অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রবাসী বাংলাদেশীরা এখন দেশে স্বজনদের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরাসরি টাকা পাঠাতে পারবেন। রবিবার মাস্টারকার্ড, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, ব্র্যাক ব্যাংক ও বিকাশ যৌথভাবে প্রবাসী আয় স্থানান্তরের এ সেবা চালু করেছে। এ সেবার আওতায় বিকাশ এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোন গ্রাহক প্রতিবার সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা করে পাঁচ বারে দিনে সর্বোচ্চ এক লাখ ১৫ হাজার টাকা পাঠাতে পারবেন। এভাবে মাসে সর্বোচ্চ ২০টি লেনদেনে সর্বোচ্চ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা পাঠানো যাবে।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এ সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আর্থিক লেনদেনের ধরন আপনারা বদলে ফেলেছেন। মানুষ এখন বলে ‘আমাকে বিকাশ কর’, ‘আমার কাছে পাঠাও’ বলে না।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয়ের বড় অবদান রয়েছে, যা জিডিপির ১০ শতাংশ। অনন্য এ উদ্যোগের মাধ্যমে ৮০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী লাভবান হবে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। প্রায় ১২ কোটি মানুষ বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, যার মধ্যে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের বিকাশ এ্যাকাউন্ট আছে। আর দেশজুড়ে বিকাশের এক লাখ ২০ হাজার এজেন্ট আছে। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে বিকাশের এ সেবার আওতায় ২৪ ঘণ্টা এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা তুলতে পারবেন গ্রাহকরা। অথবা তা না করে এই টাকা সরাসরি অন্য কারও এ্যাকাউন্টে পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিল পরিশোধ ও দোকানে কেনাকাটার কাজেও ব্যবহার করা যাবে। এই টাকা তুলতে গ্রাহককে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের রেফারেন্স নম্বর, টাকার পরিমাণ ও পিন নম্বর মোবাইলে প্রবেশ করাতে হবে।
মাস্টারকার্ডের নিরাপদ পরিশোধ প্রযুক্তিতে উত্তোলনের অনুরোধ সফল হওয়ার পর ওই টাকা বিকাশ এ্যাকাউন্টে চলে আসবে। বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির বলেন, বিদেশ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে স্বজনদের পাঠানো টাকা আনতে গ্রামের মানুষদের অনেক কষ্ট করতে হয় বলে তাদের সুবিধার জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আরেফ হোসেন, মাস্টারকার্ডের গ্রুপ এক্সিকিউটিভ ম্যাথিউ ড্রাইভার ও ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট জ্যাঁক ক্লড ফারাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এই নতুন সেবা চালুর ফলে দেশের লাখ লাখ মানুষ বিদেশে বসবাসরত তাদের স্বজনদের পাঠানো রেমিটেন্স গ্রহণ অনেক সহজ ও সুবিধাজনক হবে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রেমিটেন্স গ্রহণ প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। এক্ষেত্রে বিকাশ মেন্যুতে গিয়ে রেমিটেন্স ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন নির্বাচিত করে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের রেফারেন্স নাম্বারে (এমটিসিএন) প্রবেশ করে, টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে বিকাশ পিন চাপতে হবে। পরবর্তী ধাপে লেনদেনের অনুরোধটি মাস্টারকার্ডের সিকিউরড পেমেন্ট টেকনোলজির মাধ্যমে সরাসরি বিকাশ এ্যাকাউন্টে চলে যাবে। একজন বিকাশ গ্রাহকের দিনে একটি একক লেনদেনের সর্বোচ্চ পরিমাণ হবে ৩৫ হাজার টাকা (প্রায় ৫০০ ডলার)। একজন গ্রাহক দিনে পাঁচবার লেনদেন করতে পারবেন, যার সর্বোচ্চ পরিমাণ হবে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা (প্রায় ১৫০০ ডলার)। মাসে সর্বোচ্চ ২০ বার লেনদেন করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে বিকাশ এ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ স্থিতি থাকবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: