ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উবাচ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

উবাচ

মন্ত্রীর কাছে খবর ছিল না স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদের সময় এবার মহাসড়কে যানজটের কোন খবরই পাননি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের! সড়কপথে ঈদের ‘আনন্দযাত্রা’ অনেকের জন্য চরম ভোগান্তিতে পরিণত হলেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তার কাছে যানজটের কোন তথ্য নেই। যদিও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছাড়াও বিভিন্ন সড়কে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত জনদুর্ভোগের যানজট ছিল। ঈদের আগে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঠিক ওই সময়ে দেশের বিভিন্ন সড়কে যানজটের খবর ছিল আলোচিত এক বিষয়। সেই যানজটের কথা জিজ্ঞেস করতেই মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে মহাসড়কে যানজটের কোন তথ্য নেই। তবে যেহেতু কোরবানি উপলক্ষে পশুবাহী গাড়ি মহাসড়কে চলাচল করেছে সেহেতু গাড়িগুলো ধীরগতিতে চলেছে। মন্ত্রী যখন এ কথা বলছিলেন সেই শুক্রবারও সকাল থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পার থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার সড়ক এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতু থেকে মেঘনা- গোমতী সেতু (দাউদকান্দি) পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সমস্যা ছিল প্রকট। অনেক সড়কে যানবাহনের গতি ছিল এমন যে, দুই কিলোমিটা পথ পার হতে সময় লেগেছে দুই ঘণ্টারও বেশি। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতে দুই ঘণ্টা লেগেছে এমন খবরও আসছিল গণমাধ্যমে। শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটেও বিপুলসংখ্যক গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় আটকে থাকার তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া গাড়ি গন্তব্য যাত্রী নামিয়ে যানজটের কারণে সময়মতো রাজধানীতে ফিরতে না পারায় বাস টার্মিনালগুলোতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে যাত্রীদের। এদিকে গাবতলী ও সায়েদাবাদে কিছু পরিবহনে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়েরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল তখন। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে আনন্দ পরিবহনের কাউন্টারে মন্ত্রী নিজেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রমাণ পান। এ সময় মন্ত্রী অভিযুক্ত পরিবহনের রুট পারমিট বাতিলের জন্য বিআরটিএকে নির্দেশ দেন। যাত্রীদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে কোন ত্রুটি যাতে না হয় সরকারকে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নিতে বলেন মন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার কেবল জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় জিয়াউর রহমানের কবরে তার মরদেহ থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেন না মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। জিয়াউর রহমানের কবরে লাশ নেই দাবি করে এবার তা প্রমাণের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেছেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি। ডিএনএ টেস্ট করান। যদি সেখানে জিয়ার দেহ থাকে, তাহলে নাকে খত দিয়ে জাতির কাছে ক্ষমা চাইব।’ গত সপ্তাহে রাজধানীতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমনই এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়ার কবর সরানোর দাবি জানান। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ পবিত্র জায়গা। এখানে কী আছে কে জানে। আমি বলছি, এখানে জিয়াউর রহমানের দেহ নেই। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই, ডিএনএ টেস্ট করান। যদি সেখানে জিয়ার দেহ থাকে তাহলে নাকে খত দিয়ে জাতির কাছে ক্ষমা চাইব। ওই এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর দাবি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদের নকশা ভেঙ্গে সেখানে তার কবর হয়েছে। এ বিষয়ে স্পীকারকে আগেও চিঠি দিয়েছি। আবারও লিখেছি। লুই আই কানের নকশা ভঙ্গ করে সেখানে জিয়ার কবর বসানো হয়েছে। ধানম-ির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এ সভার আয়োজন করে। মন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের নামে শহীদ জিয়া শিশুপার্কটি থাকবে না। বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দেয়ার চক্রান্ত হিসেবে সেখানে শিশুপার্ক করা হয়েছে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকেন্দ্র হবে। প্রধানমন্ত্রী অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানেরা এ দেশে প্রথম শ্রেণীর নাগরিক হতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা হবে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। তারা কখনও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ চেয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, আদালত থেকে কী রায় আসবে না আসবে সেটার জন্য আমরা বসে থাকব নাকি? আদালতের পারমিশন নিয়ে কি আমরা দেশ চালাব? মুক্তিযুদ্ধের সময় কি আমরা আদালতের পারমিশন নিয়েছিলাম? জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা না করা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা সাবেক বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, পান্না কায়সার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির। হুমকি চলছেই! স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারকে হুমকি দিয়েই যাচ্ছেন সাবেক বিরোধী দল বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুমকি দিয়েছেন, জিয়ার পদক কেড়ে নেয়ার পরে এবার তার কবর সরানোর যে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে তার জন্য সরকারকে একদিন চরম মূল্য দিতে হবে। বিএনপি নেতা অবশ্য সরকারের সিদ্ধান্ত প্রকারান্তরে মেনে নিয়েই আবার বলেছেন, জিয়াউর রহমানের পদক ও মাজার সরিয়ে ছোট করা যাবে না। তিনি ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়ে আছেন। বরং সরকারই আরও ছোট হবে। জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক বাতিলের প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়ার পদক কেড়ে নেয়ার পরে সরকার এখন তার কবর সরানোর যে ষড়যন্ত্র করছে তা আহাম্মকের পরিচয়। কারণ সরকার জিয়ার স্বাধীনতার পদক কেড়ে নেয়নি বরং সমগ্র জাতির স্বাধীনতা পদক কেড়ে নিয়েছে। বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমান সরকার স্বাধীনতার ‘ঘোষক’ জিয়াউর রহমানকে খলনায়ক হিসেবে দেশবাসীর কাছে পরিচিত করাতে চাচ্ছে। কারণ জিয়ার স্থান এদেশের মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জিয়ার নাম এক এবং অভিন্ন। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, জাদুঘর থেকে সরকার জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক সরিয়ে নিয়েছে। এক মন্ত্রী মাজার সরিয়ে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। আমরা ভোটারবিহীন সরকারের এসব কমর্কা-ের নিন্দা জানাই। জিয়াউর রহমানের পদক ও মাজার সরিয়ে ছোট করা যাবে না। তিনি ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়ে আছেন। কোন কর্মসূচী দেয়া হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা সরাসরি কোন উত্তর দিতে পারেননি। বলেন, গণবিরোধী সরকার দমন পীড়নের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করছে। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করব। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নূরী আরা সাফা, নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমীন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।
×