ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইইউ ত্যাগ হবে বড় ভুল

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২০ জুন ২০১৬

ইইউ ত্যাগ হবে বড় ভুল

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গণভোটে যুক্তরাজ্য অস্তিত্বের লড়াইয়ের সম্মুখীন এবং এর থেকে ফিরে যাওয়ার কোন উপায় নেই। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন একথা বলেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের গণভোটে ইইউ ত্যাগের সিদ্ধান্ত হবে একটি বড় ভুল এবং এটি দেশকে এক দশকের জন্য দুর্বল অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাবে। তবে ইইউ ছাড়ার পক্ষের সমর্থক কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য ও এমপি মিশেল এ্যান্ড্রু গোভ সানডে টেলিগ্রাফকে বলেছেন, ইইউ ত্যাগের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য প্রগতিশীল পথনির্দেশিকায় পরিণত হবে। খবর এএফপি, বিবিসি ও টেলিগ্রাফের। এদিকে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও সাবেক দুই উপপ্রধানমন্ত্রী লর্ড হেসেলটাইন ও নিক ক্লেগ ভোটারদের বিভক্তি, একাকীত্ব ও সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে ব্রিটেনের ইইউতে থাকার পক্ষে বৃহস্পতিবার ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। লেবার এমপি জো কক্সের মৃত্যুর পর তারা বলেছেন, দেশ এখন উদ্বেগজনক সময় পার করছে। তাই এমন পরিস্থিতিতে বিভাজন সৃষ্টি না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও একত্রে কাজ করতে হবে। তবে ইইউ ত্যাগের পক্ষে প্রচার শিবির ‘লিভ ক্যাম্পেইন’ গণতন্ত্রের জন্য ভোট দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কক্সের প্রতি সম্মান জানিয়ে ‘রিমেইন (থাকা)’ ও ‘লিভ’(ত্যাগ) শিবির তিনদিন তাদের প্রচার বন্ধ রাখার পর রবিবার থেকে পুনরায় শুরু করেছে। ক্যামেরন বলেছেন, বৃহস্পতিবারের ভোট চূড়ান্ত গণতন্ত্রের এবং কক্স কি নিয়ে কাজ করছিলেন তার প্রতিনিধিত্ব করবে। গণভোট অনুষ্ঠানের মাত্র কয়েকদিন আগে সানডে টেলিগ্রাফে লেখা এক নিবন্ধে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা কেমন দেশ চাই, সে বিষয়ে একটি প্রশ্ন হলো এই গণভোট। তিনি এই ভোটকে ব্রিটেনের জন্য একটি সন্ধিক্ষণ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, আমরা নাইজেল ফারাগের দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে যাচ্ছি- এক, যা আমাদের দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাবে, একতার বদলে বিভক্তি সৃষ্টি করবে এবং কারও ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দেখলেই প্রশ্ন তুলবে। অথবা এর পরিবর্তে আমরা সহনশীল, উদারপন্থী ব্রিটেনকে পছন্দ করব। এমন একটি দেশ যেটি নিজের সমস্যার জন্য অন্যদের দোষারোপ করবে না, অতীতের জন্য অনুশোচনা না করে প্রত্যাশা, আশাবাদ ও আত্মবিশ্বাসী ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে। ক্যামেরন আরও লিখেছেন, দেশের অর্থনীতি বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি যেভাবে ভারসাম্য রক্ষা করছে, ত্যাগের পক্ষে ভোট দেয়ার ফলে তা নষ্ট হয়ে যাবে এবং একটি সম্ভাব্য মন্দা ব্রিটেনকে স্থায়ীভাবে দরিদ্র করে তুলবে। তিনি যুক্তি দেখান যে, ব্রিটেনে ইইউ ত্যাগের ঘটনা একবারই হবে এবং বিশ্বে ব্রিটেনের মর্যাদা কমে যাবে এবং এটি হবে শোচনীয় এবং স্বআরোপিত লাঞ্ছনা। ক্যামেরন সানডে এক্সপ্রেসে লেখা অপর এক নিবন্ধে বলেছেন, শরণার্থীদের নিয়ে উদ্বেগ তিনি বুঝতে পারছেন এবং এই ইস্যু মোকাবেলায় ইইউ ত্যাগ হবে একটি ভুল পন্থা। অপরদিকে ‘লিভ’ সমর্থক গোভ সানডে টেলিগ্রাফকে দেয়া সাক্ষাতকারে ভবিষ্যত ব্রিটেন সম্পূর্ণভাবে নির্বাচিত এমপিদের দ্বারা পরিচালনার বিষয়ে আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জনগণ গণতন্ত্রের জন্য ভোট দেবে আর ব্রিটেন আশার জন্য ভোট দেবে। ইইউ ত্যাগের ফলে ব্রিটেন মন্দার কবলে পড়তে পারে বলে এমন ধারণা প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেছেন, আমরা ইইউ ত্যাগ করলেও অর্থনৈতিক ঝুঁকি থাকবে এবং ইইউতে থাকলেও অর্থনৈতিক ঝুঁকি বাড়বে।
×