ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সুপার লীগের বাকি তিন দল কারা?

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৬ জুন ২০১৬

সুপার লীগের বাকি তিন দল কারা?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রাইম দোলেশ্বর, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব সুপার লীগে খেলা দশম রাউন্ডেই নিশ্চিত করে ফেলেছে। বাকি আছে আর তিনটি দলের সুপার লীগে ওঠা। সেই তিন দল কারা? তা নির্ধারণ হবে আজ শুরু হতে যাওয়া ১১তম রাউন্ড শেষেই। আজ বিকেএসপিতে আবাহনী লিমিটেড ও ক্রিকেট কোচিং স্কুল (সিসিএস) মুখোমুখি হবে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কলাবাগান ক্রীড়া চক্র (কেসি) ও কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি (সিএ) লড়াই করবে। আর ফতুল্লায় প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ও প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব পরস্পরের বিপক্ষে লড়বে। বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মোহামেডান-শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব, বিকেএসপিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ-ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও ফতুল্লায় ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব-গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স মুখোমুখি হবে। লীগ পর্বের শেষ এ রাউন্ডে প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে প্রাইম দোলেশ্বর। দলটি ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে। সবার আগে সুপার লীগেও খেলা নিশ্চিত করেছে। এরপর সমান ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে ভিক্টোরিয়া ও রূপগঞ্জ আছে। এ দুটি দলও সুপার লীগে খেলবে। এরপর ১২ পয়েন্ট করে নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে দেশের শীর্ষ দুই ক্লাব যথাক্রমে- মোহামেডান ও আবাহনী। ১০ পয়েন্ট করে নিয়ে চার দল আছে। গাজী গ্রুপ, প্রাইম ব্যাংক, কলাবাগান কেসি ও শেখ জামাল সুপার লীগে ওঠার আশায় আছে। ব্রাদার্স ইউনিয়ন বলতে গেলে বিদায়ই নিয়েছে। এরপরও বিশেষ কোন পারফর্মেন্স ৮ পয়েন্ট পাওয়া দলটিকে সুপার লীগেও নিয়ে যেতে পারে। এজন্য অবশ্য ১০ পয়েন্ট করে পাওয়া প্রতিটি দলকে হারতে হবে। ব্রাদার্সকে জিততে হবে আলোড়িত কিছু ঘটিয়ে। রানরেটও যে দলটির পক্ষে নয়। এমনও হতে পারে, হেরে গেলে রেলিগেশন খেলতে হতে পারে ব্রাদার্সকে। ৪ পয়েন্ট করে পাওয়া সিসিএস ও কলাবাগান সিএ তো রেলিগেশনে খেলবেই। প্রশ্ন এখন একটাইÑ দোলেশ্বর, ভিক্টোরিয়া, রুপগঞ্জের পর তাহলে কোন তিনটি দল সুপার লীগে শেষপর্যন্ত খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে? মোহামেডান ও আবাহনী আছে সুবিধাজনক স্থানে। আবাহনীর প্রতিপক্ষ আজ সিসিএস। যে দলটি দুর্বল। অঘটন না ঘটলে তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, ইউসুফ পাঠান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতদেরই জেতার কথা। সেক্ষেত্রে আরেকটি দল মিলে যাবে। সেই দলটি হবে আবাহনী। যদি কোনভাবে তামিমের দল আবাহনী হেরে যায়, সেক্ষেত্রেও সুপার লীগে ওঠার সম্ভাবনা জোরালোই থাকছে। মোহামেডানেরও তাই। ১২ পয়েন্ট আছে মোহামেডানের ঝুলিতে। জিতলে সুপার লীগে নিশ্চিতভাবেই যাবে