ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরে ২ কোল্ড স্টোরে প্রায় ৩১ হাজার বস্তা আলুতে পচন

প্রকাশিত: ০০:৩৯, ১০ নভেম্বর ২০১৭

রংপুরে ২ কোল্ড স্টোরে প্রায় ৩১ হাজার বস্তা আলুতে পচন

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ রংপুরে ২টি কোল্ড স্টোরের প্রায় ৩১ হাজার বস্তা আলুতে পচন ধরায় শতাধিক কৃষক ও ব্যবসায়ী চরম লোকসানে পড়েছেন। একটি “রংপুর কোল্ড স্টোর” ও অপরটি তারাগজ্ঞের “সিনহা কোল্ড স্টোর” । রংপুর কোল্ড স্টোরের প্রায় ৩০ হাজার বস্তা এবং সিনহা কোল্ড স্টোর ৭শ বস্তা আলুতে পচন ধরেছে । কৃষক ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোল্ড স্টোর দু’টিতে দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় মজুদকৃত আলু শীতলীকরণ সম্ভব হয় নি। তাই অধিকাংশ আলুতে পচন ধরেছে। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, এ বছর রংপুর কোল্ড স্টোরে প্রায় ১ লাখ আলুর বস্তা সংরক্ষণ করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ হাজার বস্তা আলু বের করেছে সংরক্ষণকারীরা। অবশিষ্ট ৪০ হাজার বস্তা আলুর মধ্যে ৩০ হাজার বস্তার আলুতে পচন দেখা দিয়েছে ও গাছ বেড়িয়েছে। এ ব্যাপারে রংপুর কোল্ড স্টোরের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কথা স্বীকার করে বলেন, যে তার দ্বারা কোল্ড স্টোরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে তা পুড়ে যাওয়ায় সেখানে কিছুদিন বিদ্যুৎ ছিল না। এ কারণে কোল্ড স্টোরের আলুতে ঠান্ডা হাওয়া সরবরাহ করা যায়নি। তবে আলুতে পচন ধরার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। তিনি বলেন, সামান্য কিছু আলুতে পচন দেখা দিয়েছে। আর আলুতে ঠান্ডা বাতাস সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় কিছু, আলুতে গাছ গঁজিয়েছে। তবে সালাউদ্দিনের যুক্তি মানতে রাজি নন আলু সংরক্ষণকারী কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, বিল পরিশোধ না করায় রংপুর কোল্ড স্টোরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। দীর্ঘ দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় তাদের আলুতে পচন ধরেছে। কোল্ড স্টোরে আলু সংরক্ষণকারী কৃষক আব্দুর রউফ জানান, এমনিতেই বাজারে আলুর দাম নেই। তারপর কোল্ড স্টোরে আলুতে পচন। এ পরিস্থিতিতে তারা দিশেহারা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, ক্ষতিপূরণ না দিলে তাদের পক্ষে এ বছর আলু চাষ করা সম্ভব হবে না। তাই তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। তারাগজ্ঞের সিনহা কোল্ড স্টোর ১লাখ ১০হাজার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন । চলতি বছর ১লাখ ৭হাজার আলুর বস্তা সংরক্ষণ করা হয়েছিল।কিশোরগজ্ঞের নিতাই গ্রামের কৃষক তারাগজ্ঞ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ও কৃষি অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগে জানান, ১শ ৯ বস্তা আলু রেখেছেন কিন্তু এর মধ্যে ৫০ বস্তা আলু পঁচে গেছে । এ ছাড়া আরো কয়েকজন কৃষকের আলু পচে গেছে । সিনহা স্টোরের ব্যবস্থাপক দুলাল হোসেন বলেন, আমাদের ব্যবস্থপনায় কোন ক্রটি ছিল না । কৃষক নষ্ট আলু রাখায় এমনটা হয়েছে । তবে তিনি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এ অবস্থা হয়েছে মনে করেন । তারাগজ্ঞ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা আমাকে লিখিত অভিযোগ করেছেন । বিষয়টি তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।
×