ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

হামলার নির্দেশদাতারা পাকিস্তানী ॥ ভারতীয় গোয়েন্দাদের তথ্য

পাঠানকোট বিমান ঘাঁটিতে ফের বিস্ফোরণের শব্দ

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৪ জানুয়ারি ২০১৬

পাঠানকোট বিমান ঘাঁটিতে ফের বিস্ফোরণের শব্দ

ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে সন্ত্রাসী হামলার শিকার বিমান ঘাঁটির ভিতরে ফের গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ঘাঁটিটিতে অন্তত আরও দুই জঙ্গী রয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। রবিবার সকাল থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষী (এনএসজি), ভারতীয় বিমান বাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী এবং পাঞ্জাব পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত নিরাপত্তা বাহিনীর একটি শক্তিশালী দল বিমান ঘাঁটি ও আশপাশের এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। খবর এনডিটিভির। বর্ডার রেঞ্জের উপ-মহাপরিচালক কুনওয়ার বিজয় প্রতাপ সিং বলেন, “সারারাত অভিযান চলেছে। দুই সন্ত্রাসী এখনও ভিতরে আছে। তাদের নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছি আমরা।” সকালে ঘাঁটিটিতে চিরুণী অভিযান চালাকালে বিস্ফোরণে এক জওয়ান আহত হন। হাতে তৈরি বোমার বিস্ফোরণে ওই জওয়ান আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তল্লাশি অভিযান চলাকালে হঠাৎ করে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। এছাড়া শনিবারের সন্ত্রাসী হামলায় আহত চার নিরাপত্তা সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এতে সন্ত্রাসী হামলাটিতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর নিহত সদস্য সংখ্যা সাত জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার ভোররাতে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে টানা ১৫ ঘণ্টা লড়াইয়ে হামলাকারী চার সন্ত্রাসী নিহত হন। হামলাকারী পঞ্চম সন্ত্রাসীও নিহত হয়েছেন কোথাও কোথাও এমন খবরও প্রকাশ হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ইন্দো-এশিয়া নিউজ সার্ভিস (আইএএনএস) তবে খবরটি নিশ্চিত করা যায়নি। তল্লাশি চলাকালে ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু একে-৪৭ রাইফেল, গ্রেনেড, লঞ্চার এবং গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। জিপিএস ডিভাইসগুলোর তথ্য থেকে সন্ত্রাসীরা কোন পথে ঘাঁটিটিতে প্রবেশ করেছে ও কোথা থেকে এসেছে তা জানা যাবে বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা। তদন্তের দায়িত্ব ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী ও পাঞ্জাব পুলিশের সূত্রগুলো জানিয়েছে, তল্লাশি অভিযান চালাকালে গুলি ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও ঘাঁটিটিতে থাকা মিগ-২১ যুদ্ধবিমান ও এমআই-৩৫ রণ-হেলিকপ্টারগুলো নিরাপদে আছে। এগুলো যেখানে আছে সেখানে কোন ঘটনা ঘটেনি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশাল ওই বিমান ঘাঁটিটিতে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত ছিল। শনিবার রাত থেকে শুরু করে রোববার সকালেও বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারগুলো ঘাঁটিটির ওপর দিয়ে চক্কর দিচ্ছিল। পাঞ্জাব পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “তল্লাশি অভিযান চলছে। সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে। এ অনুসন্ধান সম্পন্ন হওয়ার পর তল্লাশি অভিযান শেষ করা হবে।” হামলাকারীরা জঙ্গী সংগঠন জইশ-ই মোহাম্মদের সদস্য এবং তারা পাকিস্তানের ভাওয়ালপুর থেকে এসেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল বিমান ঘাঁটি থেকে পাকিস্তান সীমান্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। সহযোগিতার প্রস্তাব পাকিস্তানের ভারতকে আবারও সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ভারতসহ এ অঞ্চলের অন্য যেকোন দেশের অংশীদার হওয়ার জন্য পাকিস্তান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। এ হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসাজশ আছে বলে যখন ভারতের নানা মহল থেকে সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে তখন এ বিবৃতি দিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলা চলাকালে ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজু জানান, সীমান্তের অপর পার থেকে কেউ কেউ এ হামলার আয়োজন করেছে বলে ভারতের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য আছে।
×