ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোরবানির আগেই মসলার বাজার উত্তপ্ত

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ২৪ জুলাই ২০১৬

কোরবানির আগেই মসলার বাজার উত্তপ্ত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রতিদিনের রান্নায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে মরিচ, জিরা, এলাচসহ বিভিন্ন মসলা জাতীয় পণ্যের ব্যবহার হয়। তাই বছরজুড়ে এসব পণ্যের বাজার জমজমাট থাকে। প্রতিবছর কোরবানি ঈদকে ঘিরে এসব মসলা জাতীয় পণ্যের বাজার উত্তপ্ত হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কোরবানি ঈদের আরও প্রায় দুই মাস বাকি থাকতেই এবার মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মসলা জাতীয় প্রায় সব পণ্যের দাম ১০ টাকা থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চাহিদা স্বাভাবিক থাকলেও বাজারে মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বাড়ায় সরবরাহ সঙ্কটের কথা জানালেন মসলা ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, আমদানি কমে যাওয়ায় বাজারে মসলা জাতীয় পণ্যের সরবরাহ কমেছে; ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে। কিন্তু ভোক্তারা বলছেন, কোরবানি ঈদ আসন্ন; তাই এর আগেই মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বাড়াতে শুরু করেছে বিক্রেতা সিন্ডিকেট। চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ মসলার বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারিতে মানভেদে প্রতি কেজি এলাচ ৭৮০ টাকা থেকে ৮২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; যা গত সপ্তাহে ছিল ৭৭০-৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছিল। এর মধ্যে গুয়েতমালা অঞ্চলের সাধারণ এলাচের দাম ৭৯০-৮০০ টাকা থেকে বেড়েছে ৮২০-৮২৫ টাকায়; ভারতীয় এলাচের দাম ৭৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৭৮০ টাকায় এবং গুয়েতেমালা অঞ্চলের উন্নতমানের এলাচ ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ভারতীয় মরিচ কেজি প্রতি ১৭০-১৭৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন তা ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশী মরিচের দাম ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সমাপ্ত সপ্তাহে ১১০ টাকা দরে বিদেশী হলুদ বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশী হলুদের দাম ৮ টাকা করে বেড়ে ১২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে চীন থেকে আমদানি করা রসুনের দাম কেজি প্রতি ১২ টাকা করে বেড়ে ১৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে দেশী রসুন। খাতুনগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমাপ্ত সপ্তাহে ৩০০-৩২৫ টাকার মধ্যে জিরা বিক্রি হলেও আজকের বাজারে এই পণ্যটির দাম রাখা হচ্ছে ৩১৫-৩৪৫ টাকা। সিরিয়া থেকে আমদানি করা জিরার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৩৪০-৩৪৫ টাকায়; ভারতীয় জিরার দাম ১০ টাকা বেড়ে ৩২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রমজানের মাঝামাঝিতে মানভেদে ভারতীয় জিরা ২৬৫-২৯৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। অন্যদিকে পেঁয়াজের দামও প্রতি কেজিতে ৩ টাকা করে বেড়ে ১৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খাতুনগঞ্জের মেসার্স ইসমাইল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোঃ সেকান্দার বলেন, ঈদ-উল-ফিতরের পর আন্তর্জাতিক বাজারে মসলার দাম কিছুটা কমেছে। এসব পণ্যের দাম আরও কমার আশায় আমদানি কমিয়ে দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বাজারে এখন মসলা জাতীয় পণ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। চাহিদা স্বাভাবিক থাকলেও সব ধরনের মসলার দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। পাইকারি মসলা ব্যবসায়ী হারুন মোল্লা বলেন, গত এক বছর মসলা জাতীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল ছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণেই দেশের বাজারে মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। এসব পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে।
×