ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চবিতে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি ॥ হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

চবিতে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি ॥ হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে

রহমান শোয়েব, চবি ॥ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি ও জালিয়াতির অভিযোগে আটক হয়েছে ১৭ ভর্তিচ্ছু। গত ২৩ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর চলা ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন সময় এদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে বেশ কয়েকজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তিও প্রাদন করা হয়। কিন্তু তাদের পেছনে যারা মূল হোতা হিসেবে কাজ করেছে তারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। ফলে ভর্তি জালিয়াতির নাটের গুরুদের বিচার ও শাস্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ অক্টোবর চবি বি-১ ইউনিটের (কলা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ৮ জনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও আরও দু’জন ঢাবিতে চলতি বছর ভর্তির সুযোগ পেয়েছে বলে দবি করে। আটককৃতদের মধ্যে মো. ইমরান হোসেন নামের একজন নিজেকে ঢাবির টিভি এ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র বলে দাবি করে। তিনি আরাফাতুল ইসলাম নামের এক পরীক্ষার্থীর হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু পরীক্ষার হলে আরাফাতুল ইসলামও উপস্থিত থাকায় দুজনের রোল নম্বর মিলে যায়। পরে তাদের আটক করা হয়। এদের মধ্যে ইমরান হোসেন চবির ইতিহাস বিভাগের ৩য় বর্ষের আনোয়ার হোসেন নামের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিসে একটি স্বীকারোক্তিমূলক লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে তার ২ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। সেই মোতাবেক তিনি পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। এর আগেও গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে চবির এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সদ্য সমাপ্ত ভর্তি পরীক্ষায়ও একই অভিযোগ উঠেছে চবির আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বারবার প্রতারক চক্রের কাছ থেকে চবি শিক্ষার্থীদের নাম বের হয়ে আসায় ধারণা করা হচ্ছে এখানে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে। প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষার সময় এ সিন্ডিকেট মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন জালিয়াতির আশ্রয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভর্তি করিয়ে দিতে তৎপর হয়। তাদের এই অপতৎপরতা নস্যাৎ করে দিয়ে ইতোমধ্যেই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু প্রতারক চক্রের রাঘব বোয়ালরা এখনও রয়েছে অধরা। এছাড়া ইমরান হোসেনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী অনুযায়ী এখনও ইতিহাস বিভাগের আনোয়ার হোসেনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি প্রশাসন। ফলে এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে কারা জড়িত তাও বের করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে চবির দায়িত্বশীল একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, প্রতারক চক্রের সঙ্গে কারা জড়িত এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই কিছু নাম উঠে এসেছে। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িত এমন ৪-৫ জনের নাম প্রশাসনের হাতে এসেছে বলেও জানা যায়। খুব শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানায় সূত্রটি। এ ব্যাপারে চবি প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী জানান, ‘ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত এমন সন্দেহভাজনদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। প্রকৃত অপরাধীদের ব্যাপারে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
×