ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি'র পুরনো চেহারা আবার ভেসে উঠেছে ॥ নানক

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯

  বিএনপি'র পুরনো চেহারা আবার ভেসে উঠেছে  ॥ নানক

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ স¤পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, খালেদা জিয়ার জামিনকে কেন্দ্র করে আজকেও(বৃহস্পতিবার) সুপ্রিম কোর্টে বিএনপি ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা হট্টগোল সৃষ্টি করে করেছে। যা নজিরবিহীন। এতে করে প্রমাণ হয় বিএনপি'র পুরনো চেহারা আবার ভেসে উঠেছে। যেমনি ভাবে এর আগে তারা আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও অগ্নিসংযোগ করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল।তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরি করে । এই মামলা আওয়ামী লীগ সরকার করেনি, এই মামলা করেছে খালেদা জিয়ার পছন্দের ব্যাক্তি ইয়াজউদ্দিন, ফখরুদ্দিনরা। আদালত তাকে সাজা দিয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়ে তিনি এখন জেলে আছেন। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে তারা বিচারপতিদের কে চাপ সৃষ্টি করে খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্ত করতে চান। কিন্তু জোর করে আদালত থেকে জামিনের রায় নেওয়া যাবে না। আজ বৃহ¯পতিবার দুপুরে নীলফামারী জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ।জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হকের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, নীলফামারী ২ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সেলের সহ-স¤পাদক নাইমুজ্জামান মুক্তা। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের শুরুতেই বেলা পৌনে ১২ টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। নীলফামারী সদর সহ ৬ টি উপজেলা ও চারটি পৌর কমিটির কাউন্সিলর, ডেলিগেট, আমন্ত্রিত অতিথি ও দলীয় নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগে যারা অনুপ্রবেশ করেছেন, তাদেরকে দল থেকে বের করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, দুঃসময়ে কর্মী আর সুসময়ে আতœীয়-স্বজন, এটা চলবে না। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে কমিটি করা চলবে না। এতদিনে যারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের হাত ধরে দলে অনুপ্রবেশ করেছে, আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাদেরকে ঝেটিয়ে বের করে দিতে হবে। তিনি বলেন, বুধবার (৪ ডিসেম্বর) গণভবনে আওয়ামীলিগের জাতীয় পরিষদের মিটিংয়ে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুপ্রবেশকারীদের আরো একটি তালিকা দিয়েছেন।সেই তালিকা ধরে ধরে অনুপ্রবেশকারীদের কে মাননীয় নেত্রী বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নানক বিএনপি'র ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড তুলে ধরে আরো বলেন, খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমান ষড়যন্ত্র করে একুশে আগস্ট আওয়ামীলীগের সভায় গ্রেনেড হামলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। একটি নয় দুটি নয় ১৪ টি গ্রেনেড ছুড়ে মেরেছিল তারা। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সে দিন বেঁচে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই বিএনপি-জামায়াত জ্বালাও পোড়াও শুরু করে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, আদালতে হট্টগোল করে জোর করে চাপ সৃষ্টি করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। আইনকে আইনের গতিতেই চলতে দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। এই উত্তর অঞ্চলে এক সময় ছিল মঙ্গাপীড়িত। জননেত্রী শেখ হাসিনার ১০ বছরের ওই এলাকার জন্য ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড হাতে নিয়েছেন। আজকে উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা নেই। উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা কে তিনি জাদুঘরে পাঠিয়েছেন। বিএনপি খাদ্য ঘাটতি রেখে গিয়েছিলো। আজকের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই খাদ্য উদ্ভূত হেেয়ছে। আজকে বাংলাদেশ বিশ্ব উন্নয়নের রোল মডেল।। বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোকে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের পথ দেখায়। বিএম মোজাম্মেল আরো বলেন, রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা প্রতিযোগিতা থাকবেই কিন্তু কোন প্রতিহিংসা থাকবে না।প্রতিহিংসার কবর রচনা করে ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মন জয় করে দলের আদর্শে ভর করে সকল ভেদাভেদ ভুলে মানুষের জন্য রাজনীতি করতে হবে। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় যেটি বলেন, আওয়ামী লীগের শক্তি তৃণমুল। এজন্য তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে হবে। আজকে সরকার যে উন্নয়ন করছে, দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যারা সরকারের উন্নয়ন সহ্য করতে পারেনা তারা ষড়যন্ত্র করছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা শান্তি বিঘিœত করতে চাচ্ছে। দলে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির যেন অনুপ্রবেশ না ঘটে সেজন্য সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানান তিনি। নীলফামারী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল, স¤পাদক মমতাজুলঃ-নীলফামারী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন দেওয়ান কামাল আহমেদ ও সাধারণ স¤পাদক হয়েছেন অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক। সেইসঙ্গে ২৬ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। আজ বৃহ¯পতিবার নীলফামারী জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল এর দ্বিতীয় অধিবেশনে কমিটি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, নীলফামারী ২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর সহ কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরাকমিটিতে ৬ জনকে সহ সভাপতি, তিনজনকে যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক, সাংগঠনিক স¤পাদক ৩ জন, তিনজনকে স¤পাদকমন্ডলীর সদস্য, এবং দশজনকে কার্যকরী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। প্রধান অতিথি আগামী তিন মাসের মধ্যে ১০১ সদস্যের পুর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন করে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠাতে নব নির্বাচিত সভাপতি ও সম্পাদককে নির্দেশ দেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থিত কাউন্সিলরদের কণ্ঠ ভোট ও হাত তুলে সম্মতিতে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে পুনরায় দেওয়ান কামাল আহমেদকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট মমতাজুল হককে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ১৫ জুলাই সর্ব শেষ নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলণে দেওয়ান কামাল আহমেদ সভাপতি এবং মমতাজুল হক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১২ সালের ১ জানুয়ারী সেই কমিটি কেন্দ্রের অনুমোদন পায়। দীর্ঘ ১৩ বছর পর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।
×