ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ধরতে নয়াদিল্লীর সাহায্য কামনা

মোস্ট ওয়ান্টেড কয়েক জঙ্গী গা-ঢাকা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩ নভেম্বর ২০১৬

মোস্ট ওয়ান্টেড কয়েক জঙ্গী গা-ঢাকা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে

শংকর কুমার দে ॥ ঢাকার গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারী ও টার্গেট কিলিংয়ের সঙ্গে জড়িত মোস্ট ওয়ান্টেড কয়েকজন জঙ্গী গা-ঢাকা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। গা-ঢাকা দেয়া এসব জঙ্গীকে ধরার জন্য বাংলাদেশ সাহায্য চেয়েছে ভারতের। ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) কাছে নব্য জেএমবির এসব জঙ্গীকে ধরার জন্য সাহায্যও চেয়েছে বাংলাদেশের কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিইউ)। নব্য জেএমবির এসব জঙ্গী গুলশান হামলা ছাড়াও টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনায়ও জড়িত। গা-ঢাকা দেয়া এসব জঙ্গী ঢাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড। তদন্ত সংস্থা সিটিটিইউ সূত্রে এ খবর জানা গেছে। ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এর উদ্বৃতি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিইউ) পক্ষ থেকে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) কাছে যেসব জঙ্গী ধরার জন্য সাহায্যও চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে গুলশান হামলার সঙ্গে যুক্ত ওই দুই জঙ্গীর একজন হলো মামুনূর রশিদ রিপন ওরফে জাহাঙ্গীর এবং অপরজন শরিফুল ইসলাম খালেদ। শুধু রিপন আর খালেদই নয়, গুলশান কা-ে জড়িত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নুরুল ইসলাম মারজান, তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বাসারুজ্জামান ওরফে রাহুল ওরফে চকোলেট এবং নিউ জেএমবির অস্ত্র বিশেষজ্ঞ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে টাইগার ওরফে শান্ত ওরফে আদিল ওরফে রাজীব গান্ধী, নিউ জেএমবি’র ‘আমির’ তথা খাগড়াগড় কা-ের অন্যতম অভিযুক্ত সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা নাসিরুল্লাহ ওরফে ভাগ্নে সোহেল এবং জুনায়েদ হোসেন খান ওরফে বিগ ব্রাদারও ভারতের কোথাও গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন ঢাকার গোয়েন্দারা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, শরিফুল ইসলাম খালেদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ছাত্র। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যার পর পরই এই দুই জঙ্গী পশ্চিমবঙ্গে গা- ঢাকা দেয়। ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির জঙ্গী হামলার যাবতীয় রসদ ও সরঞ্জামের ব্যবস্থাকারী জামায়াত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশের (নিউ) এই দুই জঙ্গী। গত এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখ থেকে বাংলাদেশের এই দুই জঙ্গী ভারতে রয়েছে। এমনকী তারা এরই মধ্যে কলকাতার একটি হোটেলেও দু’দিন কাটিয়ে গিয়েছে। প্রথমদিকে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, বীরভূম, কলকাতা ও হাওড়ার আস্তায় কিছুদিন কাটিয়ে তারা দিল্লী এবং উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি ডেরা পালটে ফের পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছে বলে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) উদ্বৃতি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদারমনস্ক অধ্যাপক রেজাউল করিমের খুনের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত মামুনূর রশিদ রিপন ওরফে জাহাঙ্গীর ও শরিফুল ইসলাম খালেদকে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় দিয়েছিল বর্ধমান থেকে ধৃত আইএস জঙ্গী মহম্মদ মসিরউদ্দিন ওরফে মুসা। গুলশান হামলার জন্য অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক সংগ্রহে রিপন ও খালেদের সঙ্গেই মালদহের কালিয়াচক সীমান্তের এক গ্রামে বৈঠক করেছিল মুসা। পরে মধ্য কলকাতার ওই হোটেলে তাদের থাকার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিল সে। বাংলাদেশ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এনআইএয়ের গোয়েন্দারা বলছেন, ধরা পড়ার পর জেরায় আইএস সমর্থক দুই বাংলাদেশী জঙ্গীর উল্লেখ করেছিল মুসা। তাদের সঙ্গে বৈঠক, গুলশান হামলার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া এবং অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থ সংগ্রহের বিষয়েও জানিয়েছিল সে।
×