ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুকান্তর তৃতীয় আবৃত্তি এ্যালবাম ‘ছিন্নপত্র’

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ১১ আগস্ট ২০১৬

সুকান্তর তৃতীয় আবৃত্তি এ্যালবাম ‘ছিন্নপত্র’

সাজু আহমেদ ॥ সিলেটের উদীয়মান সংস্কৃতি কর্মী, বাচিক শিল্পী সুকান্ত গুপ্ত। বাচিকশিল্পের অন্যতম নন্দিত এই কর্মীর ইতোমধ্যে দু’দুটি এ্যালবাম বেরিয়েছে। এ্যালবামের কবিতা আবৃত্তি শ্রোতামহলে যথারীতি প্রশংসিত হয়েছে। সম্প্রতি এই শিল্পীর তৃতীয় আবৃত্তি এ্যালবাম ‘ছিন্নপত্র’ বাজারে এসেছে। শিল্পী জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠি সমগ্র থেকে নির্বাচিত কিছু চিঠি বাণীবদ্ধ রূপে তিনি তার তৃতীয় এ্যালবাম ‘ছিন্নপত্র’ সাজিয়েছেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ বার্ষিকী উপলক্ষে সম্প্রতি কান্ট্রিমিউজিকের পরিবেশনায় দেশব্যাপী প্রকাশ হয়েছে এ্যালবাম ‘ছিন্নপত্র’। বিশেষ করে রং বাংলাদেশ ও দেশীদশ এ পাওয়া যাচ্ছে ‘ছিন্নপত্র’ এ্যালবামটি। ইতোমধ্যে এ্যালবামটি নিয়ে যথেষ্ট সাড়া পেয়েছেন তিনি। শিল্পী সুকান্ত গুপ্তর জন্ম ১৯৮৪ সালে সিলেটে। প্রকৃতির আবহে বেড়ে ওঠা সুকান্তের শৈশব-কৈশর কেটেছে সিলেট শহরে। আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে নিজেকে একটু একটু করে তৈরি করেছেন, সংগঠিত করেছেন। বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্রসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে আবৃত্তি, সংবাদপাঠ ও উপস্থাপনা নিয়ে কাজ করছেন। সুকান্ত বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সদস্য সংগঠন শ্রুতি সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। আবৃত্তিকে গণমানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে কাজ করছেন। তার বাবা সন্তোষ কুমার গুপ্ত পেশায় আইনজীবী ছিলেন, মা মৃদুলা গুপ্ত চাকরি করেছেন সোনালী ব্যাংকে। আবৃত্তি শিল্পের তরুণ এ তুর্কি রবীন্দ্রনাথের অন্যতম ভক্ত। রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে তিনি বলেন রবীন্দ্রনাথকে দেখলে বোঝা যায় সাধারণ মানুষের বোধ ও চেতনার স্তর কতদূর উন্নীত করা সম্ভব। আমরা রবীন্দ্রনাথ সমুদ্রে সর্বদাই হারিয়ে যাই। আমাদের শত ব্যর্থতা গ্লানি আর আশ্রয়হীনের আশ্রয় রবীন্দ্রনাথ। সব ভালবাসার প্রকাশ তারই মধ্যে। যে-মানুষ কবিতা ও গান লেখেন একাধারে নাট্যকার ও অভিনেতা, গানে নিজে সুরারোপ করে নিজেই গান, এমন খ্যাপা বাউলের পক্ষে ইন্দ্রিনির্ভরতা আবশ্যিক শর্ত হয়ে দেখা দেয়ার কথা এবং তা হলে মানতেই হয় রবীন্দ্রনাথেরও ইন্দ্রিয়ের ধারণক্ষমতা গ্যোয়টে বা তলস্তোয়ের মাপেরই ছিল। অথচ তার জীবনযাপনের যে শুদ্ধতার আভা ছড়িয়ে থাকে সেখানে মৃত্তিকাসম্পৃক্তি নেই, কেবলই দেখা যায় ফুলের ফুটে থাকা ও কুসুমসৌরভ। তীব্র আবেগের প্রকাশও তার ক্ষেত্রে কুণ্ঠিত, গোপনচারী হয়ে ওঠে। রবীন্দ্রনাথের যাত্রা ব্যক্তি থেকে শিল্পীর দিকে, এভাবেই চিরন্তন রবীন্দ্রনাথ। ছিন্নপত্র প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১২ সালে, ১৩১৯ বঙ্গাব্দে। ছিন্নপত্রে ১৫১টি চিঠি সংকলিত হয়। এর ভেতরে ১৪৩টি চিঠিই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লেখেছেন তার ভাইঝি ইন্দিরাকে। মেজো ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা ছিলেন ইন্দিরা। বারো বৎসরের বয়োঃকনিষ্ঠা এই ভ্রাতুষ্পুত্রী তার বিশেষ প্রিয় ছিল। কবির প্রথম বিলেত বাসের সময় (১৮৭৮-১৮৮০) ইন্দিরা দেবী ছিলেন পাঁচ বছরের কন্যা। ইন্দিরাদেবী তার কাকার লেখা চিঠিগুলো একটি খাতায় সংরক্ষণ করে রাখতেন। খাতায় সংরক্ষিত মোট ২৫২ চিঠি একত্র করে কবির মৃত্যুর পর অনেক বছর পর ১৯৬০ সালে ছিন্নপত্রাবলীনামে গ্রন্থ প্রকাশ করে বিশ্বভারতীর গ্রন্থ বিভাগ। এই চিঠিগুলোর মধ্য থেকেই বাছাই করে তিনি তার এ্যালবাম সাজিয়েছেন।
×