ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে প্রশ্নোত্তর

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি হচ্ছে ॥ নসরুল হামিদ

প্রকাশিত: ০৫:২২, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি হচ্ছে ॥ নসরুল হামিদ

সংসদ রিপোর্টার ॥ বিশ্ববাজারের সঙ্গে তুলনা করে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণে নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। প্রথমবারের মতো এ ধরনের পদ্ধতি আরোপের পূর্বে এ বিষয়ে অন্যান্য সম্পূরক প্রভাবক আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি আরও জানান, সরকারী ও বেসরকারী খাতের প্রায় ৭ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৭ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো ২০১৬ থেকে ১৯ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এছাড়াও ২৩ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে দরপত্র প্রক্রিয়াধীন আছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। ২০১৪ সালের নবেম্বর থেকে বিপিসির লাভ শুরু হয়। ঘাটতি পূরণের জন্য ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ৫ হাজার ২৬৮ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং চলতি ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের গত সাত মাসে ৫ হাজার ৮১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকাসহ মোট ১১ হাজার ৭৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা জ্বালানি তেল বিক্রি করে সাশ্রয় হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ১০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় বিভিন্ন দেনা শোধ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এছাড়াও পেট্রোবাংলাকে ৪৯৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা পরিশোধের প্রক্রিয়া নেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট অর্থ বিপিসির ব্যাংক হিসাবে স্থিতি হিসেবে রয়েছে। এরপরও দেনা রয়েছে ২৬ হাজার ৩৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। প্রতিমন্ত্রী জানান, বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্য পরিবর্তনের সময় প্রধান প্রধান পণ্যগুলোর প্রত্যেকটির পরিবর্তন করা হয়। কারণ প্রত্যেকটি জ্বালানি পণ্য পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। তাই পরিবর্তন করা হলে কেরোসিন, ডিজেল, ফার্নেস অয়েল, অকটেন ইত্যাদি সবগুলোর মূল্য একইসঙ্গে পরিবর্তন করা হবে। তিনি জানান, বিশ্ববাজারের মূল্যের সঙ্গে তুলনা করে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের জন্য একটি নীতিমালা নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো এ ধরনের পদ্ধতি আরোপের পূর্বে এ বিষয়ে অন্যান্য সম্পূরক প্রভাবক আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ২৭ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণাধীন ॥ সরকারী দলের সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামালের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুত উৎপাদনে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন বলেন, বর্তমানে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ক্যাপটিভসহ ১৪ হাজার ২৭১ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে সরকারী খাতে ৪ হাজার ৮৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৪টি এবং বেসরকারী খাতে ২ হাজার ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৩টি বিদ্যুত কেন্দ্রসহ মোট ৬ হাজার ৯৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৭টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। তিনি জানান, বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে বলে আশা করা যায়। পাশাপাশি সরকারী খাতে ৪ হাজার ৬৩৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১০টি এবং বেসরকারী খাতে ৩ হাজার ২৯৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৩টি বিদ্যুত কেন্দ্রসহ মোট ৭ হাজার ৯৩৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৩টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া চলতি মাসে ভারতের ত্রিপুরা থেকে ১০০ মেগাওয়াট আমদানিকৃত বিদ্যুত কুমিল্লা অঞ্চলের কিছু অংশে সরবরাহ করার লক্ষ্যে গৃহীত কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
×