ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশী কর্মীদের নিয়মিত করতে সম্মত

এফটিএ করতে চায় মালয়েশিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

এফটিএ করতে চায় মালয়েশিয়া

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মীদের নিয়মিতকরণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। যেসব বাংলাদেশীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের রিহায়ারিং প্রোগ্রামের আওতায় নিয়ে মালয়েশিয়ায় কাজ করার অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছে মালয়েশিয়া। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী এখন ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়ায় কাজ করছেন, তাদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আহ্বান জানালে, মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আহমাদ জহির হামিদী বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে তাদের মালয়েশিয়ায় কাজ করার সুযোগ প্রদানের সম্মতি প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সন্তোষের কথা বাণিজ্যমন্ত্রীকে জানান। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে উভয় দেশের মধ্যে ফ্রি টেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষরের প্রস্তাব দিয়েছে মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী। তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশের উন্নয়ন তুলে ধরেন। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সোমবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ ট্রেড এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০১৬-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করে মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আহমাদ জহির হামিদীর সঙ্গে একান্ত বৈঠকে মতবিনিময় করেন। তোফায়েল আহমেদ সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ^বাসী বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছে। গত বছর বাংলাদেশ ৬.৫১ ভাগ জিডিপি গ্রোথ অর্জন করেছে। গত ১০ বছরে গড় জিডিপি অর্জন ছিল ৬ ভাগ। চলতি বছর ৭.২ ভাগ অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের রফতানি এখন ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, দেশের ৫০ বছরপূর্তিতে ২০২১ সালে রফতানি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে সরকার বিস্তারিত কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব নীতির ফলে বিশে^র বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আসতে শুরু করেছে। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে দেশের বিভন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। এগুলোর বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে, মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে চাহিদা মোতাবেক সরকার সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার শিল্পপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং উন্নয়নের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ উল্লেখ করে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার চলমান বাণিজ্য বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেন। এজন্য তারা উভয় দেশের বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মিনিস্টার দাতো শ্রী মুস্তপা বিন মোহাম্মেদ, ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার নূর আশিকিন মোহা. তাইয়েব, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার এ্যান্ড কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মোঃ আলমগীর জলিল এবং মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শহিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। সামিটে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করেন। মালয়েশিয়ার শিল্প উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাগণ সামিটে অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে এনবিআরের চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান, ডিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ ইব্রাহিম, সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ ইভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, সুপ্রীম কোর্টের এ্যাডভোকেট কেএম তানজিব উল আলম এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট মীর নাসির আহমেদ সম্মেলনে যোগদান করেছেন। উল্লেখ্য, কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন ও বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সহযোগিতায় বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন অথরিটি, এফবিসিসিআই যৌথ উদ্যোগে এ সামিট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঢাকাস্থ মালয়েশিয়ার হাইকমিশন প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়েছেন।
×