ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোটরসাইকেল রুখতে দড়ি থেরাপি

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩ ডিসেম্বর ২০১৬

মোটরসাইকেল রুখতে দড়ি থেরাপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে এই যানজট নিয়ন্ত্রণে বরাবরই ট্রাফিক বিভাগ থেকে নেয়া হয় বিভিন্ন পদক্ষেপ। সেসব পদক্ষেপের কোন কোনটি আবার বেশ অদ্ভুতও বটে! সরেজমিনে গত সোমবার রাজধানীর বিজয় সরণি মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, যানজট নিয়ন্ত্রণে দড়ি ব্যবহার করছেন ট্রাফিক পুলিশের। ট্রাফিক সিগন্যালে আটকেপড়া এলোমেলো গাড়িগুলো নিয়ন্ত্রণ করাই এর মূল উদ্দেশ্য বলে দাবি করেছেন ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা। সরেজমিনে সকাল ৯টায় দেখা গেল বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পেরিয়ে যানজট ঠেকেছে বিজয় সরণিতে। অন্যদিকে আগারগাঁও রোডেও লেগে আছে তীব্র যানজট। আর সাতরাস্তার দিক থেকে আসা গাড়ির জট গিয়ে ঠেকেছে রাস্তাজুড়ে। বাকি ফার্মগেটগামী রাস্তাটিতে গাড়ি চলছে ধীরগতিতে। কারণ, তখনও এ সড়কে ট্রাফিক সিগন্যাল পড়েনি। বিজয় সরণি মোড়ে যখন যানজটের এই অবস্থা তখন এলোমেলো চলা মোটরসাইকেলকে রুখতে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে দড়ি থেরাপি। কেননা, একটি সিগন্যাল বন্ধ করে দিলেও মোটরসাইকেলের জন্য ট্রাফিক পুলিশকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কখনও কখনও দলবেঁধে সিগন্যাল অমান্য করে চলে যায় মোটরসাইকেল আরোহীরা। এজন্য বিজয় সরণি মোড়ে এই দড়ি থেরাপির ব্যবস্থা। সরেজমিনে বিজয় সরণি মোড়ের যানজটের নেপথ্যে তিন ধরনের সমস্যা পাওয়া গেছে। একটি হলো বিজয় সরণি মোড়ের প্রতিটি সিগন্যাল পৃথক পৃথকভাবে ছাড়তে হয়। অর্থাৎ এই পয়েন্টে পূর্ব-পশ্চিম বা উত্তর-দক্ষিণ অর্থাৎ অন্য পয়েন্টের মতো একযোগে দুটি সিগন্যাল ছাড়ার কোন ব্যবস্থা নেই। অন্য একটি সমস্যা হলো, সিগন্যালের একাংশে দুটি পাম্প ও অপরাংশের সামনে আরেকটি ওভারব্রিজ করা হয়েছে। এতে সড়কের দুই অংশে এক লেন করে রাস্তা কমেছে। পাশাপাশি অপ্রশস্ত সড়ক, ভিআইপি ও ভিভিআইপি প্রটোকল, বিজয় সরণি মোড়ে ওভারব্রিজ না থাকায় রাস্তা দিয়ে অবাধে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের কারণেও গাড়ি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। দীর্ঘ সিগন্যাল থাকলে উল্টো পথে সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের গাড়ি চলাচল করতেও দেখা যায়। যাত্রীরা বলছেন, সকালে ও সন্ধ্যায় সবচেয়ে বেশি সময় সিগন্যালের অপেক্ষায় থাকতে হয়। এমন হয় দীর্ঘ সিগন্যালের কারণে সময়মতো অফিসে ও বাসায় পৌঁছা সম্ভব হয় না। আর এখানকার সিগন্যাল মানেই নিশ্চিত আধা ঘণ্টা বসে থাকা। কেননা, চারটি সিগন্যাল পরপর ছাড়া হচ্ছে। এর মধ্যে ভিআইপি ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য কখনওবা আবার একটি সিগন্যাল ছেড়ে রাখা হয় দীর্ঘসময়। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজয় সরণি মোড়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) সাজ্জাদ বলেন, এখানে মোট চারটি সিগন্যাল। যার প্রতিটি সিগন্যাল স্বতন্ত্র। একটি সিগন্যাল পড়লে মোটরবাইকেলের অত্যাচার বেড়ে যায়। এজন্য ট্রাফিক বিভাগ থেকে মোটরসাইকেল রুখতে এই দড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই সিগন্যালের সঙ্গে সঙ্গে দড়ি দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়। তিনি আরও বলেন, বিজয় সরণি মোড়ের আশপাশে রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ফলে প্রায় সময় এই রাস্তায় ভিআইপিদের আনাগোনা। এজন্য ভিআইপিদের সুবিধা দিতে গিয়ে অন্য সিগন্যালগুলোতে গাড়ির জটলা বাড়তে থাকে।
×