ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে মাথায় গুলি চালিয়ে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৯ অক্টোবর ২০১৬

রাজধানীতে মাথায় গুলি চালিয়ে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ধানম-িতে নিজ বাসায় মাথায় রাইফেলের গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যবসায়ী। পরিবারের দাবি, ওই ব্যবসায়ী ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। দূরারোগ্য ব্যাধির যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তিনি এমন কা- ঘটান। তাও আবার একমাত্র ছেলের সামনেই। পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্রটি এক রাউন্ড বুলেটের খোসাসহ জব্দ করেছে। আগ্নেয়াস্ত্রের গায়ে ওই ব্যবসায়ীর নাকি অন্য কারো হাতের ছাপ রয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে প্রয়োজনে আগ্নেয়াস্ত্রটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) আগ্নেয়াস্ত্র পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। বৃহস্পতিবার রাত দশটায় রাজধানীর ধানম-ির ৯/এ সড়কের ১৩২ নম্বর ছয়তলা বাড়ির পঞ্চম তলায় ঘটনাটি ঘটে। নিহতের পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত ব্যবসায়ীর নাম আব্দুল হালিম চৌধুরী (৬৫)। তার পিতার নাম আব্দুল মমিন চৌধুরী (মৃত)। তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ক্যাপ্টেন ছিলেন। ছয়তলা বাড়িটির পঞ্চম তলার ৫/এ ও ৫/বি নম্বর ফ্ল্যাট দুইটি নিহত ব্যবসায়ীর নিজস্ব। ফ্ল্যাট দুইটি ভেঙ্গে একত্র করে বসবাস করছিলেন ওই ব্যবসায়ী। নিহত আব্দুল হালিম চৌধুরী এক সময় স্ত্রী নাজমারা নাজনিনের (৬০) ফার্ম দেখাশোনা করতেন। পাশাপাশি ওই ব্যবসায়ীর নিজস্ব ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসাও ছিল। প্রায় সাত বছর আগে নিহত ব্যবসায়ীর কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে। আর দুই বছর আগে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর থেকেই তিনি ব্যবসা বাণিজ্য ছেড়ে দেন। এ কারণে আর্থিক টানাপোড়েনও শুরু হয়। কিডনি ও ক্যান্সারের কারণে আব্দুল হালিম রীতিমত নিজেকে গুটিয়ে নেন। সারাক্ষণ বাড়িতেই থাকতেন। তেমন কোথাও বের হতেন না। দুশ্চিন্তা করতেন সারাক্ষণ। দুরারোগ্য ব্যাধির কারণে তিনি প্রায়ই মরে যাওয়াই ভাল বলে পরিবারের সদস্যদের বলতেন। বিশেষ করে কেউ কোন কষ্ট দিয়ে কথা বললেই তিনি মরার কথা বলতেন। ধানম-ি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন নিহতের ছেলে মায়েন রিদওয়ানের বরাত দিয়ে জনকণ্ঠকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে ওই ব্যবসায়ী লাইসেন্সকৃত পরিবারিক পয়েন্ট টু টু বোরের রাইফেলটি পরিষ্কার করার কথা বলে আলমারি থেকে বের করেন। তখন সামনে একমাত্র ছেলে মায়েন রিদওয়ানও (২১) ছিল। স্ত্রী ও মেয়ে পাশের রুমেই ছিল। ছেলের সামনেই রাইফেল পরিষ্কার করছিলেন। পরিষ্কার করতে করতেই এক পর্যায়ে মাথায় রাইফেল ঠেকিয়ে ছেলের সামনেই গুলি করে দেন আব্দুল হালিম চৌধুরী। সঙ্গে সঙ্গে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন। ছেলের চিৎকারে বাসার লোকজন ছাড়াও বাইরের মানুষ ভিড় করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। লাশের সঙ্গে এক রাউন্ড বুলেটের খোসাসহ রাইফেলটি জব্দ করা হয়।
×