ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের ১০ পরীক্ষার্থী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

জামালপুরে  এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের ১০ পরীক্ষার্থী গ্রেপ্তার

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুর জেলা পুলিশের অভিযানে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বুধবার সকালে প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের সাথে জড়িত ১০ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। জামালপুরের পুলিশ সুপার দাবি করেছেন, প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত মূলহোতাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর জেলা পুলিশের একটি দল বুধবার ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধাঘন্টা আগে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তারেকুল ইসলাম নামের এক পরীক্ষার্থীকে মুঠোফোন সেটসহ আটক করে। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের খ-সেটের প্রশ্নের সাথে তার ফোন সেটে সংরক্ষিত প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ওই কেন্দ্রের আরও নয়জন পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের ফোন সেটেও ওই প্রশ্নের হুবহু প্রশ্ন পাওয়া যায়। গ্রেফতার পরীক্ষর্থীরা হলো- তারেকুল ইসলাম (১৫), ইশতিয়াক মাহমুদ নিলয় (১৫), এহসানুল হক শান্ত (১৬), মোফাখারুল ইসলাম মনির (১৬), মাহমুদুল হাসান ওয়াস্তি (১৭), সুনিল বাবু (১৭), আনোয়ার হোসেন আবীর (১৫), কে এম নওশীন দুর্জয় (১৬), ফয়সাল আহম্মেদ (১৬) ও মোবারক আকন্দ(১৬)। তারা সবাই দেওয়ানগঞ্জ জিলবাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। তাদের বাড়িও দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায়। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনের ৪(খ)১৩ ধারায় পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও প্রকাশের সহায়তা করার অপরাধের অভিযোগে বুধবার রাতে দেওয়ানগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটির বাদী হয়েছেন দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব রায়হানা আক্তার বেগম। এদিকে জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন গ্রেফতার দশজন পরীক্ষার্থীকে বৃহস্পতিবার সকালে তার কার্যালয়ে হাজির করে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। আটক পরীক্ষার্থীরা শিশু-কিশোর হওয়ায় এতে আইনের বাধ্যবাধকতা থাকায় এবং তদন্তের স্বার্থে সাংবাদিকদের সাথে ওই পরীক্ষার্থীদের কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তবে পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন আটক পরীক্ষার্থীদের স্বীকারোক্তির আলোকে সাংবাদিকদের বলেছেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই তাদেরকে আটক করে খ সেটের ইংরেজি দ্বিতীয়প্রত্র প্রশ্নের সাথে হুবহু মিলে যাওয়ায় আমরা নিশ্চিত হই যে প্রশ্ন ফাঁস করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে জানা যায়, ইতিপূর্বেও তারা তিনটি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করেছে। ঢাকা থেকে ফেসবুকে তাদের একটি কমন আইডিতে প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়ে থাকে। সেই আইডির মাধ্যমেই তারা দেওয়ানগঞ্জে প্রশ্ন ফাঁস করেছে। তারা স্বীকার করেছে যে, প্রশ্নগুলো কোথা থেকে কারা তাদেরকে দিয়েছে। তাদের পরিচয়ও নিশ্চিত হওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে আপাতত গোপন রাখা হচ্ছে। এই প্রশ্ন ফাঁসের সাথে যুক্ত সংঘবদ্ধ চক্রটির মূলহোতা ও জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আটক পরীক্ষার্থীরা শিশু-কিশোর হওয়ায় আইন মেনেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের যেহেতু গ্রেপ্তার করেছি সেহেতু মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তার পুরস্কারের ঘোষণা যাতে বাস্তবায়ন করেন, আমরা এটার আশা করি এবং দাবিও করি।
×