ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরিষার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

সরিষার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার প্রতিটি গ্রামের মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠ। উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধানো বর্ণিল সমারোহ। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মুহূর্ত। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই ফুলগুলোকে। ভাল ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও। এবার বন্যার পানি মাঠ থেকে দ্রুত নেমে যাওয়ায় রবিশস্যের উপযোগী হওয়ায় উচ্চফলনশীল এবং ট্ররি (মাঘী) জাতের সরিষা বপন করা সম্ভব হয়েছে। এ এলাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছে কৃষকরা। এদিকে কিছু কিছু জমিতে সরিষা চাষের উপযোগী না হওয়ায় কিছু কৃষক ঠিক সময়ে সরিষা বপন করতে পারেনি। ফলে তারা অন্যান্য রবিশস্য চাষের দিকে ঝুঁকছে। কৃষকরা এই সরিষা যথাসময়ে ঘরে তুলতে পারলে এবং বিক্রয়মূল্য ভাল পেলে বন্যার কারণে রোপা-আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা। এদিকে বর্তমানে হাল্কা কুয়াশা থাকার কারণে কেউ কেউ মনে করছে সরিষার কিছুটা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বাসাইল উপজেলা কৃষি অফিস থেকে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের হাতেগোনা কয়েকজন কৃষককে কৃষি উপকরণ, উচ্চফলনশীল জাতের সরিষা ও রাসায়নিক সার দেয়া হয়েছে। সরকার পক্ষ থেকে উপজেলার সব কৃষককে কৃষি উপকরণ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, এ বছর চলতি মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৫৮৮ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। শুরুতেই সরিষা ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে সরিষা চাষীদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরি সহযোগিতার কারণে সরিষা ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাইমুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার সৈদামপুর গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল মিয়া বলেন, ‘আমি ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি, হাল্কা কুয়াশার কারণে সরিষার কিছুটা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।’ তিনি জানান, কৃষি অফিস থেকে তাকে কোন প্রকার কৃষি উপকরণ, সরিষার বীজ, রাসায়নিক সার দেয়া হয়নি। হাবলা ইউনিয়নের আদাজান ভৈরপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘আমি এ বছর প্রায় ৪ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। সরিষা গাছে প্রচুর পরিমাণ ফুল ধরায় মনে হচ্ছে এবার সরিষার আশানুরূপ ফলন পাবো।’ গিলাবাড়ী গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমি চলতি মৌসুমে ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। কোন প্রকার দুর্যোগ ও রোগবালাই না থাকায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন পাবো বলে আমি আশা করছি।’ এ ব্যাপারে বাসাইল উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল ফারুক জানান, এ বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণ সরিষা চাষ হয়েছে। যথাসময়ে জমি চাষযোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে সরিষা চাষ করেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে উপজেলায় সরিষা আবাদের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। ইফতেখারুল অনুপম নিজস্ব সংবাদদাতা
×