ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ॥ রওশন

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৭ অক্টোবর ২০১৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ॥ রওশন

সংসদ রিপোর্টার ॥ সংসদে বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, দেশে খাদ্য উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। বাংলাদেশে এখন আর কেউ না খেয়ে নেই, সবাই খেতে পারছেন- সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। বৈদেশিক রিজার্ভ বেড়েছে, মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, জন্ম-মৃত্যুর হার কমেছে, গড় আয়ুও বেড়েছে। দেশের উন্নয়নের সব সূচকই এগিয়ে যাচ্ছে। আর এটি একমাত্র সম্ভব হচ্ছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারণেই। বৃহস্পতিবার সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাজারে শাক-সবজি, মাছ, ফলমূলের কোন অভাব নেই। কিন্তু এসবে এত কীটনাশক ও ফরমালিন যে কিছুই খাওয়া যায় না। মাছের বাজারে আগে মাছি ভ্যান-ভ্যান করত, এখন বাজারে কোথাও মাছি নেই। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে খাদ্যদ্রব্যে এই অতিরিক্ত কীটনাশক ও ফরমালিনের ব্যবহার বন্ধ করতে পারেন, কিন্তু তিনি সেই ইচ্ছা পোষণ করবেন কিনা জানি না। যদি না করেন তাহলে তিনি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়বেন কীভাবে! এ সময় সংসদে উপস্থিত থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে রওশন বলেন, শাক-সবজি, ফলমূলে রাসায়নিকের ব্যবহার বন্ধ না করলে আপনি কিভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বেন? এসব বন্ধ করা হয় না কেন? আমরা কেন আগামী তরুণ প্রজন্মকে নিরাপদ খাদ্য দিতে পারছি না! মানুষ বিষ খেয়ে বিষ হজম করছে। তাহলে আপনি কাদের নিয়ে সোনার বাংলা গড়বেন? সবাই তো অসুস্থ। আমরা শুধু বারবার বলেই যাচ্ছি, কথায় আছে- বকারাম বলে যা আর শোনাওয়ালা শুনে যা। এগুলোর বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন এ্যাকশন নেয়া হয়নি কেন? অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে না পারলে এসব বন্ধ হবে না। রওশন এরশাদ বলেন, খাদ্যদ্রব্যে এসব রাসায়নিক মেশাচ্ছে প্রভাবশালীরা, এজন্য তাদের শাস্তি হয় না। এই প্রভাবশালীরা কারা? দেশ খাদ্যে ঠাসা থাকলেও নিরাপদ খাদ্যের বড়ই অভাব। নিরাপদ খাদ্য কেন আমরা নতুন প্রজন্মকে দিতে পারছি না? এ প্রসঙ্গে চীনের একটি উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, দেশটিতে দুধের মধ্যে ম্যালামাইন মিশ্রণ ধরা পড়লে তদন্ত করে জড়িত দুই চীনা নাগরিককে ধরে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশেও এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে নিরাপদ খাদ্য কখনই পাওয়া যাবে না। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, দেশে শিক্ষার কোন মান নেই, শুধু পাসের হার বাড়ানো হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রীকে বলবো-আগের সিস্টেমে ফিরে যান। এসব পড়াশোনা দিয়ে কিছু হবে না, আমাদের ছেলে-মেয়েদের বিদেশে কোথাও স্থান হবে না। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও সরকার ভাল কাজ করছেন। পাশাপাশি দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে হবে। কর্মসংস্থানের অভাবে অনেক শিক্ষিত ছেলেমেয়ে মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে, কেউ কেউ জঙ্গীবাদেও জড়াচ্ছে। রাজধানীতে যানজটের কথা তুলে ধরে রওশন এরশাদ বলেন, ভিআইপি ও ভিভিআইপি সড়ক বাদ দিন। জনগণের কথা ভেবে রাস্তাগুলোকে যানজটমুক্ত করুন। সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। যোগাযোগমন্ত্রী সারাক্ষণ রাস্তায় থাকেন, ভাল কথা। কিন্তু যাত্রীদের নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা করতে না পারলে এতে কি লাভ! রওশন এরশাদ দেশের জন্য বিরল সম্মান বইয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এ দেশে নারী-পুরুষ সমঅধিকার নিয়ে কাজ করবে তা অনেকেই মেনে নেয় না। কিন্তু নারীর ক্ষমতায়নের সেই দুরূহ কাজটিই কৃতিত্বের সঙ্গে করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কারণে আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জনে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কেও অভিনন্দন জানান তিনি।
×