ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনা সভায় মন্ত্রী মোজাম্মেল হক

মুজিবনগর সরকারের অধীনে যুদ্ধ করতে চাননি জিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৮ নভেম্বর ২০১৬

মুজিবনগর সরকারের অধীনে যুদ্ধ করতে চাননি জিয়া

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, জাসদের ভুল রাজনীতির কারণে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল। অবশ্য পরে তারা (জাসদ) এ ভুল স্বীকার করেছেন। এই সুযোগ নিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জিয়া সরাসরি জড়িত ছিলেন। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নির্বিচারে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার দায়ে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার হওয়া উচিত। সোমবার শাহবাগের কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। ৭ নবেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস পালন উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে জিয়াউর রহমান প্রথম মুজিবনগর সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করার বিরোধিতা করেছিলেন। ১৫ আগস্টের পরে খালেদ মোশাররফসহ অনেক দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে পুনর্বাসন করেছেন। মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কর্মসূচী সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ও মোশতাক গং একাত্তরের যুদ্ধকালীনও নানা ষড়যন্ত্র করেছিল। খালেদ মোশাররফ বীরউত্তম জিয়ার মতো জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতি সব সময় মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তমদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তমদের অবদান দেশবাসী চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আর ৭৫-এর ঘাতক ও তাদের দোসরদের তীব্র ঘৃণা জানাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন-উর রশিদ বলেন, নতুন প্রজš§কে সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। সিপাহী বিপ্লবের নামে প্রতিবিপ্লব করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেছে। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার ও সৈনিককে হত্যা করেছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, মূলধারার রাজনীতির বিরোধী শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিল। সেই ঘাতক গোষ্ঠী আজও আবার একই কায়দায় নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করছে। খালেদ মোশাররফের কন্যা মাহজাবিন খালেদ এমপি মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারীদের বিচার দাবি করে বলেন, খালেদ মোশাররফ বীরউত্তমকে প্রধান সেনাপ্রধানের মর্যাদা দিয়ে সেনানিবাস এলাকায় ছবি টানাতে হবে। খালেদ মোশাররফ বীরউত্তমের সহধর্মিণী সালমা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বীরমুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব) নাছির উদ্দিন বীরপ্রতিক, সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন (অব) শচীন কর্মকার, এসপি মাহবুব উদ্দিন বীরবিক্রম প্রমুখ। বিপ্লব নয়, মানুষ হত্যা হয়েছে ৭ নবেম্বরÑড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় বিএনপি-জামায়াত জড়িত। তাদের রাজনীতিই হলো ষড়যন্ত্রের। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা তাদের নতুন ষড়যন্ত্রের অংশ। নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। অতীতে যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা, গির্জা, মন্দিরে হামলার পেছনে বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধন ছিল, এগুলোতেও তাদের সরাসরি ইন্ধন রয়েছে। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে ‘সৈনিক হত্যা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে ৭ নবেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ নয় দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। এই দিনে কোন বিপ্লব হয়নি, মানবতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছিল। এই দিনটি একটি কালো দিন। জিয়াউর রহমানের মাজারে বিএনপি ফুল দিয়ে প্রমাণ করেছে জিয়া সরাসরি সৈনিক হত্যা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতা হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন প্রমুখ।
×