ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১

আজ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে গভীর নিম্নচাপ 

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ২৫ মে ২০২৪

আজ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে গভীর নিম্নচাপ 

ঘূর্ণিঝড়

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) দুপুরের মধ্যে সেটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শুক্রবার (২৪ মে) দিবাগত মধ্যরাতে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে এই তথ্য জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বলা হয়, এটি শুক্রবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি মধ্যরাতে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গভীর নিম্নচাপটি আজ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। 

এর প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৪ নম্বর বিশেষ বুলেটিনের তথ্য মতে, নিম্নচাপটি গতকাল রাত ১২টায় চট্টগ্রাম থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। গতকাল দুপুর ১২টায় ছিল চট্টগ্রাম থেকে ৮০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে। 

প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০ কিলোমিটার করে সামনের দিকে এগুচ্ছে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঝড়টি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আজ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় তাহলে তা পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার উপর দিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় অতিক্রম করতে পারে। ঘণ্টায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। আর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘রেমাল’। ওমানের দেয়া এই নামটির অর্থ ‘বালু’।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের পূর্বাভাসে নিম্নচাপটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে উল্লেখ করেছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, আসন্ন ঝড়টি পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার উপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে রবিবার সন্ধ্যায়। 

এপ্রিল ও মে মাস হলো ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম। এরমধ্যে মে মাস সবচেয়ে বেশি। কিন্তু এপ্রিল মাস জুড়ে সাগরে কোনো লঘুচাপ সৃষ্টি হয়নি। ইতিমধ্যে মৌসুমী বায়ুও সেট হয়ে গেছে। মৌসুমী বায়ু প্রবেশের আগে সাগরে একটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে থাকে সাধারণত। এরই ধারাবাহিকতায় সাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে এবং আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসেও এমনটার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। 

এর আগে ২০০৭ সালের ১৫ মে আঘাত করেছিল ঘূর্ণিঝড় ‘আকাশ’, ২০০৮ সালের ৩ মে আঘাত করেছিল ঘূর্ণিঝড় ‘নার্গিস’, ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’ আঘাত করেছিল, ২০১০ সালের ২১ মে আঘাত করেছিল ঘূর্ণিঝড় ‘লায়লা’, ২০১৩ সালের ১৬ মে আঘাত করেছিল ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’, ২০১৬ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানা’ ২২ মে আঘাত করেছিল, ২০১৭ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ ৩১ মে আঘাত করেছিল, এছাড়া ২০১৯ সালে ‘ফনি’ ৫ মে এবং ২০২০ সালে ‘আম্ফান’ ২১ মে আঘাত করেছিল। 

এসআর

×