ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আপন চেহারায় ফিরছে ঢাকা

ফুরফুরে মন নিয়ে ফেরা, আজ থেকে কর্মচাঞ্চল্য

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ফুরফুরে মন নিয়ে ফেরা, আজ থেকে কর্মচাঞ্চল্য

মোরসালিন মিজান ॥ ছুটে চলা জীবন। যেন পাগলা ঘোড়া। অবসর নেই। অবসর মেলে না। তবে দুই ঈদের কথা আলাদা। এ সময় বড় করে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগটি কাজে লাগান শহর ঢাকার মানুষ। এবারও উৎসব উপলক্ষে ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল রাজধানী। গিয়েছিল বলার কারণ, এরই মাঝে শেষ হয়েছে ঈদ উদযাপন। শূন্যতা কাটিয়ে উঠছে প্রিয় শহর। ধীরে ধীরে আগের চেহারায় ফিরছে। প্রিয়জন পরিজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আনন্দ নিয়ে নগরজীবনে পুনঃপ্রবেশ করেছে তারা। এখন সতেজ ফুরফুরে মন। অনেকেই কাজে যোগ দিয়েছেন। আর যারা বাকি, আজ রবিবার কাজকর্ম শুরু করবেন। আর তাহলে পুরোদমে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠবে ঢাকা। ঈদ-উল-আযহা উদযাপিত হয় ১৩ সেপ্টেম্বর। তার আগে ৮ সেপ্টেম্বর ছিল বৃহস্পতিবার। এদিন অফিস করে রাতে গ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন অনেকেই। শুক্র ও শনিবার তো স্রোত নামে বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। ট্রেনের টিকেটের জন্য ভোর থেকে অপেক্ষা, বাসে পেছনের সিট, লঞ্চের ডেকে গুটিসুটি হয়ে বসে থাকা। তারপর বাড়ি। প্রিয়জনের মুখ দেখা। আবেগে জড়িয়ে ধরা। এ আবেগ এ ভালবাসাবাসি যখন গ্রামে, যানজটের শহর ঢাকা তখন ছিল ফাঁকা। চিরচেনা রাস্তাগুলোকে হঠাৎ করেই আরও বড় আরও প্রশস্ত মনে হয়। গাড়ির সংখ্যা কমে আসে। যাত্রীর সংখ্যা তারও কম। আসন ফাঁকা রেখেই সাঁই সাঁই করে ছুটে চলে গণপরিবহন। অলিগলির রিক্সা বিনা বাধায় ঢুকে পড়ে প্রধান প্রধান সড়কে। না, কেউ বাধা দেয়ার ছিল না। শহরের বড় বড় মার্কেট-শপিংমল ছিল বন্ধ। এমনকি ফুটপাথের বিভিন্ন দোকান ঘিরে যে জটলা, দেখা যায়নি সেগুলোও। সব মিলিয়ে ঢাকাবাসী দারুণ খুশি। গত শুক্রবার চন্দ্রিমা উদ্যানে বেড়াতে আসা সাবিহা, তুলি ও শায়লা তো বলেই ফেললেন, শহরটাকে মাঝে মাঝে জঙ্গল মনে হয়। কাজ না থাকলে ঘর থেকে বের হতে মন চায় না। অথচ ঈদের ছুটিতে একই শহর কত সুন্দর! কী যে উপভোগ্য! আরও অনেকেই শহরটাকে এমন দেখতে চান। কিন্তু চাইলেই তো হবে না। ঈদ শেষ হওয়ার পর থেকেই চিরচেনা রূপে ফিরতে শুরু করেছে ঢাকা। একটু একটু করে নীরবতা ভাঙছে। স্থল, জল ও আকাশপথে ফিরছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। ঈদ ও ঈদের নামে যত ছুটি শেষ হয় শনিবার। এদিন তাই শহরে ফেরার বিশেষ তাড়া ছিল। সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় মানুষ আর মানুষ। সবাই ঈদের ছুটি শেষে ফিরছেন। চট্টগ্রাম থেকে আসা বশির আহমেদ বলেন, আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে গিয়েছিলাম। অনেক ঝক্কি। তবু ঈদে বাড়ি না গেলে হয় না। ওখানে বাবা-মা থাকেন। সবার সঙ্গে মিলিত হওয়া কী যে আনন্দ! নাগরিক ক্লান্তি সত্যি ভুলে গেছি। এখন নতুন করে শুরু করব। করতে তো হবেই। গাবতলী বাস টার্মিনালেও অভিন্ন চিত্র। ছোট-বড় ও মাঝারি মাপের বাস শহরে ঢুকছিল যাত্রীভর্তি হয়ে। কিছুক্ষণ পরপর। ঝালকাঠি থেকে ঈদ শেষে ঢাকায় ফেরা ব্যবসায়ী শিমুল বাশার বলেন, ঈদ মানেই লম্বা ছুটি। তাই অফিস এতদিন বন্ধ রেখেছিলাম। এ কারণে কিছু আর্থিক ক্ষতিও হয়েছে। ঈদে এমন ক্ষতি নিয়ে ভাবেন না বলেও জানান তিনি।
×