ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীমূলক ইংরেজী গ্রন্থের প্রকাশনা

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৭ আগস্ট ২০১৬

বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীমূলক ইংরেজী গ্রন্থের প্রকাশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পয়লা আগস্ট থেকে শাহবাগের পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে চলছে বঙ্গবন্ধুবিষয়ক বাংলা ও ইংরেজী গ্রন্থের প্রদর্শনী এবং জাতির পিতাকে নিবেদিত মাসব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ আয়োজনের অংশ হিসেবে শনিবার প্রকাশিত হলো বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আত্মজীবনীমূলক একটি ইংরেজী গ্রন্থ। বইটি লিখেছেন বঙ্গবন্ধুর সানিধ্যপ্রাপ্ত প্রাবন্ধিক সৈয়দ বদরুল আহসান। একেবারে কিশোর বয়সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন এই লেখক। সেই সুবাদে তার ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক জীবনের নানা বিষয় নিয়ে লিখেছেন ‘ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ফ্রম রেবেল টু ফাউন্ডিং ফাদার’ বইটি। দিল্লীর নিয়োগি প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছে গ্রন্থটি। বাংলাদেশে বইটির পরিবেশক পাঠক সমাবেশ। শনিবার বিকেলে পাঠক সমাবেশে বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমি বইটি যতটুকু পড়েছি তাতে বইটি আমার কাছে সুখপাঠ্য মনে হয়েছে। এতটুকু বইয়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আত্মজীবনী উপস্থাপন করাটাও কৃতিত্বের বিষয়। প্রতিটি লাইন ও প্রতিটি অনুচ্ছেদ খুব সাবধানে পড়তে হয়। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মহামানব বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনকে আমি এক কথায় বলব এক এপিক জার্নি। গবেষণামূলক এই গ্রন্থে হয়ত তার সবটুকু প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। কারণ, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন বহুমাত্রিক, ঘটনাবহুল ও ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ। ইংরেজী ভাষায় গ্রন্থ প্রকাশের ফলে ইংরেজী ভাষাভাষী তরুণরা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে আরও ভালভাবে জানতে ও বুঝতে পারবে। দেশ-বিদেশে প্রচুর মানুষ এখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জানতে চায়। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গল্প, কবিতা তো কম লেখা হয়নি। তবে রাজনৈতিক আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ বলতে আমি বদরুল আহসানের বইটির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করব। লেখক অল্প পরিসরে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। ২৮০ পৃষ্ঠার আত্মজীবনীমূলক বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ১১৯০ টাকা। শান্তির সপক্ষে পালিত হিরোশিমা দিবস ॥ মানব ইতিহাসের কলঙ্কময় এক দিন ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট। পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল জাপানের হিরোশিমা শহর। পারমাণবিক বিকিরণে বিভীষিকায় লক্ষ মানুষের সঙ্গে প্রাণ হারায় কিশোরী সাদাকো সাসাকি। সেই কিশোরীকে স্মরণ করে কাগজ কেটে সাদা সারস বানিয়ে বিশ্বব্যাপী কিশোর-কিশোরীরা শান্তির সপক্ষে পালন করে হিরোশিমা দিবস। শনিবার রাজধানীতে শান্তির প্রত্যাশায় দিবসটি পালন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। কিশোর-কিশোরীরা শান্তির প্রতীক সাদা সারস বানিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করে সাদাকোসহ হিরোশিমা দিবসে সকল শহীদকে। সেই সঙ্গে ছিল কবিতা ও গানের সুর। বিকেলে হিরোশিমা দিবস উপলক্ষে ‘শান্তির সপক্ষে নতুন প্রজন্ম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। কাব্যিক উচ্চারণে শুরু হয় আয়োজন। গুলশানে জঙ্গী হামলায় নিহত ইতালির গর্ভধারিণী তরুণী সিমোনা মনটির গর্ভের সন্তানকে নিবেদন করে পড়া হয় কবিতা। তারিক সুজাত রচিত কবিতাটি আবৃত্তি করেন