ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

পুঁজিবাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেন বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পুঁজিবাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেন বেড়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের সঙ্গে সূচকও বেড়েছে। বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর চাহিদা ও লেনদেন বাড়ার কারণে গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বেড়েছে। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। পুরো সপ্তাহে সার্বিক লেনদেনের শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে প্রকৌশল খাতটি। সার্বিকভাবে খাতটি মোট লেনদেনের ২০ দশমিক ৮০ শতাংশ দখল করেছে। তবে অবকাঠামো সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বিশেষ করে সিমেন্ট এবং স্টিল কোম্পানিগুলোর প্রতি আলাদা চাহিদা তৈরি হয়েছিল গত সপ্তাহে। একইসঙ্গে জ্বালানি এবং শক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর কিছুটা লেনদেন ও দর বাড়তে দেখা গেছে। জানা গেছে, আগের সপ্তাহের চেয়ে ডিএসইতে শেয়ার লেনদেন বেড়েছে ৩৮২ কোটি ৬১ লাখ টাকার। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৪৬ কোটি ১৬ লাখ টাকার। আর আগের সপ্তাহে শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮৬৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার। আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের বাজার পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে বড় মূলধনী কিছু কোম্পানির দর বাড়ার কারণে বেশিরভাগ দিনই সূচক বেড়েছে। তবে ছোট মূলধনী কোম্পানিগুলোর দর সংশোধনের দিনে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের জন্য ভাল লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ, অন্যদিকে বিএসআরএম লিমিটেডের ২০ শতাংশ দর বেড়েছে, শুধু তাই নয়, মুনাফা বাড়ার কারণে সার্বিকভাবে কোম্পানিটি প্রতিদিনই লেনদেনের শীর্ষ স্থান দখল করেছে। গত সপ্তাহে লেনদেন গড়ে ২০ শতাংশ বেড়ে সাড়ে চারশ’ কোটি টাকায় পৌঁছছে। খাতভিত্তিক দরবৃদ্ধির তালিকায় সিমেন্ট ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং সিরামিক ২ দশমিক ৭ শতাংশ দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতটি দর হারিয়েছে ২ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং বিবিধ খাতের দর কমেছে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ। সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৫ দশমিক ০২ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে দশমিক ৮৭ শতাংশ। এদিকে ডিএসইর সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে দশমিক ১৪ শতাংশ বা ৬ দশমিক ৩২ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে দশমিক ৩৮ শতাংশ বা ৬ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট। অপরদিকে শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে দশমিক ৫৮ শতাংশ বা ৬ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৯৯টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ২০২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির। আর লেনদেন হয়নি ৩টি কোম্পানির শেয়ার। দরপতনের তালিকায় সবার উপরে ছিল যথাক্রমে তথ্যপ্রযুক্তি ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ, বিবিধ ২ দশমিক ৭১, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত ২ দশমিক ৪২, সেবা-আবাসন ২ দশমিক ৩৩, ভ্রমণ-অবকাশ ১ দশমিক ৯১ এবং বস্ত্র ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। ঋণের চাহিদা আশানুরূপ না বাড়া, ট্রেজারি বিলের সুদের হার কমে আসা এবং বছর শেষে অনাদায়ী ঋণ বাড়ায় ব্যাংকের শেয়ারও কমবেশি দর হারিয়েছে। সপ্তাহ শেষে ব্যাংকিং খাতের বাজার মূলধন দশমিক ৭১ শতাংশ কমেছে। এ খাতে কেনাবেচাও আগের সপ্তাহের চেয়ে ১০ শতাংশ কমেছে। ডিএসইতে দরবৃদ্ধির সাপ্তাহিক তালিকায় ছিল যথাক্রমে প্রাইম ইসলামী লাইফ, বিএসআরএম লিমিটেড, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, আমান ফিড, জিপিএইচ ইস্পাত, এইমস ফার্স্ট, রূপালী লাইফ, প্রিমিয়ার সিমেন্ট ও গ্রামীণ মিউচ্যুয়াল ফান্ড স্কিম ওয়ান। দর হ্রাসের তালিকায় ছিল লিবরা ইনফিউশন্স, সাভার রিফ্যাক্টরিজ, ডেল্টা-ব্র্যাক হাউজিং, ঢাকা ডায়িং, এপেক্স ফুডস, প্রাইম ফিন্যান্স, আরএন স্পিনিং, আইটিসি, অলটেক্স ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড। সপ্তাহ শেষে ডিএসইর প্রকৃত লভ্যাংশের (ডিভিডেন্ড ইল্ড) গড় দাঁড়ায় ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। খাত-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আন্তঃব্যাংক লেনদেনে (কলমানি) সুদের হার দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় কিছুটা কমে গড়ে ৩ দশমিক ৭ শতাংশের ঘরে অবস্থান করছিল। ডিএসইর গড় মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ছিল ১৫ দশমিক ৯১, সর্বশেষ চার প্রান্তিকের গড় আয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্ণীত চলমান (ট্রেইলিং) পিই অনুপাত ছিল ১৪ দশমিক ৭৫-এ। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন ১৪২ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার। প্রধান সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে দশমিক ১৬ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ২৭৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৪টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৪৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির।
×