ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উবাচ

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

উবাচ

ক্রসফায়ার চাই! স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্রসফায়ার নিয়ে নানান বিতর্ক। আলোচনা। সমালোচনা। কেউ কেউ এর পক্ষে। কেউ কেউ বিপক্ষে। চলতি সপ্তাহে সংসদ অধিবেশনে ক্রসফায়ারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলেন সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ। এ নিয়ে ফের নতুন করে আলোচনা। তবে বিশেষ অপরাধীদের ক্ষেত্রে ক্রসফায়ার অব্যাহত রাখার পক্ষে জাপার এই নেতা। মঙ্গলবার সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের পক্ষে এই সংসদ সদস্যের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় অধিবেশনে সভাপতিত্বকারী ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেছেন, সরকার ‘ক্রসফায়ারে’ বিশ্বাস করে না। ফিরোজ রশীদ জঙ্গী দমনে সরকারের কাজের প্রশংসা করে রাজধানীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, একটিই কথা এখন- অসংখ্য নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী নির্মম হত্যার শিকার হচ্ছে। জঙ্গীদের ধরে নিয়ে যদি গুলি করতে পারি, তাদের রক্ষার জন্য কোন মানবাধিকার সংগঠন তো এগিয়ে আসেনি। তাহলে নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের ক্রসফায়ার দিলে সমস্যা কোথায়। দেশকে, সমাজকে, সভ্যতাকে বাঁচাতে হলে ওই নিষ্ঠুর আচরণ করতেই হবে সরকারকে। যে ধরা পড়ল, তাকে কেন আজকে আইনের আওতায় দেব? আমরা এ সংসদে বলতে চাইÑ এ নরপশুদের আইনের আশ্রয়ে নয়; তাদের একমাত্র শাস্তি ক্রসফায়ারে গুলি করে মেরে ফেলা। তিনি বলেন, তাদের মারতে কোথায় বাধা। ১৬ কোটি মানুষকে বাঁচাতে হলে, নারী সমাজকে বাঁচাতে হলে এটা করতে হবে। দেশের বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সবাইকে আইনের কাঠগড়ায় যদি দাঁড় করান, আর সুপ্রীমকোর্ট পর্যন্ত যদি নিয়ে যান; তাহলে একজনও বিচার দেখে যেতে পারবে না। ভিকটিম পরিবার উকিল-মোক্তারের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে যাবে। পরে ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, আপনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সঙ্গে আমরা দ্বিমত পোষণ করি না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সুযোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জঙ্গী দমনে সক্ষম হয়েছেন। আপনি যে বলছেন ক্রসফায়ারের কথা, আপনার পেছনে যিনি আছেন মানবাধিকারের প্রশ্ন তুলবেন। সরকার যাবে কোথায়? দ্য গবর্নমেন্ট ডাজ নট বিলিভ ইন ক্রসফায়ার। আমরা ক্রসফায়ারে বিশ্বাস করি না। বিএনপি সন্ত্রাসী দল স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপিকে সন্ত্রাসী ও গণবিচ্ছিন্ন দল অভিহিত করে খালেদা জিয়ার বিচারের দাবি তুলে সাড়া ফেলে দিয়েছেন বিএনপি নেতা প্রয়াত কেএম ওবায়েদুর রহমানের স্ত্রী অধ্যাপক শাহেদা ওবায়েদ। আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণাও দিয়েছেন গড়ব বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিচার দাবি করে বলেছেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে যদি জামায়াতসহ অনেকের বিচার হয়, তাহলে পেট্রোলবোমা মারার দায়ে কেন খালেদা জিয়ার বিচার হবে না? বিএনপির রাজনৈতিক অস্তিত্ব নেই। তারা দেউলিয়া হয়ে গেছে। গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বনানীর বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচনের কথা জানান শাহেদা ওবায়েদ। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে শাহেদা ওবায়েদ বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতসহ অনেকের বিচার হচ্ছে। পেট্রোলবোমা মারার দায়ে খালেদা জিয়ার বিচার না হলে এটি জাতির কাছে নেতিবাচক নজির হয়ে থাকবে। এটা তো সামনে, যুদ্ধাপরাধের সময় তো অনেক আগের। এরপরও বিচার হয়েছে। তাহলে খালেদা জিয়ার কেন হবে না? ২০১৫ সালে তিন মাসব্যাপী বিএনপির আন্দোলনে জ্বালাও-পোড়াও, পেট্রোলবোমা ব্যবহারের দায় অবশ্যই খালেদা জিয়ার। তিনি যখন গুলশানে তার অফিসে রয়েছেন, সেদিন থেকে শুরু হয়েছে। তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বন্ধ হয়েছে। ফলে দায় তার। বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল অভিহিত করে তার সপক্ষে মতামতও তুলে ধরেন শাহেদা ওবায়েদ। তিনি বলেন, ট্রাকে ট্রাকে অস্ত্রের চালান, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ও জঙ্গীবাদের উত্থানের দায় এড়াতে পারে না বিএনপি। আর এসব সন্ত্রাসী কর্মকা-ের জন্য খালেদা জিয়ার বিচার হওয়া উচিত। বিএনপি যে সন্ত্রাসী দল কর্মকা-ের মাধ্যমে তারা সেটাই প্রমাণ করেছে। ২০১৫ সালে নির্বাচনের পর তারা দেশব্যাপী পেট্রোলবোমা হামলা চালিয়েছে। তারপরও তাদের সন্ত্রাসী না বলার তো কোন কারণ নেই। এক প্রশ্নের জবাবে এখন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক দল নেই উল্লেখ করে শাহেদা ওবায়েদ বলেন, বিএনপি এক সময় বিশাল দল ছিল। ক্যান্টনমেন্টে দলটির জন্ম হলেও জিয়াউর রহমান দলটিকে সবার কাছে নিয়ে যেতে পেরেছেন। তবে দলটি এখন তলানীতে এসে ঠেকেছে, দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাদের একমাত্র পথ সন্ত্রাস। মধ্যবর্তী নির্বাচন চাই নাÑ স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করে সঙ্কটে পড়া বিএনপি নেতাদের নির্বাচনী দাবির যেন শেষ নেই। আজ তত্ত্বাবধায়ক তো কাল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলছেন নেতারা। কখনও বলছেন এখনই নির্বাচন চান, আবার কখনও টাইম ফ্রেম ঘোষণাও করছেন যে, আগামী তিন মাসের মধ্যে সরকার নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। তবে এ সপ্তাহে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দাবি অন্যরকম। তিনি এখন নতুন নির্বাচন চান, তবে সেই নির্বাচন হবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনই! ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাগপা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, আমি আগের নির্বাচনটাই চাই। মধ্যবর্তী নির্বাচন নয়, আগের নির্বাচন চাই। কেননা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে যে প্রহসন হয়েছে তাতে জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা উঠেছে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। আর মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা উঠে এসেছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সাহেবের কাছ থেকে। আবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কিসের মধ্যবর্তী নির্বাচন। কিন্তু আমরা তো মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা বলিনি। আমরা বলেছি, গত নির্বাচনটিই আমরা মানি না এবং সেটা অনৈতিক। নৈতিকভাবে জনগণের অংশগ্রহণে আগের নির্বাচনটা চাই। সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ কমিশন দরকার। সরকার তাদের মনোনীত সার্চ কমিটি দিয়ে যে কমিশন গঠন করবে, তা জনগণের হবে না। জনগণের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। ওই কমিশনই একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।
×