খোকন আহম্মেদ হীরা
থাই স্প্রিং বট, এ্যালমন ও পেশন গাছসহ দেশ-বিদেশের ১৪ শ’ প্রজাতির গাছপালা ও লতা। বিশাল পুকুরের চারপাশে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছ ছাড়াও কৃত্রিম উভচর প্রাণী কুমির এবং নানান জাতের পশু-পাখি-যেমন জিরাফ, বক, গরু, উটপাখি, কচ্ছপ, খরগোশ, পেঙ্গুইন, ভৌতিক মানুষের কঙ্কাল, সুপারম্যান, ফাইটারম্যান ও ফুলসহ বিনোদনের অসংখ্য স্ট্যাচু দিয়ে প্রায় পাঁচ একর জমিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমির ন্যায় সাজানো হয়েছে অপরূপ সাজে। শীঘ্রই এখানে স্থাপন করা হবে শিশু-কিশোরদের বিনোদনের বিভিন্ন রাইড ও নাগরদোলাসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য খেলনা সামগ্রী। এজন্য ইতোমধ্যে পাঁচ একর জমির পাশেই আরও ১৪ একর জমি কেনা হয়েছে।
মায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং তার স্মৃতি রক্ষার্থে অজপাড়া গাঁয়ে নানাবাড়ির পাশেই (মায়ের জন্মস্থানে) গত চার বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তোলা হয়েছে অপূর্ব নৈসর্গিক দৃশ্যে ঘেরা বিনোদনমূলক ‘শাহী ৯৯ পার্ক’। সৌন্দর্যম-িত এ পার্কে একবার আসলে আর ফিরে যেতে মন চায় না। অজপাড়া গাঁয়ের এ পার্কের অমোঘ সৌন্দর্যের আকর্ষণ অগ্রাহ্য করা সত্যিই কঠিন। তাইতো সবার জন্য বিনামূল্যে উন্মুক্ত শাহী ৯৯ পার্কে প্রতিদিন দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। একমাত্র বিনোদনের জন্য শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সকল বয়সের নারী-পুরুষের সরগরম উপস্থিতি পার্ক নির্মাতাকে বিমোহিত করেছে। যে কারণে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে পার্কের গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলোতে ৩৬টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
বরিশালের গৌরনদী উপজেলাবাসীর জন্য বাটাজোর ইউনিয়নের দেওপাড়া লক্ষণকাঠী এলাকায় ২০১২ সালে পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ‘শাহী ৯৯ জর্দ্দা’ কোম্পানির স্বত্বাধিকারী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী তাঁতী লীগের ঢাকা মহানগরের (উত্তর) দক্ষিণখান থানার সভাপতি শামিম আহমেদ। সেই থেকে আজ পর্যন্ত তিনি তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। দেশ-বিদেশ ঘুরে তিনি বিভিন্ন স্ট্যাচু সংগ্রহ করে ইতোমধ্যে পার্কে স্থাপন করেছেন। প্রকৃতিপ্রেমী শামিম আহমেদ তার কোম্পানির নামানুসারে পার্কের নামকরণ করেছেন ‘শাহী ৯৯ পার্ক’। এ পার্কে তিনি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ও লতার।
ইতোমধ্যে পার্কে ১৪ শ’ প্রজাতির গাছপালা ও লতা রোপণ করা হয়েছে। বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদীর বাটাজোর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন উত্তর পশ্চিম পাশের দেওপাড়া লক্ষণকাঠী গ্রামের শাহী ৯৯ পার্কে প্রবেশের সময়ই শরীর ছুঁয়ে যায় থাই স্প্রিং বটের। এ যেন ভিন্নভাবে দর্শনার্থীদের বরণ করে নেয়া। প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বিনামূল্যে সব বয়সের দর্শনার্থীদের জন্য বিনোদনমূলক এ পার্ক উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। পার্কের দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কাজে ২৫ জন স্থায়ী কেয়ারটেকার নিয়োজিত রয়েছেন। পার্কের মধ্যেই রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিশ্রামের ব্যবস্থা। ইতোপূর্বে পার্কে প্রবেশের প্রধান গেটের সামনেই শামিম আহমেদের উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে এক মনোমুগ্ধকর শাহী জামে মসজিদ এবং ঈদগাহ ময়দান। শাহী ৯৯ পার্কের নামানুসারে ইতোমধ্যে ওই এলাকায় শাহী মার্কেটসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছে।
আলোচ্য পার্কের উদ্যোক্তা শামিম আহমেদ বলেন, জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বিনোদনের অনেক কিছুই এখনও স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। এজন্য ইতোমধ্যে এ পার্কের ৫ একর জমি ছাড়াও পাশে আরও ১৪ একর জমি ক্রয় করা হয়েছে। দ্রুত ওই জমিকে উপযোগী করে বিনোদন ব্যবস্থা আরও বৃদ্ধিসহ পর্যায়ক্রমে এ পার্কের দূরত্ব পার্শ্ববর্তী মাহিলাড়া ইউনিয়ন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তখন এ পার্কের মধ্যেই পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
