ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরে ২২২ কোটি টাকার আলু হিমাগারে

প্রকাশিত: ০২:৫৪, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

রংপুরে  ২২২ কোটি টাকার আলু হিমাগারে

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ রংপুর অঞ্চলের আট জেলায় প্রায় ২০ লাখ টন আলু লোকসানের আশঙ্কায় অবিক্রিত অবস্থায় হিমাগারে পড়ে আছে। এসব আলুর বাজার মূল্য প্রায় ২২২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। রংপুর বিভাগের হিমাগার ( কোল্ড স্টোরেজ ) মালিক ও চাষীদের কাছে থেকে এসব তথ্য জানা যায়। তারা বলছেন, গত মৌসুমে অধিক আলু উৎপাদিত হওয়ায় এখন বাজারে তেমন চাহিদা নেই। দামও নিম্নমুখী। এছাড়া কাঙ্খিত হারে আলু রফতানি না হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হিমাগার মালিক ও আলু চাষিরা জানান, অনেক স্থানে নতুন আলু রোপন শুরু হচ্ছে। কিন্তু এ বিপুল পরিমাণ আলু এখনই বিক্রি করতে না পারলে তা খাবার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। এখন আলুর প্রকার ভেদে গড়ে ১১ হাজার ৩০০ টাকা প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে। এ হিসেব মতে যে পরিমান আলু এখন অবিক্রিত অবস্থায় রংপুর বিভাগের হিমাগারগুলোতে পড়ে আছে তার আর্থিক মূল্য প্রায় ২২২ কোটি ৮০ লাখ টাকা হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। তাই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত একটি ফসলের আয় থেকে পরের মৌসুমের ফসল উৎপাদন করে থাকেন। রংপুর অঞ্চলের প্রধান ফসল ধানের পরেই আলুর অবস্থান। এবারের বন্যায় রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির পর কৃষকরা ভেবেছিলেন আলু চাষ করে এ ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন। কিন্তু গত বছর আলুর বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকরা বিপুল পরিমাণ আলু চাষ করে। যা চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। এ ছাড়া গত মৌসুমে বিদেশে আলু রফতানি হয়েছে খুবই কম। ফলে হিমাগারগুলোতে বিপুল পরিমাণ আলু অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। রংপুরের হিমাগার ব্যবসায়ী মোস্তাফা আজাদ চোধুরী বাবু জানান, শুধু রংপুর অঞ্চলে নয়, দেশের সব হিমাগারে যে পরিমাণ আলু অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে তার পরিমাণ প্রায় ৪৫ লাখ টন হবে। এ পরিস্থিতে যদি হিমাগারে অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে থাকা আলু নিয়ে সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ গ্রহন করা না হয় তাহলে আগামী মৌসুমে আলু চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে চাষীরা। অপর হিমাগার ব্যবসায়ী মোশারব হোসেন জানান, সরকারের বিভিন্ন ত্রাণ কর্মসূচির মধ্যে আলু সংযুক্ত করলে এ বিপুল পরিমমাণ আলুর বিক্রির খাত তৈরি হবে। তা ভোক্তা হিসেবে এ অঞ্চলের মানুষ খাবে। কৃষক তার ফসলের ন্যায্য মূল পাবে। আর হিমাগার মালিকরা তাদের ভাড়াও আদায় করতে পারবেন। তা না হলে কৃষক ও আলু ববসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু নিবেন না। ফলে হিমাগার মালিকদের কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে
×