ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

লড়াই হবে নৌকার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর

বাবুল হোসেন, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩

লড়াই হবে নৌকার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর

মোহিত উর রহমান শান্ত আমিনুল হক শামীম

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মর্যাদাপূর্ণ ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহিত উর রহমান শান্তর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ট্রাক প্রতীকের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীমের। মোহিত উর রহমান শান্ত ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রয়াত ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের পুত্র। আমিনুল হক শামীম ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি।

কাঁচি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি ও ময়মনসিংহ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন খান দুলু এবং লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবু মুসা সরকার। ময়মনসিংহ-৪ সদর এক সময় এন্টি আওয়ামী লীগের আসন হিসেবে পরিচিত থাকলেও এখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রায় সমানসংখ্যক ভোটার রয়েছে। এর বাইরে জাতীয় পার্টির ভোট ব্যাংক রয়েছে এই আসনে। আওয়ামী লীগের ভোট ভাগাভাগি হলে ভাগ্যদুয়ার খুলে যেতে পারে অন্য কোনো প্রার্থীর। যদিও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের দাবি, এটি প্রতীকের নির্বাচন। অতীতেও নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে কোনো ফল পায়নি কেউ। এবারেও এর ব্যত্যয় ঘটবে না বলে দাবি আওয়ামী লীগ নেতাদের। 
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল জানান, নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতেই আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও সমর্থকরা আসন্ন নির্বাচনে দলের জনপ্রিয় প্রার্থীকেই বেছে নেবে। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম সাংবাদিকদের জানান, ময়মনসিংহ নৌকা ঘাটি। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহিত উর রহমান শান্তর সঙ্গেই আছে সদরের ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকেই ভোটাররা বেছে নেবে। নৌকা বিরোধীদের দাবি, জয়ের পাল্লা ভারি ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীমের।

গত ২০০৮ সালে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে এমপি হন অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। গত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এ আসন মহাজোটকে ছাড় দেওয়ায় জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এ আসনের এমপি হন। এর আগে গত ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে এমপি ছিলেন বিএনপির দেলোয়ার হোসেন খান দুলু ও গত ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির বেগম রওশন এরশাদ এমপি হন এ আসনে। এর আগে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এ আসনে এমপি হন বিএনপির একেএম ফজলুল হক।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ড ও ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে ময়মনসিংহ-৪ সদর আসন গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৬ লক্ষ ৫০ হাজার ২৮৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লক্ষ ২২ হাজার ৭৯৭ জন এবং নারী ভোটার ৩ লক্ষ ২৭ হাজার ৪৭৭ জন। জেলার মর্যাদাপূর্ণ এই আসনে যে দল থেকে এমপি নির্বাচিত হন সেই দলই সরকার গঠন করে বলে একটি বিশ্বাস চালু আছে। এক সময় ময়মনসিংহ সদর আসনকে এন্টি আওয়ামী লীগের আসন বলে বিবেচনা করা হলেও এখন আর এই অবস্থা নেই। নতুন প্রজন্মের তরুণ ভোটাররাই এখন এই বদলে দেওয়ার মূল নিয়ামক শক্তি বলে মনে করা হচ্ছে। এই আসনে প্রধান ৩ দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির থেকে ৩ বার করে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ভোটের হিসেবে এই আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি বলা যায় সমান শক্তিধর।
টানা ৩ টার্ম আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দেশব্যাপী যে উন্নয়ন হয়েছে সে তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে ময়মনসিংহ। উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ার জন্য যোগ্য নেতৃত্বের অভাবকেই মনে করছেন স্থানীয়রা। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ভৌত অবকাঠামো ছাড়া দৃশ্যমান তেমন উন্নয়ন হয়নি ময়মনসিংহ সদরে। যদিও ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনে জাতীয় পার্টির এমপি রওশন এরশাদের উদ্যোগে ময়মনসিংহ পৌরসভা থেকে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ও ময়মনসিংহ জেলা থেকে ময়মনসিংহ বিভাগ হয়েছে। ময়মনসিংহের পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদ খননের কাজ চলছে।