মোহামেডান। হারলেও সুযোগ থাকবে। তবে প্রতিপক্ষ দলটি শেখ জামাল আছে বিপাকে। যে করে হোক শেখ জামাল জিততে চাইবে। না হলে যে ১০ পয়েন্ট পাওয়া এ দলটি সুপার লীগে খেলতে পারবে না। আবাহনী ও মোহামেডান ১২ পয়েন্ট পাওয়ায় একটু হলেও স্বস্তিতে আছে। কিন্তু শেখ জামালসহ যে দলগুলো ১০ পয়েন্ট করে পেয়ে আছে, তাদের কপালে রাজ্যের ভাঁজ পড়ে আছে। হারলেই যে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। প্রাইম ব্যাংকের খেলা আজ প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে। বিপদেই আছে প্রাইম ব্যাংক। একই অবস্থায় আছে বুধবার ভিক্টোরিয়ার প্রতিপক্ষ গাজী গ্রুপও। হারলেই বিদায় ঘণ্টা বাজবে। তখন যে রানরেটও কমে যাবে। তবে বুধবার রূপগঞ্জের মুখোমুখি হবে ব্রাদার্স। ম্যাচটিতে ব্রাদার্স যদি বড় ব্যবধানে জিততে পারে, আর ১০ পয়েন্ট পাওয়া দলগুলো হারে; সেক্ষেত্রে ব্রাদার্সের একটা সুযোগ আসলেও আসতে পারে। তবে সবচেয়ে আনন্দে বোধহয় আছে কলাবাগান ক্রীড়া চক্র। দলটি রেলিগেশন এড়িয়ে ফেলবে, শুরুতে তা বোঝাই যায়নি। অথচ সেই কাজটিই করেছে। এমনই অবস্থা হয়েছে, এখন দলটির সামনে সুপার লীগে খেলার আশাও দেখা দিয়েছে। এজন্য অবশ্য জিততেই হবে। মাশরাফির কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের জেতার কথাও। প্রতিপক্ষ দলটি যে দুর্বল কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি। ১১তম রাউন্ডে যে ছয়টি ম্যাচ হবে, এর মধ্যে আবাহনী ও কলাবাগান ক্রীড়া চক্রই খানিক স্বস্তিতে খেলতে নামতে পারবে। দুটি দলের প্রতিপক্ষই যে দুর্বল। ক্রিকেটে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। শক্তিশালী দলও দুর্বল দলের কাছে হেরে যেতে পারে। কিন্তু শক্তিমত্তায় যারা এগিয়ে থাকে, ধারাবাহিকতায় যারা এগিয়ে থাকে; দুর্বল দলের বিপক্ষে তাদের জয়ের পাল্লাই ভারি থাকে। সেক্ষেত্রে আবাহনী ও কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সুপার লীগে খেলার সম্ভাবনাই বেশি দেখা যাচ্ছে। বাকি দলগুলোর সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ের সম্ভাবনাও আছে। সব দলই যে শক্তিশালী। অবশ্য লীগে উপরে ওঠার সিঁড়ি হিসেবে আগে মুখোমুখি অবস্থানই বিবেচনায় আনা হবে। শুরুতে সবচেয়ে বেশি জয় ধরা হবে। মানে পয়েন্ট তালিকায় পয়েন্ট হিসেবে উপরে উঠবে দলগুলো। এরপর ‘হেড টু হেড’ বিবেচনায় আসবে। সর্বশেষ দেখা হবে রানরেট। এমনটিই জানালেন সিসিডিএমের সমন্বয়ক আমিন খান- ‘একাধিক দলের যদি সুপার লীগে ওঠার জন্য পয়েন্ট সমান থাকে, সেক্ষেত্রে আগে ‘হেড টু হেড’ বিবেচনায় আসবে। এরপর রানরেট।’ এ হিসেবে আবাহনী সুবিধাজনক অবস্থানেই আছে। আজ হারলেও সুপার লীগে খেলবে। দলটি যে ১০ পয়েন্ট পাওয়া দলগুলোর মধ্যে শুধু শেখ জামালের কাছে হেরেছে। মোহামেডানের অবস্থাও একই। বুধবার হারলেও সুযোগ থাকবে। দলটি যে বড় দলগুলোর বিপক্ষে জিতেছে। আজ কলাবাগান ক্রীড়া চক্র হারলে বিপদের মধ্যে পড়ে যাবে। দলটি আবার শেখ জামাল ছাড়া ১০ পয়েন্ট করে থাকা অন্য দলগুলোর বিপক্ষে জিততে পারেনি। প্রাইম ব্যাংক হারলেও সুপার লীগে খেলার আশা শেষ হয়ে যেতে পারে। একই অবস্থা গাজী গ্রুপ, শেখ জামালেরও। হারলেই বিদায় ঘণ্টা বাজবে। তবে ব্রাদার্সের ‘হেড টু হেডে’ বিশেষ কোন সুযোগ নেই। জিতলেও বিদায় ঘণ্টা বাজতে পারে। এখন দেখা যাক, শেষপর্যন্ত সুপার লীগের বাকি তিনটি দল কারা হতে পারে?
×