ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুই ব্রিটিশ এমপির কাছে হস্তান্তর

আসাদের ‘হত্যার তালিকায়’ আট শতাধিক বিদেশী আইএস জঙ্গী

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ১৩ জুন ২০১৬

আসাদের ‘হত্যার তালিকায়’ আট শতাধিক বিদেশী আইএস জঙ্গী

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ২৫ ব্রিটিশসহ বিদেশী বংশোদ্ভূত কয়েক শ’ ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গীদের একটি ‘হত্যা তালিকা’ তৈরি করেছেন। ব্রিটিশ দৈনিক সানডে টেলিগ্রাফ এ তথ্য প্রকাশ করেছে। ব্রিটিশ আইএস জঙ্গীদের বিস্তারিত বিবরণসহ একটি ডিভিও হাতে পেয়েছে সংবাদপত্রটি। ডিভিওটি দুই ব্রিটিশ কনজারভেটিভ এমপিকে দিয়েছিলেন আসাদ। তারা চলতি বছরের এপ্রিলে আসাদের আমন্ত্রণে দামেস্ক সফর করে। খবর টেলিগ্রাফের। তালিকায় ৮৫০ বিদেশী জঙ্গী নাম রয়েছে। তালিকায় থাকা ২৫ ব্রিটিশ জঙ্গীর বিরুদ্ধে আইএসে যোগ দেয়ার অভিযোগ করেছে আসাদ বাহিনী। এদের মধ্যে ১৪ জন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছে। এখনও জীবিত আছে ১১ জনের বেশি জিহাদি। এদের মধ্যে রয়েছে খাদিজা দারসহ পাঁচ নারী। খাদিজাই প্রথম পশ্চিমা নারী বিদেশী জঙ্গী হিসেবে আইএসে যোগ দিয়েছে বলে আসাদ অভিযোগ করেছেন। কার্ডিফের দুই ভাই ও জিহাদি জনসহ পোর্টসমাউথের তরুণদের একটি গ্রুপও এই তালিকায় রয়েছে। ব্রিটেনের সাবেক ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র ডেভিড ডেভিস ও তার কনজারভেটিভ পার্টির সহকর্মী এ্যাডাম হলওয়েকে প্রচারমূলক ডিভিওসহ এই হত্যা তালিকাটি দেয়া হয়। তালিকাটি আরবিতে লেখা হলেও ভিডিওতে ইংরেজীতে ধারা বর্ণনা করা হয়েছে। ভিডিওর শুরুতে বলা হয়েছে, এই ভিডিওটি ওইসব অপরাধীদের একটি নমুনা যারা সিরীয় জনগণের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ঘৃণ্য অপরাধ করছে। ওইসব হাজার হাজার বিদেশী খুনীদের বিষয়ে ব্যক্তিগত আর্কাইভ থেকে এই নমুনা তালিকা তৈরি করেছে সিরীয় সরকার। এছাড়া আসাদ সরকার বিদ্বেষ ছড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত ধর্মীয় নেতা ওমর বাকরি মোহাম্মদের বিরুদ্ধে তরুণ ব্রিটিশদের চরমপন্থী করে তোলা এবং সিরিয়া গিয়ে তাদের যুদ্ধ করতে উৎসাহিত করার অভিযোগ এনেছে। ওমর বাকরির জন্ম সিরিয়ায় এবং যুক্তরাজ্যে তিনি ইসলামপন্থী বিশাল এক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। তাকে এক দশক আগে ব্রিটেন থেকে লিবিয়ায় বহিষ্কার করা হয়। তিনি বর্তমানে সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িত থাকার দায়ে কারাগারে আছেন। যুক্তরাজ্যের নিজেরও একটি তালিকা রয়েছে এবং আসাদের এই তালিকা প্রকাশের পর ধারণা করা হচ্ছে, দুই দেশ হয় তো তাদের কিছু গোযেন্দা তথ্য বিনিময় করেছে। ব্রিটিশ আইএস জঙ্গীদের ওপর ড্রোন হামলা চালানো অনুমোদন করেছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এদের মধ্যে রয়েছে জিহাদি জন নামে পরিচিত মোহাম্মদ এমওয়াজি গত বছরের নবেম্বরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত হন এবং কার্ডিফের ২১ বছর বয়সী রিয়াদ খান গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ বিমান বাহিনীর হামলায় মারা যান। বাকিংহাম ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সিকিউরিটি এ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স স্টাডিজের পরিচালক এ্যান্টোনি গ্লেন বলেছেন, এই তালিকার প্রকৃত তাৎপর্য হলো যে, এটি দেখাচ্ছে আসাদ তার সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠায় কতটা কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, যখন একই সময়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। এদিকে ব্রিটেনের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো বলেছে, এই তালিকার তথ্যগুলো আপাত দৃষ্টিতে বিশৃঙ্খল এবং হালনাগাদ করা হয়নি। যখন এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে তখন জিহাদি জনের আসল পরিচয় জানা ছিল না এবং আসাদ সরকার তার আসল নাম জানেও না।
×