ময়মনসিংহে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নগরীর কেওয়াটখালি এলাকায় দেশে প্রথম স্টিল আর্চওয়ে সেতু ও নগরীর রহমতপুর বাইপাসে ব্রহ্মপুত্রের ওপর আরেকটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। দেরিতে শুরু করায় এখনো দৃশ্যমান নয় ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ব্রিজ নির্মাণ। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ময়মনসিংহবাসীর প্রত্যাশিত ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইনে দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালু ও ঢাকা-ময়মনসিংহে ডাবল রেললাইন স্থাপন, ময়মনসিংহে আরেকটি পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলা, নগরীর ভেতরে থাকা রেললাইনের কারণে সৃষ্ট যানজট নিরসনে পরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, ময়মনসিংহ সদরে আলাদা জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণ- যাকে দিয়ে সম্ভব সেই প্রার্থীকেই এবারের নির্বাচনে বেছে নিতে চান এই আসনের ভোটাররা।
ময়মনসিংহ সদরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুই ধারায় বিভক্ত। এক অংশের নেতৃত্ব দিয়েছেন সাবেক প্রয়াত ধর্মমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের পরিবার। মূল ধারার আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বেশিরভাগ ছিলেন এই ধারায় যুক্ত। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের পুত্র ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত। স্থানীয় আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতা-কর্মী ও সমর্থকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের একটি অংশ এই প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিলেও আওয়ামী লীগের একাংশ প্রকাশ্যে মোহিত উর রহমান শান্ত পক্ষে প্রচারে নামেননি।

যারা প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে প্রচারে নেমেছেন তাদের কেউ কেউ তলে তলে সমর্থন দিচ্ছেন ট্রাক প্রতীকের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীমকে। যদিও ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, বিভিন্ন কলেজের সাবেক ও বর্তমান ভিপি-জিএস এবং শিক্ষক ও নারী সমাজ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে নৌকার প্রচারপত্র বিলিসহ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। নৌকার সমর্থকরা বলছেন গণসংযোগে ব্যাপক সাড়া মিলছে। ময়মনসিংহের উন্নয়নে ভোটাররা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত নৌকার প্রার্থীকেই বেছে নেবে এবারের নির্বাচনে।
আওয়ামী লীগের অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের বিপরীতে ময়মনসিংহ সদরে আওয়ামী লীগের আরেক ধারার নেতৃত্বে আছেন ব্যবসায়ী নেতা ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আমিনুল হক শামীম। ময়মনসিংহ সিটি মেয়র ও ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটুর সহোদর বড় ভাই আমিনুল হক শামীম নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগে প্রভাবশালী এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গেও আছেন অনেকে। ময়মনসিংহ সিটি সাবেক ও বর্তমান অনেক কাউন্সিলর, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান অনেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান।

এর বাইরে নারী উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী সমাজ ও পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের একটি অংশ সমর্থন দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের এই স্বতন্ত্র প্রার্থীকে। নির্বাচনী বৈতরনী পার হতে ইতোমধ্যে এই প্রার্থী মাঠঘাট চষে বেড়াচ্ছেন। সমর্থকদের দাবি ময়মনসিংহের উন্নয়নে আমিনুল হক শামীমের বিকল্প নেই।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে জমে উঠেছে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহিত উর রহমান শান্ত প্রতীক পাওয়ার পর নগরীর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন উদ্যান সংলগ্ন ময়মনসিংহের পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে নৌকায় চড়ে প্রচার কার্যক্রম শুরু করেন। নৌকার শোভাযাত্রার এই প্রচারে যোগ দেয় নৌকা প্রেমিক স্থানীয় নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। এর বাইরে প্রচারের দ্বিতীয় দিনে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন কলেজের সাবেক ভিপি-জিএসদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে নগরীতে মিছিল করেছেন।

