ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবিতে পতাকা দিবস পালন

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ৩ মার্চ ২০১৬

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ আলোচনা, দেশাত্মবোধক গান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পতাকা দিবস পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বুধবার সকালে ঐতিহাসিক কলাভবনের বটতলায় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের উপস্থাপনায় এবং প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদের সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তব্য রাখেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দীন, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান, বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। আলোচনা শেষে শুরু হয় সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনা। এই পর্বে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগ ও নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করতে হয়, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে এবং দায়িত্বহীন ও বিকৃত মন্তব্য অনেকেই করছেন। আমাদের বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে একই সঙ্গে করা হচ্ছে কটাক্ষ। সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর প্রতিটি পরিবারে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চিহ্ন- রয়েছে বীরত্বগাথা। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিবিরোধী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে। লেখক মুস্তফা চৌধুরীর ‘৭১-এর যুদ্ধশিশু অবিদিত ইতিহাস’ শীর্ষক গ্রন্থের উল্লেখ করে উপাচার্য আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অনেক বিরল উপকরণ, উপাদান ও তথ্য অজানা রয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনের দায়িত্ব নিতে হবে। ১৯৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইচ্ছাকৃতভাবে মুক্তিযুদ্ধের অনেক দলিল-দস্তাবেজ ধ্বংস করা হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল তরুণ প্রজন্মকে শৌর্য-বীরত্বগাথা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা। এই প্রজন্মের সকলকে ভাষা-শহীদ, মুক্তিযুদ্ধের শহীদসহ সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনাকে জানতে হবে, তা থেকে অনুুপ্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এ সময় উপাচার্য বলেন, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ এই ঐতিহাসিক বটতলায়ই প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল যা বাঙালীর স্বাধীনতা আন্দোলনের এক অনন্য মাইলফলক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে ধাপে ধাপে জাতিকে প্রস্তুত করেছিলেন স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে। ১৯৪৮ সালে এই মহান মাসে বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেন। তখনই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন বাঙালীর মুক্তির জন্য স্বতন্ত্র ভূখ- প্রয়োজন। উপাচার্য দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ভাষা আন্দোলনের শহীদ এবং মুক্তিযুদ্ধের অসংখ্য শহীদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে তার অগ্রযাত্রা কেউ রোধ করতে পারবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে, তরুণ প্রজন্মকে এই সত্যকে প্রচার করতে হবে, সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য জ্ঞানের আলোকে, শিক্ষার আলো দিয়ে অন্ধকার দূর করে সমাজকে প্রজ্বলিত করা। আলোকিত মানুষের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। মানুষের চিন্তাশীলতা ও মননশীলতার মধ্য দিয়ে গড়ে তুলতে হবে অসাম্প্রদায়িক আলোকিত বাংলাদেশ।
×