ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাগত জানাল জাতিসংঘ ও ইরান

সিরিয়া থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার ইতিবাচক পদক্ষেপ

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৬ মার্চ ২০১৬

সিরিয়া থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার ইতিবাচক পদক্ষেপ

সিরিয়ায় জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) বিরোধী অভিযান শুরুর পাঁচ মাসের মধ্যেই দেশটি থেকে রুশ বাহিনীর মূল অংশ প্রত্যাহারের আকস্মিক ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি থেকে ক্রেমলিনের প্রায় সব ধরনের উদ্দেশ্যই পূরণ হয়েছে বলে সোমবার তিনি জানান। রুশ প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরুর নির্দেশ দেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে। তবে প্রত্যাহার কতদিনে সম্পূর্ণ হবে, সে বিষয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি তিনি। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে বলে পরিষদের প্রেসিডেন্ট সোমবার জানিয়েছেন। এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ মঙ্গলবার বলেছেন, সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের রুশ পদক্ষেপকে অস্ত্রবিরতির জন্য একটি ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও এএফপির। সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিতভাবে পুতিনের সেনা মোতায়েনের পদক্ষেপের চেয়েও আকস্মিকভাবে সেনা প্রত্যাহারে রাশিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে পশ্চিমা রাজধানীগুলো এমনকি সিরিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে। সিরিয়ায় পাঁচ মাস আগে রুশ সেনা মোতায়েনের পর দেশটির গৃহযুদ্ধে মোড় ঘুরে যায়। তবে সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, রাশিয়ার এই পদক্ষেপের প্রভাব কি যুদ্ধের ফলাফলে পড়বে এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জন্য এটি কি অর্থ বহন করবে। রুশ এই সিদ্ধান্ত আসাদের সক্ষমতার প্রতি নতুন আস্থার ইঙ্গিত হতে পারে। আবার তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য তার ওপর চাপ সৃষ্টির প্রচেষ্টাও হতে পারে। আবার উভয় বিষয়ই হতে পারে। পুতিন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই পদক্ষেপ নিলেন যখন সিরিয়া রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ ছয় বছরে পা দিচ্ছে, আর এই গৃহযুদ্ধ অবসানে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে জেনেভায় সিরীয় শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। এই গৃহযুদ্ধে দেশটির লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং ভয়াবহ মানবিক দুর্দশার সৃষ্টি হয়েছে। তবে রুশ বাহিনী প্রত্যাহারের পরও আসাদ বাহিনী একা হয়ে যাবে না। কারণ তার প্রতি ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গ্রুপের সমর্থন রয়েছে। অপরদিকে ক্রেমলিনও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় প্রদেশ লাতাকিয়ায় নতুন বিমান ঘাঁটি এবং সোভিয়েত সময় থেকে নৌবাহিনীর জ্বালানি স্টেশনে তারতুস বন্দরে সেনা থাকবে। সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগুকে সোমবার পুতিন বলেছেন, আমাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নির্ধারিত দায়িত্ব সার্বিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাই সিরিয়ায় মোতায়েন আমাদের সেনাদের মঙ্গলবার থেকে প্রত্যাহার শুরুর নির্দেশ দিয়েছি। ক্রেমলিন বলেছে, এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে রাশিয়ার দীর্ঘদিনের মিত্র আসাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন পুতিন। নিরাপত্তা পরিষদের চলতি মাসের প্রেসিডেন্ট এ্যাঙ্গোলার জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ইসমাইল গ্যাসপার মার্টিনস বলেছেন, যে সিদ্ধান্তের ঘোষণা রুশ প্রেসিডেন্ট সোমবার দিয়েছেন, তা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তিনি বলেছেন, পরিষদের রাষ্ট্রদূতরা বুঝতে পেরেছেন যে, সেনা প্রত্যাহার ধীরে, তবে অবশ্যই হবে এবং এর ফলে বিমান হামলার তীব্রতাও কমে যাবে।
×