ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনায় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ

বিএনপি জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষক আর খালেদা প্রশ্রয়দাতা

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিএনপি জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষক আর খালেদা প্রশ্রয়দাতা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, বিএনপিই হচ্ছে জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষক আর খালেদা জিয়া হচ্ছেন আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা। আর সে কারণেই জঙ্গীদের নিয়ে তার এত মায়াকান্না। যারা জঙ্গীবাদকে সমর্থন করেছে, তাদের জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কেননা জঙ্গীবাদ থাকলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়িত হবে না। তাই নিড়ানি দিয়ে যেমন বাগানের আগাছা পরিষ্কার করা হয়, ঠিক তেমনিভাবে দেশ থেকে জঙ্গীদের চিরদিনের জন্য বিতাড়িত করতে হবে। শনিবার রাজধানীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ আয়োজিত ‘জঙ্গী-সন্ত্রাস দমনে প্রয়োজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ‘সংবিধান লঙ্ঘনের ব্যাপারে মহামান্য আদালত যে কথা বলেছে.. আমি জেনেশুনে সংবিধান লঙ্ঘন করতে পারি না, করি নাই। কারণ এই সংবিধান মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে লেখা সংবিধান, যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা করে গেছেন। আমি বলতে চাই, সংবিধান লঙ্ঘন করেছি, সেটা পাকিস্তানের সংবিধান। যে সংবিধান আমি লাথি মেরে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে চাই। তিনি বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানকে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ারা ৩০ বছর পদদলিত করেছিল। আমরা এই সংবিধানকে সমুন্নত রেখেছি, রক্ষা করেছি। যে কোন মূল্যে সংবিধানকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করে যাব। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের কবরসহ স্থপতি লুই আই কানের নক্সাবহির্ভূত কবরগুলো সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, নিড়ানি দিয়ে যেমন বাগানের আগাছা পারিষ্কার করা হয় ঠিক তেমনিভাবে দেশ থেকে জঙ্গীদের চিরদিনের জন্য বিতাড়িত করতে হবে। জঙ্গীবাদ থাকলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন হবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে দেশ থেকে জঙ্গীদের উচ্ছেদ করা হবে। বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন হোসনে আরা বেগম বাবলী এমপি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত কাদির গামা, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহীদুল হারুন, এম এ করিম, অরুন সরকার রানা, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেন প্রমুখ। জঙ্গী নিয়ে অর্বাচিনের মতো কথা বলছেন খালেদা জিয়া- নানক ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া জঙ্গী অভিযান নিয়ে অর্বাচিনের মতো কথা বলেছেন। বিএনপি নেত্রী বিতর্কিত কথাবার্তার মাধ্যমে দেশপ্রেমিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। শনিবার মোহাম্মদপুরে লালমাটিয়া মহিলা কলেজ ও রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ আয়োজিত পৃথক জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও বাংলাদেশের জঙ্গীবিরোধীসহ সরকারের চলমান কর্মসূচীসমূহে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতে কোন শিক্ষার্থী জঙ্গী বা সন্ত্রাসী না হয় সেজন্য শিক্ষক, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সদা সজাগ থাকতে হবে। আলোচনা সভা দু’টোতে সভাপতিত্ব করেন যথাক্রমে অধ্যক্ষ মোঃ রফিকুল ইসলাম ও অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুল হান্নান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মনিরুল ইসলাম এমপি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, উপ-পুলিশ কমিশনার বিল্পব কুমার সরকার, সাংবাদিক আনিসুল হক, কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান প্রমুখ। বিএনপি জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষকÑ ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের মানুষের কাছে এখন দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে বিএনপি জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষক। আর বিএনপি নেত্রী জঙ্গীদের আশ্রয় দিয়েছেন। জঙ্গীদের জন্য তিনি মায়াকান্না দেখান। জঙ্গীদের পাশে বসিয়ে তিনি মিটিং করেন। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ আয়োজিত জঙ্গীবাদবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি আরও বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলতে চেয়েছিলেন বিএনপি দেশকে আফগানিস্তান, সিরিয়ার মতো বানাতে চায়; কিন্তু মুখ ফসকে আওয়ামী লীগের নাম চলে এসেছে। তিনি বলেন, দেশ যখন অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, তখন দেশকে অকার্যকর করার জন্য দেশী ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। গুপ্তহত্যা, জঙ্গী হামলা এ ষড়যন্ত্রেরই অংশ। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আসাদুজ্জামান দুর্জয়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, এম এ করিম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা, সংগঠনের মহানগর উত্তরের সভাপতি মনির হোসেন প্রমুখ। জঙ্গী সমর্থনকারীদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবেÑ খাদ্যমন্ত্রী ॥ খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, যারা জঙ্গীবাদকে সমর্থন করেছে, তাদের জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। শনিবার রাজধানীর নবকুমার ইনস্টিটিউশন ও ডক্টর শহীদুল্লাহ কলেজে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে যারা ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল, তাদের সমর্থনেই দেশে জঙ্গী তৎপরতা হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, যারা জঙ্গীদের সমর্থন দেয়, জঙ্গীদের পক্ষে কথা বলে, জঙ্গীদের উস্কানি দেয়, অর্থের যোগান দেয়- সেই রাজনৈতিক দলের নেত্রী খালেদা জিয়া এবং ফখরুল ইসলাম আলমগীরদের আইনের আওতায় আনার সময় এসে গেছে। বেগম জিয়া এবং ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য। এদের যতক্ষণ পর্যন্ত বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত দেশে জঙ্গীবাদ নির্মূল হবে না। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, লালবাগ জোনের পুলিশের এডিসি কামাল হোসেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম র‌্যাডো, ইউনুস সুমন, গোলাম মোস্তফা, নিরাজউদ্দিন বাদল, কাউন্সিলর ওমর বীন আবদুল আজিজ প্রমুখ।
×