ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্দোনেশিয়ার অন্ধকার যুগের সত্য উদ্ঘাটনে আশার আলো

দীর্ঘ নীরবতা শেষে আলোচনায় কমিউনিস্ট নিধনযজ্ঞ

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৯ এপ্রিল ২০১৬

দীর্ঘ নীরবতা শেষে আলোচনায় কমিউনিস্ট নিধনযজ্ঞ

পুতু ওকা সুকান্ত বলছেন, যখন ১৯৬৬-এর অক্টোবরের এক গভীর রাতে তার বাড়ির দরজার কড়া নেড়ে তাকে ঘুম থেকে জাগানো হয়, তখন তিনি সহজবুদ্ধিতেই জানতেন তারা কে ছিল। ইন্দোনেশিয়ার সৈন্য, পুলিশ অফিসার ও সাদা পোশাক পরা গোয়েন্দারা তখনকার ২৭ বছর বয়সী হাইস্কুল শিক্ষক ও কবি সুকান্তকে রাজধানী জার্কাতার এক সামরিক ব্যারাকে নিয়ে যায়। সেখানে ‘বামপন্থী তৎপরতা নিয়ে তিন মাস ধরে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাকে মারধর ও নির্যাতন করা হয়। তিনি সম্প্রতি বলেন, তারা এমন সব প্রশ্ন করত যা আমি বুঝতাম না। আমি জানতাম না এমন সব বিষয়ে ‘হ্যাঁ’ বলতে তারা আমাকে বাধ্য করত। সুকান্ত বলেন, তিনি বিনা বিচারে এক দশক কারাগারে কাটান এবং একেবারে ১৯৭৬ সালে দিয়াশলাইয়ের কাঠির মতো চিকন শরীরে বেরিয়ে আসেন। যাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম নিষ্ঠুর গণনির্যাতন বলে অভিহিত করা হয়, তার শিকারে পরিণত হওয়া লাখ লাখ মানুষের অন্যতম ছিলেন সুকান্ত। এটি ছিল ১৯৬৫-৬৬ সালে ইন্দোনেশিয়াতে কমিউনিস্ট ও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার দায়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের উদ্যোগে পরিচালিত শুদ্ধি অভিযান। পাঁচ লাখ বা এরও বেশিসংখ্যক লোককে হত্যা করা হয়। তাদের অনেকের সঙ্গে কমিউনিউজমের কোন সম্পর্কই ছিল না। আর অন্য লাখ লাখ লোককে বছরের পর বছর ধরে বন্দীশিবিরে আটক রাখা হয়। সুকান্তর মতো বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা ঐ অন্ধকার যুগে কী ঘটেছিল তার পূর্ণ বিবরণ সরকার তুলে ধরুক বলে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এসেছেন, কিন্তু কোন ফলোদয় হয়নি। কিন্তু তাদের কেউ কেউ আশা করছেন, হত্যাকা-ের ওপর দু’দিনের এক সিম্পোজিয়াম তখন কী ঘটেছিল তা সরকারীভাবে স্বীকার করার পথে প্রথম পদক্ষেপ হবে। এ সিম্পোজিয়াম সোমবার জাকার্তায় শুরু হওয়ার কথা। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস।
×