জনগণের ক্ষমতা হরণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি ॥ হানিফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বৈরাচারের গর্ভে জন্ম এবং জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান বলেই ষোড়শ সংবিধান সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা হরণের পক্ষে বিএনপি অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। শনিবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ এ অভিযোগ করেন। ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের দলীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশের জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি নেতারা যা বলছেন, তাদের এটাই বলা স্বাভাবিক। কারণ বিএনপির জন্মই হয়েছে স্বৈরাচারের গর্ভ থেকে। এ দলটি জন্মলগ্ন থেকেই কখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বিএনপি কখনও গণতন্ত্রে জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে না। জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী নয় বলেই এই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা হরণ করা হয়েছে, সেটার পক্ষে তারা অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, এই অবস্থানের মাধ্যমে বিএনপি আবারও প্রমাণ করেছে তারা কখনই জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী নয়। তারা বরাবরই জনগণের বিরুদ্ধে। যারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা যেতে চায় তারা সব সময় জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে- সেটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। এই দেশে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকুক কিংবা বাইরে থাকুক, বার বারই জনগণের ওপর আক্রমণ করেছে। বিএনপি সবসময় জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সেটা আবারও প্রমাণ হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তৃণমূল থেকে প্রস্তাবিত নামটাকেই অগ্রাধিকার দেয়ার চেষ্টা করেছি। এখানে আমরা বিভিন্ন সার্ভে রিপোর্ট দেখেছি। মাঠ পর্যায়ে অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। আমাদের কাছে যে অভিযোগগুলো এসেছে আমরা তাৎক্ষণিকভাবেই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ সময় কয়েকটি ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থিতা বাতিলের উদাহরণ তুলে ধরে হানিফ বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রার্থী বাছাই করা একটা দুরূহ কাজ। তৃণমূল পর্যায় থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের তালিকা থেকে প্রার্থী বাছাই কঠিন কাজ। এই কঠিন কাজটি করেছি তৃণমূল নেতাকর্মীদের সহযোগিতায়। এখানে যদি তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাঠানো তথ্যের মধ্যে কোন গরমিল থাকে সেখানে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। আমরা তারপরও চেষ্টা করেছি, যাচাই-বাছাই করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে। সাড়ে ৫ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ২/৩ জন ভুল প্রার্থী এটা খুবই নগণ্য সংখ্যা। সাম্প্রতিক সময়ের হত্যাকা- প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে হানিফ বলেন, বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য বাংলাদেশে একাত্তরে পরাজিত শক্তিরা বহুবার চেষ্টা করেছে। বহু তৎপরতা চালিয়েছে। জ্বালাও-পোড়াও করে ব্যর্থ হওয়ার পরে বিদেশী নাগরিক হত্যা করেছে। সেখান থেকেও তারা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন গুপ্তহত্যা চালিয়ে সরকারকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এসব গুপ্তহত্যা চালিয়ে সরকারকে যে উৎখাত করা যাবে না সেটা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। কারণ এই সরকারের ভিত হচ্ছে জনগণ। শতকরা ৮০ ভাগ জনগণ বর্তমান সরকারের পক্ষে আছে। সকল ধরনের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার কঠোর অবস্থানে আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন, এস এম কামাল হোসেন, একেএম এনামুল হক শামীম, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।