বাকশিল্পী তামান্না সারোয়ার নীপা। কবিতাপাঠ শেষে বক্তব্য রাখেন জাদুঘরের ট্রাস্টি কবি স্থপতি রবিউল হুসাইন। উপস্থিত কিশোর-কিশোরীদের উদ্দেশে বলেন, শিল্প-সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়েই সকল অসুন্দরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে হবে। সংস্কৃতিচর্চা করলে কোন অসুন্দর আমাদের কাছে আসতে পারবে না, বরং নিয়ে আসবে শান্তির বারতা। আগামী দিনে এ পৃথিবীকে শান্তির আবাসভূমি করব-এ আশা নিয়েই পথ চলতে হবে। এর পর তিনি গুলশান হামলায় নিহত তরুণ ফারাজ আইয়াজকে নিবেদন করে একটি কবিতা পাঠ করেন। কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ আবৃত্তি করেন স্বরচিত ‘মা, আলীর জন্য কান্না পাচ্ছে’সহ দুটি কবিতা। কবিতা পাঠ শেষে মঞ্চে আসে সপ্তসুরের খুদে শিল্পীরা। সম্মেলক কণ্ঠে গেয়ে শোনায় ‘নাও গান ভরে, নাও প্রাণ ভরে’ ও ‘ঐ উজ্জ্বল দিন ডাকে’। দীপ্র ও সতীর্থ দ্বৈত কণ্ঠে গেয়ে শোনায় ‘একাত্তরের মা জননী’ এবং ঋব্ধ গেয়ে শোনায় ‘বাংলাদেশ’ শিরোনামের গান। ক্যালিক্স প্রি-ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষার্থীরা গেয়ে শোনায় ‘আমরা করবো জয়’, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’, ‘একদিন ছুটি হবে’ এবং ‘বিদ্যালয় মোদের বিদ্যালয়’। আলিয়ঁসে তামিমের চিত্রপ্রদর্শনী ‘কালি ও রেখা’ ॥ শনিবার আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার গ্যালারি জুমে শুরু হয়েছে শিল্পী জলিলুর রাব্বি তামিমের ‘কালি ও রেখা’ শীর্ষক একক চিত্র প্রদর্শনী। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক শিশির ভট্টাচার্য ও শিল্প সমালোচক মইনুদ্দিন খালেদ। সভাপতিত্ব করেন আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার পরিচালক ব্রুনো প্লাস। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ছবিগুলোতে শিল্পী জলিলুর রাব্বি তামিম অংকনের প্রাচীন প্রক্রিয়া নতুনভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে সচিত্র মডেলদের চিত্রকর্ম করেছেন। এই প্রদর্শনীর চিত্রকর্মগুলো ফ্রান্সের বিখ্যাত আঁতলিয়ে ’আকাদেমি দো লা ঘন্দ শোমিয়ের’-এ বসে আঁকা। এটি তামিমের চতুর্থ একক প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে প্রায় ৪০ টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে । বিভিন্ন প্রকার কালি ও বাঁশের কলম ব্যবহার করা হয়েছে চিত্রকর্মগুলোতে। ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সোমবার থেকে বৃহ¯পতিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্রবার ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। শাস্ত্রীয় ও গৌড়ীয় নৃত্যবিষয়ক সেমিনার ও কর্মশালা ॥ প্রাচীন বাংলার শাস্ত্রীয় নৃত্য, গৌড়ীয় নৃত্য বাংলাদেশেরই নৃত্য। বিশ্বের সংস্কৃতি অঙ্গনে এই সংস্কৃতিকে তুলে ধরার লক্ষ্যেই শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় শনিবার থেকে ছয় দিনের বাংলার শাস্ত্রীয় নৃত্য ও গৌড়ীয় নৃত্যবিষয়ক সেমিনার ও কর্মশালা শুরু হয়েছে। এটি পরিচালনা করছেন ভারতের গৌড়ীয় নৃত্য গবেষক নৃত্যগুরু অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে এবং মহুয়া মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ও শামীম আরা নীপার সঞ্চালনায় সেমিনারে অংশ নেন রাহিজা খানম ঝুনু, আমানুল হক, গোলাম মোস্তফা খান, শুক্লা সরকার, সোমা মমতাজ, দীপা খন্দকার, ফারহানা চৌধুরী বেবী, ওয়ার্দা রিহাব প্রমুখ। সেমিনারের মহুয়া মুখোপাধ্যায় বলেন, গৌড়ীয় নৃত্য বিষয়ে অনেকেরই স্বচ্ছ ধারণা নেই। এটি বাংলা সংস্কৃতির নিজস্ব একটি শিল্প হয়েও বিভিন্ন কারণে প্রতিষ্ঠা পায়নি। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এর চর্চা ও পৃষ্ঠপোষকতায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ১২ আগস্ট পর্যন্ত চলমান কর্মশালায় অংশ নিচ্ছে ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রশিক্ষণার্থীবৃন্দ। সেমিনার ও কর্মশালায় সঙ্গীতাংশে সহযোগিতা করছেন ভারতের গৌড়ীয় সঙ্গীত গবেষক অমিতাভ মুখোপাধ্যায়।
×