ময়মনসিংহ মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক গোলাম সারোয়ারের নেতৃত্বে নগরীতে নৌকা প্রতীকের লিফলেট বিতরণসহ আলমগীর মনসুর মেমোরিয়াল মিন্টু কলেজ থেকে মিছিল বের হয়ে নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেছে। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীম কুষ্টিয়া ইউনিয়নসহ চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও নির্বাচনী সভা করেছেন। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে মতবিনিময় সভা করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবু মুসা সরকার পরানগঞ্জ ইউনিয়নসহ চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি দেলোয়ার হোসেন দুলু নগরীর আকুয়া ভাঙ্গারপুল এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। এসবের বাইরে প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রতিদিন মাইকিংসহ নানা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান ও ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহিত উর রহমান শান্ত বলেন, আওয়ামী লীগের একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বাবা সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের নীতি নৈতিকতা ও আদর্শের পথ ধরেই দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে যা যা দরকার সবকিছুই করছি। বাবার পথ ধরেই হাটছি। করোনাকালীন দলের কর্মী সমর্থকসহ স্থানীয় এলাকাবাসীকে নানাভাবে সহায়তা দিয়ে পাশে থেকেছি। বাবা মন্ত্রী থাকাকালীন অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। মানুষকে সহায়তা করেছি। দলের দুর্দিনে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম ও কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছি।

জেলা সদর থেকে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে পারিবারিক ও রাজনৈতিকভাবে আত্মিক সুসম্পর্ক রয়েছে আমার। পোড়খাওয়া ত্যাগী পরীক্ষিত প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের পুত্র হিসেবে নগর কি গ্রামে সবখানেই আমার আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। নৌকা পাগল ময়মনসিংহ সদরের মানুষ একজন পরীক্ষিত কর্মী হিসেবে এই আসনে আমার বিজয় নিশ্চিত করবে। জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদকে ছাড় দেওয়ায় গত ১০ বছর এই আসনের ভোটার নৌকায় ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি। এজন্য এ আসনের ভোটার নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে বলে জানান তিনি। মোহিত উর রহমান শান্ত জানান, নির্বাচিত হলে ময়মনসিংহ সদরকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করার পাশাপাশি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন।

আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীম জানান, আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মসূচি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছি। দলের জন্য সব সময় সাধ্যমতো সময় দিয়েছি। করোনা মহামারির সময় নানা সহায়তা দিয়ে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের পাশে থেকেছি। দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থক ছাড়া নানা শ্রেণি পেশার মানুষ যখনই কোনো কাজে আমার কাছে এসেছে, আমি তাদের সাধ্যমতো সহায়তা করার চেষ্টা করেছি। ময়মনসিংহ সদরের মানুষ সব সময় আমাকে কাছে  ও পাশে পেয়েছে। আশা করি স্থানীয় ভোটাররা আমার কর্মকা-ের মূল্যায়ন করবেন। আমি নির্বাচিত হলে চরাঞ্চলের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের সংরক্ষণে ব্যবস্থাসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনের চেহারা পাল্টে দিতে সক্ষম হবো। মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি ও ময়মনসিংহ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন খান দুলু জানান, পৌরসভার চেয়ারম্যান ও এমপি থাকাকালে নানা শ্রেণি পেশার মানুষের আপনজন ও আস্থার প্রতীক হয়ে কাজ করেছি। ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পরানগঞ্জে ২০ শয্যার হাসপাতাল, ময়মনসিংহ বাইপাস সড়ক নির্মাণ, চরাঞ্চলে ভেড়িবাঁধ নির্মাণ, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়ন, ময়মনসিংহে মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতাল স্থাপনসহ অনেক উন্নয়ন কাজ করেছে। মানুষ এসব উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে এখন। আসন্ন নির্বাচনে ময়মনসিংহ সদরের মানুষ আমার কর্মকা-ের মূল্যায়ন করবে বলে তিনি আশা করছেন। তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের কারণে বিএনপি থেকে দূরে থাকলেও এলাকাবাসীর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ট ও আত্মিক যোগাযোগ রয়েছে।

দলে পদ পদবি না থাকলেও জনগণের কাতারে থেকে মানুষের সেবা করতে চাই। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আবু মুসা সরকার জানান, ময়মনসিংহ সদর আসনে জাতীয় পার্টির ভোট ব্যাংক রয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে না আসায় এবং আওয়ামী লীগের ভোট ভাগাভাগি ভাগ্যদুয়ার খুলে দিতে পারে বলে জানান এই প্রার্থী। সংসদ নির্বাচনে নতুন মুখ হলেও প্রচারে ব্যাপক সাড়া দেখে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী হয়ে উঠেছেন তিনি।

×