নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ॥ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নওগাঁর পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হক, বিপিএম, পিপিএমের নির্দেশনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে শনিবার সকালে ডিবি ইন্সপেক্টর মো. মোস্তফা কামালের নের্তৃত্বে ডিবি পুলিশ আত্রাই উপজেলার পতিসরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে জেএমবির তালিকাভুক্ত জঙ্গী হাফেজ মাসুদুর রহমার (৩৯) ওরফে হাফেজ মাসুদকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত মো. হাফেজ মাসুদের হেফাজত থেকে ৩টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আত্রাই থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা হয়েছে। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে আত্রাই থানা, রানীনগর থানা ও বাগমারা থানায় হত্যা ও লুটপাটের মামলা রয়েছে। মামলাগুলোতে সে জামিনে রয়েছে বলে জানা গেছে। মাসুদ আত্রাইয়ের পতিসর গ্রামের মো. তছলিম আহমেদের পুত্র এবং পতিসর এবাদুর রহমান কওমী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক। অপরদিকে ওই তারিখে রাত ১০টায় আত্রাই থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে জেএমবির আরেক তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী উপজেলার জামগ্রামের সাবেক মেম্বর গোলাম মহিউদ্দিন ওরফে শিপন(৫২)কে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার সময় তাকে রানীনগর উপজেলার শফিকপুর গ্রামে জেএমবির গোপন বৈঠক করার সময় গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বৈঠকের অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। শিপন মেম্বর আত্রাইয়ের জামগ্রামের মো.শাহাদত হোসেনের পুত্র। পূর্বের আত্রাই থানার মামলা নং-১০, তারিখ-১৪/০৬/২০১৬ ধারা-১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৪(খ) তৎসহ ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এফ) সন্দিগ্ধ আসামী এই শিপন মেম্বর। উল্লেখ্য বিগত ২০০৪ সালে জেএমবির জঙ্গী নেতা বাংলা ভাইয়ের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এই হাফেজ মাসুদ ও শিপন মেম্বার। এদের নেতৃত্বে এলাকায় খুন-খারাপি, চাঁদাবাজি, সংখ্যালঘুসহ এলাকার নীরিহ মানুষের টাকা-পয়সা, গোলার ধান, মাঠের গাছ-গাছালীসহ সম্পদ লুন্ঠন সে সময় রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। নারীদের সম্ভ্রমহানীর এবং যুবকদের খুনের ভয় দেখিয়ে তারা এলাকায় লুটপাট ও চাঁদাবাজি চালিয়ে এসেছে। জেএমবি নেতা বাংলা ভাই ও শায়খ রহমান, তার জামাই আব্দুল আউয়ালের ফাঁসির পর হাফেজ মাসুদ নিজেকে বাঁচাতে ভাই মাসুম রানাকে স্থানীয় কৃষকলীগের নেতা বানিয়ে দেয়। হাফেজ মাসুদ শায়খ আব্দুর রহমানের জামাতা ফাঁসিতে নিহত জঙ্গী নেতা আব্দুল আউয়ালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। জেএমবির লুটপাটের অর্থ দিয়েই পতিসরের সেই ভাঙ্গা মাটির বাড়ি আজ ইটের প্রাসাদসম বাড়িতে পরিনত হয়েছে বলে এলাকার মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। শিপন মেম্বরের তান্ডবের কথাও মনে করলে এলাকাবাসী শিউড়ে ওঠার কথা বলছে। বিএনপি নেতা শিপন তার অতীত অপকর্ম থেকে নিজেকে রক্ষা করতে আওয়ামীলীগের কতিপয় নেতাকে ম্যানেজ করে এলাকায় গোপনে জঙ্গী তৎপরতার বৈঠক করতে গিয়ে অবশেষে ধরা খেল পুলিশের হাতে।