ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তরুণরাই ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার ॥ মুহিত

প্রকাশিত: ০৭:৪৫, ৩০ জুলাই ২০১৬

তরুণরাই ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার ॥ মুহিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, তরুণরাই ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার। আজ আইসিটি খাতের যে অগ্রগতি ও সাফল্য, তা মূলত তরুণদের জন্যই। তিনি বলেন, ১০-১৫ বছর আগে প্রশাসনে কম্পিউটারের ব্যবহারই অনেক কঠিন ছিল। এখন তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন ও মনিটরিং করা যাচ্ছে। সরকার আইসিটি খাতের অগ্রগতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবে রূপ দেয়াই সরকারের লক্ষ্য। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিপিও সামিট-২০১৫’ (বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং)-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো এ সামিট হলো। সরকারের আইসিটি বিভাগ এবং বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার এ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) যৌথভাবে এটি আয়োজন করে। দুদিনের এই সম্মেলনে দশটি সেমিনার ও দুটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে ৮০ দেশী-বিদেশী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আলোচনায় অংশ নেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, আইসিটি ও বিপিও খাতের উন্নয়নে সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ও সুপারিশ সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে আটটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে দেশের আইসিটি ও বিপিও খাতে অবদান রাখায় বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বার, আইসিটি অধিফতরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক ও এ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার বাংলাদেশের (বাক্য) সভাপতি আহমাদুল হক। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বপ্নহীন বা লক্ষ্যহীন জাতি কোনদিন ভাল করতে পারে না। আমাদের তরুণদের স্বপ্ন আছে, লক্ষ্য আছে। আমাদের অগ্রগতি কেউ রুখতে পারবে না। সরকার আইসিটি খাতে তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলছে। এর সুফল তারা পাবে, আর এর মাধ্যমে দেশও এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করা হয়েছিল তখন আমাদের খুব বেশি ধারণা ছিল না। সেখানে বলা হয়েছিল, তরুণরাই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বাস্তবায়নের দিকে এবং বিকাশ ঘটাবে। আজ সেটিই হয়েছে। জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, তরুণদের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আরও বেশি আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে। প্রতিবছর আড়াই লাখ তরুণ পড়ালেখা শেষ করে কর্মের বাজারে প্রবেশ করছে। তাই চাকরি প্রত্যাশীদের আইসিটি প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিপিও ব্যবসার অগ্রগতি সন্তোষজনক, যার বর্তমান বাজার মূল্য ১৮০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু আমাদের পাশের দেশ ভারত বিপিও খাতে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছে। আমাদেরও এ খাতে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণ ও বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে এই খাত হতে ১ বিলিয়ন ডলার আয় করা এবং ১ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই আমাদেরই লক্ষ্য। মোস্তফা জব্বার বলেন, বিপিও খাতের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া দরকার। পুরো আইসিটি শিল্পকে গাছ হিসেবে ধরলে এর শিকড় হচ্ছে তরুণরা আর কা- হচ্ছে সফটওয়্যার, আইটি এবং ডালপালা হচ্ছে বিপিও। তথ্য-প্রযুক্তি এই খাতের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। এর মাধ্যমে আউটসোর্সিং করে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, আগ্রহী যে কেউ যেকোন স্থান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এ কাজ করতে পারেন। বিদেশী প্রযুক্তিবিদদের মতে- বাংলাদেশ সোনার খনি। আমিও মনে করি, আমরা সোনার খনিতে বসবাস করছি। একে কাজে লাগাতে হবে।
×