ভাবুন আপনি দাঁড়িয়ে আছেন গুলিস্তানের যানজটে। গন্তব্যে তাড়াতাড়ি পৌঁছানো একান্ত জরুরী। স্রেফ একটি কল করুন হাজির হবে আকাশ ট্যাক্সি! আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপটে এটি এখনও অলীক কল্পনা। কিন্তু ইউরোপ কিংবা আমেরিকায়?
সাম্প্রতিক তথ্য জানাচ্ছে ইউরোপীয় এরো স্রেস জায়ান্ট খুব নীরবে সিলিকন ভ্যালি প্রজেক্টের মতো উচ্চাভিলাষী প্রকল্প হাতে নিয়েছে নাম ‘ভাহানা’। এটি পাইলটবিহীন যাত্রীবাহী এয়ার ক্রাফট যা আকাশ পথে আপনাকে বহন করবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে। বিষয়টি অনেকটা উবারের ট্যাক্সি সেবার মতোই কেবল সড়কের পরিবর্তে ব্যবহৃত হবে আকাশ পথ। এয়ারবাস বিষয়টিতে একেবারে ‘স্পিকটি নট’ নীতি মেনে চলেছে এতদিন। অতি সম্প্রতি তারা একটি ব্লগে প্রাথমিক ধারণা ও কার্যপদ্ধতি নিয়ে একটি পোস্ট প্রকাশ করেছে। তাদের বর্ণনায় আকাশ যানটি খাঁড়া/(বা ভার্টিক্যালি) ভাবে উড্ডয়ন ও অবতরণে সক্ষম অনেকটা হেলিকপ্টারের মতো। দুই জোড়া টিলটিং পাখা, সঙ্গে চারটি ইলেকট্রিক মোটর। যাত্রীর জন্য ক্যান পির নিচে স্থান রয়েছে যা অনেকটা হেলমেন ভাইহরের মতোই খোলা যাবে। এয়ারবাস বর্তমানে মার্কিন বিমান ত্রিমাতা বোয়িংয়ের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। কোম্পানিটি সুপরিচিত তাদের বড় আকারের জেট লাইনার যেমন ডাবল ডেকার অ-৩৮০ এর জন্য। বর্তমানে এটি ভবিষ্যত সম্ভাবনা বিবেচনায় রেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের যেমন অভিজ্ঞতার অভাব তেমনি আছে অর্থ সঙ্কট। ভাহানা প্রকল্পটি নিয়ে তারা এগিয়ে চলছে এ-কিউক উই ইউনিটের মাধ্যমে। যা আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর সান মোসে, ক্যালিফোর্নিয়াতে উদ্বোধন করা হয়েছে। এয়ারবাস তাদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ১৬০ মিলিয়ন ডলার প্রকল্পটিতে বিনিয়োগ করলে আরও বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে যাতে প্রকল্পটি গতি পেতে পারে। এ-কিউক ইউনিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রডিন লেইসফ গত সেপ্টেম্বরে জানান, ‘আমাদের আকাশযানটির জন্য কোন রানওয়ের প্রয়োজন হবে না। প্রয়োজন হবে না কোন পাইলটের এটি নিজ থেকেই আকাশ পথে যে কোন প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে যেতে পারবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি কেবল একজন যাত্রী বহন করতে পারবে বা মালামালও বহন করবে। আমাদের মূল লক্ষ্য বিশ্বে প্রথম চালকবিহীন যাত্রীবাহী আকাশযানের আইনগত অনুমোদন লাভ করা।’ প্রকল্পটির বর্তমান লক্ষ্য ২০১৭ এর শেষ নাগাদ একটি পূর্ণাঙ্গ প্রোটোটাইপ বিমানের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন এবং ২০২০ এর মধ্যে এটি বাজারজাত করল। বিজ্ঞানের এই নতুন ক্ষেত্রটিতে এয়ারবাস একা নয়। গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা বা হোন্ডাও এডিয়েশন বাণিজ্যে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে। হোন্ডা তিন দশক গবেষণার পর ২০১৫তে তাদের প্রথম ব্যক্তিগত জেট বিমানটি সরবরাহ করেছে। এ ছাড়াও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তো আছেই। এখানে প্রত্যেকেই প্রত্যেকের প্রতিদ্বন্দ্বী। এয়ারবাস গত বছর ঘোষণা দেয় তাদের এ কিউক প্রকল্পটি তারা উবারের যৌথভাবে করতে আগ্রহী। যার মাধ্যমে হেলিকপ্টার পরিচালনায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। নাসাও ইলেকট্রিক প্রপালশন ইঞ্জিনের জন্য বড় বিনিয়োগ করেছে। উল্লেখ্য, প্রথম বাই প্লেনের ধারণা ও প্যাটেন্ট নেন নিকোলা টেসলা ১৯২৮-এ।
অনুবাদ ॥ আকিল জামান ইনু
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: