায় দুই হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। তিনি আরও জানান, পূর্বে ঝালকাঠিতে এক বস্তা লবণ বিক্রি হতো ৪০০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ টাকায়। শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস জানান, লবণের মিলগুলো বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অর্থ সঙ্কটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি আরও জানান, লবণের দাম ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে যে লবণ ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে তা এখন ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একাধিক মিল মালিক জানান, ঝালকাঠির উৎপাদিত পরিশোধিত লবণ ঝালকাঠি থেকে বরিশাল, রাজশাহী, বগুড়া, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরবরাহ করা হয়। ঝালকাঠি লবণ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন, বোল্ডার লবণ নিয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ এটা শ্রমিকদের দিকে চেয়ে সরকার অনুমোদন দেয়নি। এটা দিয়েছে দেশে লবণের ঘাটতি পূরণের জন্য। এই ঘাটতি পূরণের জন্য বোল্ডার লবণ আমার মিলে এনে আমি চালাব। তিনি আরও বলেন, লাইটার জাহাজের সঙ্কটের কারণে ঝালকাঠিতে লবণ আনতে পারছি না। কবে নাগাদ লাইটার জাহাজ পেয়ে বরাদ্দ লবণ ঝালকাঠিতে আনা যাবে তাও সঠিক করে বলা যাচ্ছে না। ঝালকাঠি বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ জালিস মাহামুদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঝালকাঠি জেলার ছয়টি লবণের মিল মালিক এই বোল্ডার আমদানির অনুমতি পেয়েছে। ইতোমধ্যে দুইটি লবণ মিলের লবণ এসে পৌঁছেছে। বাকি চারটি মিল এখন পর্যন্ত লবণ আনতে পারেনি। তাদের লবণ আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঝালকাঠি লবণ মিল শ্রমিকরা যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। তারপরেও আমরা নজর রাখছি লবণ আনা হচ্ছে কিনা।
×